মঙ্গলবার, ২১ এপ্রিল, ২০২০ ০০:০০ টা
বিজিএমইএর বিবৃতি

সবার ঐকমত্যে পোশাকশিল্প কারখানা খোলার সিদ্ধান্ত হয়

নিজস্ব প্রতিবেদক

করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে সরকারি সাধারণ ছুটির সঙ্গে মিল রেখে বন্ধ হওয়া পোশাক কারখানাগুলোতে শ্রমিকদের কাজে ফেরানো প্রসঙ্গে বিবৃতি দিয়েছে বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুত ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ)। সংগঠনটি বলেছে, বিজিএমইএ কোনো কারখানা, কোনো অবস্থাতেই বন্ধ রাখার আইনগত কোনো কর্তৃত্ব রাখে না। এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার এখতিয়ার সরকারি নির্দেশনায় কিংবা ঐচ্ছিকভাবে সম্পূর্ণ সেই কারখানা কর্তৃপক্ষ বহন করে। বিজিএমইএ পোশাকশিল্প মালিকদের একটি সংগঠন মাত্র। শুধু বিজিএমইএ নয়, বরং সব প্রতিনিধি ও অংশীদারের ঐকমত্যে কারখানা খোলা রাখার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। গতকাল এক বিবৃতিতে এসব কথা বলেছে বিজিএমইএ। সংগঠনটি আরও বলেছে, কারখানা খোলার ব্যাপারে বিজিএমইএর অবস্থান অত্যন্ত স্পষ্ট। কারখানা চালু করার আগে আমাদের নিজেদের সুস্থ ও নিরাপদ রাখতে হবে। এই মুহূর্তে প্রথম ও একমাত্র অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে শ্রমিক ভাইবোনদের স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা নিশ্চিত রাখা। করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে কারখানার চাকা থেমে গেলেও শ্রমিক-মালিক একসঙ্গে জীবন বাঁচাতে, জীবিকা রক্ষায় থাকতে হবে। একে অপরের পরিপূরক হয়ে, একসঙ্গে আগামীর পথে। বিবৃতিতে বলা হয়, গত ২১ মার্চ এফবিসিসিআই, বিইএফ, বিজিএমইএ ও বিকেএমইএর প্রতিনিধিদের নিয়ে শ্রম প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে পোশাক কারখানা খোলা রাখার ব্যাপারে সবাই একমত হন। পরদিন ২২ মার্চ শ্রম প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে আরেক বৈঠকেও সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত হয় পোশাক কারখানা খোলা রাখা হবে। এরপর ২৪ মার্চ জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের জারি হওয়া প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, প্রয়োজনে ওষুধ শিল্প ও রপ্তানিমুখী শিল্প কারখানা চালু রাখতে পারবেন। পরবর্তীতে এ সংক্রান্ত জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের জারি হওয়া সব সার্কুলারেও রপ্তানিমুখী শিল্প কারখানাগুলোকে সাধারণ ছুটির আওতামুক্ত রাখার বিষয়টি পরিষ্কারভাবে উল্লেখ করা হয়। গত ২৬ মার্চ করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব আরও বেড়ে যাওয়ায় সরকারি সিদ্ধান্তের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে বিজিএমইএ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে এবং পোশাক শ্রমিকদের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে সব কারখানা ৪ এপ্রিল পর্যন্ত বন্ধ রাখা হয়। পোশাক কারখানা ছুটি ঘোষণা দেওয়ার সময় শ্রমিকদের ছুটিকালীন সময়ে ঢাকায় যার যার বাসায় অবস্থান করতে এবং সামাজিক দূরত্বের নির্দেশনা পালন করে চলতে বলা হয়। গত ১ এপ্রিল কল-কারখানা অধিদফতর ‘শিল্প কারখানা চালুকরণ প্রসঙ্গে’ শীর্ষক একটি নির্দেশনা জারি করে বলেছে, যেসব রপ্তানিমুখী শিল্প প্রতিষ্ঠানে আন্তর্জাতিক ক্রয়াদেশ রয়েছে ও শিল্প কল-কারখানা সচল রাখতে আগ্রহী এবং করোনাভাইরাস প্রতিরোধে জরুরি অপরিহার্য পণ্য, যেমন পার্সোনাল প্রটেকটিভ ইকুইপমেন্ট (পিপিই), মাস্ক, হ্যান্ডওয়াশ/স্যানিটাইজার, ওষুধপত্র ইত্যাদি উৎপাদনের কার্যক্রম চলমান রয়েছে, সেসব কল-কারখানা মালিকরা শ্রমিকদের প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্য নিরাপত্তা ব্যবস্থা সুনিশ্চিতকরণ সাপেক্ষে শিল্প কল-কারখানা চালু রাখতে পারবেন।

এ বিষয়টি সংশ্লিষ্ট সবার কাছে স্পষ্টীকরণের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনুরোধ করা হলো। পরে ছুটি শেষে শ্রমিকদের দলবেঁধে ঢাকায় ফেরার দৃশ্য আমাদের নজরে এলে, আমরা সবার সঙ্গে পরামর্শক্রমে এবং সরকারি সিদ্ধান্তের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে ছুটি বর্ধিত করার ঘোষণা প্রদান করি।

সর্বশেষ খবর