নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচন (নাসিক) কেন্দ্রীয়ভাবে মনিটর করবে আওয়ামী লীগ। দলীয় সভানেত্রীর ধানমন্ডির কার্যালয়ে নাসিক নির্বাচনী পরিচালনা কমিটির কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানকের নেতৃত্বে কেন্দ্রীয় টিম এ নির্বাচনের সার্বক্ষণিক খোঁজখবর রাখবে।
বছরের প্রথম গুরুত্বপূর্ণ স্থানীয় সরকারের এ ভোটে দুটি বিষয় সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছেন ক্ষমতাসীন দলের নেতারা। প্রথমত নৌকার বিজয় ও দ্বিতীয়ত সবার কাছে গ্রহণযোগ্য সুষ্ঠু ভোট। কারণ হিসেবে দলটির নেতারা বলছেন, এ সিটিতে নৌকার পরাজয় হলে যেমন প্রশ্ন ওঠবে তেমনি ভোটের বিশৃঙ্খলা হলেও সরকারকে দায় নিতে হবে। সে কারণে নৌকার জয়ের পাশাপাশি সুষ্ঠু ভোট যাতে হয় সে বিষয়টিকে গুরুত্ব দিচ্ছেন দলীয় নীতি নির্ধাকরা।
দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কাউন্সিলর প্রার্থীদের অভ্যন্তরীণ সমস্যার কারণে মেয়র প্রার্থীর ভোট যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সে বিষয়টি কড়া নজর রাখা হবে। কোথাও কোনো গোলযোগ হলে তাৎক্ষণিক করণীয় নিয়ে দিক-নির্দেশনা দেবেন তারা। জানা গেছে, এ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মূল লক্ষ্য মেয়র পদে বিজয়। এ জন্য তারা কাউন্সিলর পদে ছাড় দিয়েছে। দলীয়ভাবে প্রার্থীও ঘোষণা করা হয়নি। দলের নেতারা মনে করেন নাসিকে অবাধ, সুষ্ঠু ও সবার কাছে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হবে। শান্তিপূর্ণ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী বিপুল ভোটের ব্যবধানে বিজয়ী হবেন।কিন্তু কাউন্সিলর প্রার্থীদের কারণে দু-একটি কেন্দ্রে গোলযোগের ঘটনা ঘটতে পারে। তবে সে বিষয়ে আওয়ামী লীগ সতর্ক রয়েছে। কেউ যেন বিশৃঙ্খলা করতে না পারে সে জন্য আগেই জেলা-মহানগরের নেতাদের বার্তা দেওয়া হয়েছে।
আওয়ামী লীগ নেতারা বলছেন, সকাল থেকেই দলীয় সভানেত্রীর ধানমন্ডির কার্যালয়ে বসবেন আওয়ামী লীগের নারায়ণগঞ্জ সিটি নির্বাচনের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা। নারায়ণগঞ্জ সিটিতে নির্বাচনী দায়িত্বে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক এবং সদস্য সচিব হিসেবে রয়েছেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম। যুবলীগের সাবেক চেয়ারম্যান ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক নানক-আজমের নেতৃত্বে কেন্দ্রীয় ১৮ নেতাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে নারায়ণগঞ্জে। এর মধ্যে দলটির প্রেসিডিয়াম সদস্য আবদুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন, আফজাল হোসেন, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, কৃষি ও সমবায় সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লাইলী, উপ-প্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিনসহ অন্যরা রয়েছেন।
সকাল থেকেই নির্বাচন কমিশনে থাকবে আওয়ামী লীগের একটি টিম। এ টিমে কেন্দ্রীয় সদস্য রিয়াজুল কবির কাওছারসহ কয়েকজন থাকবেন। এ প্রসঙ্গে নারায়ণগঞ্জ সিটি নির্বাচনের সমন্বয়কের দায়িত্বে থাকা দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘সকাল থেকেই আমরা নারায়ণগঞ্জ সিটি নির্বাচন মনিটর করব। দলের সভানেত্রীর কার্যালয়ে বসে স্থানীয় নেতাদের সঙ্গে কথা বলব। পাশাপাশি টিভিতে চোখ রাখব। কোথাও কোনো সমস্যা হলে তাৎক্ষণিক সমাধানের নির্দেশ দেওয়া হবে। এ ছাড়া আমাদের একটি টিম ইসিতে যাবে।’
কেন্দ্রীয় মনিটরিং টিমের সদস্য ও ঢাকা বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘আওয়ামী লীগের প্রার্থী ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী বিপুল ভোটে বিজয়ী হবেন এবং নির্বাচন সুষ্ঠু ও সুন্দর হবে। বিএনপি নির্বাচন যেন প্রশ্নবিদ্ধ করতে না পারে সে ব্যাপারে আমরা সতর্ক।’
আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য আবদুর রহমান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘আমাদের প্রধান লক্ষ্য একটি সুষ্ঠু ও সবার কাছে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন উপহার দেওয়া। সরকারের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহায়তা করা হচ্ছে নির্বাচন কমিশনকে। আমরা আশা করি, নারায়ণগঞ্জ সিটি ভোট নতুন রেকর্ড সৃষ্টি করবে।’