রবিবার, ২০ ফেব্রুয়ারি, ২০২২ ০০:০০ টা

আজ শামসুজ্জোহার ৩৫তম মৃত্যুবার্ষিকী

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি

আজ শামসুজ্জোহার ৩৫তম মৃত্যুবার্ষিকী

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঘনিষ্ঠ সহচর, মহান স্বাধীনতা সংগ্রামের অন্যতম সংগঠক, ভাষাসৈনিক এ কে এম শামসুজ্জোহার ৩৫তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ। আওয়ামী লীগের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সদস্য, গণপরিষদ সদস্য ও স্বাধীনতা-পরবর্তী জাতীয় সংসদের সদস্য এ কে এম শামসুজ্জোহা নারায়ণগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী ওসমান পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবা মরহুম খান সাহেব ওসমান আলীও ছিলেন ভাষাসৈনিক, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য এবং এমএনএ। মুক্তিযুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখায় প্রয়াত শামসুজ্জোহাকে ২০১২ সালে স্বাধীনতা পদকে (মরণোত্তর) ভূষিত করা হয়।

মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে মরহুমের পরিবার এবং নারায়ণগঞ্জ আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠন দিনভর কর্মসূচি পালন করবে। আজ দিনব্যাপী কোরআনখানি, শোক র‌্যালি, কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও জিয়ারতের পাশাপাশি মরহুমের পরিবারের পক্ষ থেকে চাষাঢ়ার ‘হীরা মহলে’ বাদ আসর প্রয়াত এ কে এম শামসুজ্জোহা ও প্রয়াত বেগম নাগিনা জোহার রুহের মাগফিরাত কামনায় মিলাদ ও দোয়া মাহফিল হবে। মরহুমের মেজ ছেলে সেলিম ওসমান এমপি ও ছোট ছেলে আওয়ামী লীগ নেতা এ কে এম শামীম ওসমান এমপি সবাইকে চাষাঢ়ার পৈতৃক বাড়ি হীরা মহল ও পাশের মসজিদে বাদ আসর আয়োজিত মিলাদ ও দোয়ায় অংশ নেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন।

ঐতিহ্যবাহী এ পরিবারের আদিনিবাস নারায়ণগঞ্জের বায়তুল আমান ভবন আজও কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে।

যেখানে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠার বীজ বপন করা হয়েছিল। মহান ভাষা আন্দোলনের সময় এ বায়তুল আমান ভবনে পুলিশ প্রবেশ করে ওসমান পরিবারের সদস্যদের ওপর নির্যাতন চালিয়েছিল। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’তেও উঠে এসেছে ভাষা আন্দোলনে বায়তুল আমান ভবন এবং ওসমান পরিবারের ত্যাগের কথা।

মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় ভারতের শরণার্থী শিবিরে শামসুজ্জোহা ‘ত্রাণবন্ধু’ নামে পরিচিত ছিলেন। প্রয়াত এই জননেতা সর্বপ্রথম ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর হাই কোর্টে স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করেন এবং বাংলাদেশ বেতারের মাধ্যমে বিজয়ের বার্তা প্রচার করে দেশবাসীকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে শান্ত থাকার আহ্বান জানান। ওই দিন বিকালে তিনি বঙ্গমাতা ফজিলাতুন নেছা, বঙ্গবন্ধুকন্যা ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ পাকিস্তানি সেনাদের হাতে আটক বঙ্গবন্ধু পরিবারকে মুক্ত করতে গিয়ে গুলিবিদ্ধ হন।

এ কে এম শামসুজ্জোহার বড় ছেলে সাবেক এমপি প্রয়াত নাসিম ওসমান বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিশোধ নিতে ১৯৭৫-এর ১৫ আগস্ট নবপরিণীতা বধূকে রেখেই প্রতিরোধযুদ্ধে যোগ দিয়েছিলেন। এরপর শামসুজ্জোহাকে গ্রেফতার করা হয় এবং ১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর জাতীয় চার নেতার হত্যাযজ্ঞের সময় তিনি ও শহীদ জাতীয় নেতা ক্যাপ্টেন মনসুর আলী কারাগারে একই সেলে বন্দি ছিলেন। তিনি ছিলেন ওই কলঙ্কিত ইতিহাসের অন্যতম সাক্ষী।

প্রয়াত শামসুজ্জোহার মেজ ছেলে বিকেএমইএর সভাপতি এ কে এম সেলিম ওসমান ও ছোট ছেলে এ কে এম শামীম ওসমান একাধিকবার জাতীয় সংসদের সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। শামসুজ্জোহার সহধর্মিণী ও রত্নগর্ভা প্রয়াত নাগিনা জোহাও ছিলেন ভাষাসৈনিক। তিনি ২০১৬ সালের ৭ মার্চ মৃত্যুবরণ করেন।

সর্বশেষ খবর