বৃহস্পতিবার, ৩০ জুন, ২০২২ ০০:০০ টা

কলকাতায় পি কের সহযোগীর স্ত্রীকে ৫ ঘণ্টা জেরা

কলকাতা প্রতিনিধি

ভারতের কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের (ইডি) মুখোমুখি হতে কলকাতায় পূর্বাঞ্চলীয় কার্যালয়ে হাজির হয়েছেন পি কে হালদারের অন্যতম সহযোগী স্বপন মৈত্রর স্ত্রী পূর্ণিমা মৈত্র। এ সময় তাকে টানা ৫ ঘণ্টা জেরা করা হয়েছে। নোটিস পাওয়ার পর তদন্তকারী কর্মকর্তাদের সামনে হাজিরা দিতে গতকাল সকাল ১১টা নাগাদ ইডির আঞ্চলিক কার্যালয় সল্টলেকের সিজিও কমপ্লেক্সে আসেন পূর্ণিমা মৈত্র। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী আলী হায়দার। এরপর বিকাল ৪টা ১০ মিনিট নাগাদ সিজিও কমপ্লেক্স ছাড়েন তিনি। তবে এ সময় সাংবাদিকরা তাকে প্রশ্ন করলে জেরা করার বিষয়টি অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, ‘আমাকে কোনো জেরাই করা হয়নি। বসিয়ে রাখা হয়েছে। কেবলমাত্র আমার নথিপত্র দেখা হয়েছে।’ যদিও আগামী ৬ জুলাই তাকে ফের ইডির দফতরে হাজিরা দেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন তিনি। তবে ইডির দফতর থেকে বেরিয়ে আসার সময় তাকে বেশ বিধ্বস্ত দেখা গেছে।

ইডি সূত্র জানায়, এদিন টানা প্রায় ৫ ঘণ্টা জেরা করা হয় বাংলাদেশের দুদকের এজহারভুক্ত আসামি পূর্ণিমা মৈত্রকে। সঙ্গে নিয়ে আসা ভোটার কার্ড, প্যান কার্ড, পাসপোর্টসহ একাধিক নথিপত্র পরীক্ষা করে সেগুলো রেখে দেওয়া হয়। ইডির তদন্তকারী কর্মকর্তারা জানতে চান, পি কে হালদারের সঙ্গে তার কী সম্পর্ক? প্রসঙ্গত, সাংবাদিকদের কাছে পূর্ণিমা জানিয়েছিলেন, ছয় বছর আগে তিনি বাংলাদেশ থেকে ভারতে আসেন। ফলে প্রশ্ন করা হয়, বাংলাদেশি নাগরিক হয়েও কীভাবে ভারতীয় নাগরিকত্বের পরিচয়পত্র জোগাড় করলেন? কীভাবে নামে-বেনামে সম্পত্তি করেছেন? এর আগে ইডির কার্যালয়ে প্রবেশের সময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে পূর্ণিমা জানিয়েছিলেন, ‘কিছু বলার নেই। এর পরে অভিযোগ। এই গোটা ঘটনার পিছনে চক্রান্ত আছে। তিনি নিজেকে একজন ভারতীয় নাগরিক বলেও দাবি করেন। অবশ্য তার বিরুদ্ধে বাংলাদেশে দুদকের তরফ থেকে একাধিক মামলার বিষয়ে মুখ খুলতে চাননি তিনি।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশ থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে এরই মধ্যে ভারতের ইডির হাতে গ্রেফতার হয়েছেন মূল অভিযুক্ত পি কে হালদার ওরফে প্রশান্ত কুমার হালদার ওরফে শিব শঙ্কর হালদার। ওই মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছে পি কের অন্যতম সহযোগী স্বপন মৈত্র ওরফে স্বপন মিস্ত্রিসহ মোট ছয়জনকে। গত ১৪ মে অশোকনগরসহ পশ্চিমবঙ্গের বেশ কিছু জায়গায় অভিযান চালিয়ে পি কে হালদারের সঙ্গেই গ্রেফতার হন তার ভাই প্রাণেশ হালদার, স্বপন মিস্ত্রি ওরফে স্বপন মৈত্র, উত্তম মিস্ত্রি ওরফে উত্তম মৈত্র, ইমাম হোসেন ওরফে ইমন হালদার এবং আমানা সুলতানা ওরফে শর্মী হালদার। পি কে হালদারসহ গ্রেফতারকৃত ছয়জনের বিরুদ্ধেই প্রিভেনশন অব মানি লন্ডারিং অ্যাক্ট বা অর্থ পাচার সম্পর্কিত আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে। ওই আইনেই ইডির নজর রয়েছে স্বপন মৈত্রের স্ত্রী পূর্ণিমার প্রতি। পি কে হালদারের বিরুদ্ধে ওঠা অর্থ পাচারের সঙ্গে পূর্ণিমার আদৌ কোনো সম্পর্ক আছে কিনা, থাকলেও তা কোন পর্যায়ের, পূর্ণিমার নাগরিকত্ব- ইত্যাদি বিষয় খতিয়ে দেখতে চান ইডির কর্মকর্তারা।

সর্বশেষ খবর