বুধবার, ৩১ আগস্ট, ২০২২ ০০:০০ টা

চুরির অপবাদ দেওয়ায় আত্মহত্যা করেন মন্দিরের সেবায়েত

নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজধানীর কাফরুলে একটি মন্দিরের সেবায়েত পরীক্ষিত দাসের (৬৫) বিরুদ্ধে মন্দির থেকে ফল চুরির অভিযোগ আনে কর্তৃপক্ষ। এ কারণে মন্দির কর্তৃপক্ষের কাছে পা ধরে ক্ষমাও চান তিনি। এতেও মন গলেনি তাদের। এ নিয়ে সালিশের হুমকি দেওয়া হয়। সালিশ হলে আত্মীয়স্বজন বিষয়টি জেনে গেলে কীভাবে মুখ দেখাবেন, এ ভয়ে আত্মহত্যা করেন পরীক্ষিত।

গাজীপুরের রাজেন্দ্রপুর থেকে সোমবার রাতে পরীক্ষিতকে আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগে তিনজনকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। তারা হলেন- মন্দিরের সভাপতি বিপ্লব বিজয়ী হালদার (৪৬), সাংগঠনিক সম্পাদক সুমন সাহা (৫৩) ও দফতর সম্পাদক বাদল সরকার (৩৫)।

ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া সেন্টারে গতকাল আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব জানান অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।

মন্দিরের ভিতরে ১৬ আগস্ট আত্মহত্যা করেন পরীক্ষিত। এ ঘটনায় ২২ আগস্ট মৃতের ছেলে ভক্তদাস কাফরুল থানায় আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগ এনে মামলা করেন। মামলাটির তদন্ত শুরু করে ডিবির মিরপুর বিভাগ।

সংবাদ সম্মেলনে হারুন অর রশীদ বলেন, পরীক্ষিত প্রায় ছয় বছর কাফরুল কেন্দ্রীয় মন্দিরের সেবায়েত ছিলেন। ১৫ আগস্ট রাত পৌনে ১২টার দিকে একটি ব্যাগ নিয়ে মন্দির থেকে বের হচ্ছিলেন তিনি। ওই ব্যাগে মন্দিরের ফল ছিল এবং সেগুলো চুরির অভিযোগ তোলেন মন্দিরের সভাপতি বিপ্লব বিজয়ী হালদার, সাংগঠনিক সম্পাদক সুমন সাহা ও দফতর সম্পাদক বাদল সরকার। পরদিন সকালে সালিশ বসিয়ে বিচার করার হুমকি দেওয়া হয়। মন্দিরের সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায় পরীক্ষিত দাস বের হচ্ছেন। এ সময় বিপ্লব, সুমন ও বাদল তাকে বাধা দেন। তারা হাত নাড়িয়ে কথা বলছেন পরীক্ষিত দাসের সঙ্গে। একপর্যায়ে পরীক্ষিত দাস তাদের একজনের দুই পা জড়িয়ে ধরেন। পরে উঠে ওই ব্যক্তিকে বুকে আঁকড়ে ধরেন তিনি। ভিডিওতে স্পষ্ট, তিনি বারবার ক্ষমা চাচ্ছেন। পর্যায়ক্রমে অন্য দুজনেরও পা জড়িয়ে ধরে ক্ষমা চান। পরে তারা পরীক্ষিত দাসকে রেখে চলে যান। এর পরই তিনি মন্দিরে দ্বিতীয় তলায় ওঠার সিঁড়ির রেলিংয়ের সঙ্গে গলায় ফাঁস নিয়ে আত্মহত্যা করেন। পরদিন সকালে তাঁর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।

 

সর্বশেষ খবর