বুধবার, ২২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা

যেভাবে জার্মানির জেনিফার হলেন গোপালগঞ্জের বধূ

গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি

যেভাবে জার্মানির জেনিফার হলেন গোপালগঞ্জের বধূ

প্রেমের টানে জার্মানির সুন্দরী জেনিফার স্ট্রায়াস গোপালগঞ্জে ছুটে এসেছেন। প্রিয় মানুষটির সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়েছেন। ভিনদেশি বধূ পেয়ে খুশি পরিবারের সদস্যরা। পরিবারজুড়ে বইছে খুশির বন্যা। পরিবারের সদস্যদের আনন্দঘন সময় কাটছে ভিনদেশি বধূকে নিয়ে।

গত রবিবার গোপালগঞ্জের একটি আদালতে এফিডেভিটের মাধ্যমে জেনিফার স্ট্রায়াস ও চয়ন ইসলামের বিয়ে সম্পন্ন হয়। এতে হইচই পড়েছে পুরো এলাকায়। অনেকেই জার্মান সুন্দরীকে দেখতে ছুটে এসেছেন।

জার্মানির তরুণী জেনিফার স্ট্রায়াস ১৭ ফেব্রুয়ারি রাতে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে নামেন। সেখানে প্রেমিক চয়ন ইসলাম ও তার স্বজনরা তাকে স্বাগত জানান। রাতেই তারা জেনিফারকে নিয়ে গোপালগঞ্জ শহরে চলে আসেন। শহরের মডেল স্কুল রোডের ফুফাতো ভাই আবদুর রহমানের বাড়িতে রাতযাপন করেন তারা। রবিবার আদালতে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন।

প্রেমিক চয়নের বাড়ি গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলার জোতকুরা গ্রামে। তার ইতালিপ্রবাসী বাবা রবিউল ইসলামের সুবাদে তিনিও ইতালিতে যান। কিছুদিন পর ইতালি থেকে জার্মানিতে যান চয়ন। প্রায় পাঁচ বছর আগে জার্মান ভাষা শিখতে একটি শিক্ষা কোর্সে ভর্তি হন চয়ন। সেখানেই পরিচয় হয় জেনিফারের সঙ্গে। সেই পরিচয় থেকেই প্রেম-প্রণয়। ২০২২ সালে চয়ন বাংলাদেশে চলে আসেন। তবে তাদের সম্পর্ক অটুট থাকে। ভালোবাসার টানে দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে জেনিফার ছুটে আসেন প্রেমিক চয়নের কাছে। গোপালগঞ্জে পৌঁছানোর পর চয়নের স্বজনরা ফুল দিয়ে বরণ করে নেন জেনিফারকে। জেনিফার মাধ্যমিক লেভেলের শিক্ষার্থী। জার্মানির বাইলেফেল্ড স্টেটে বাবা-মার সঙ্গেই বসবাস করেন। তার বাবার নাম জোসেফ স্ট্রায়াস ও মায়ের নাম এসাবেলা স্ট্রায়াস। চয়নের ভাগনি সানজিদা আক্তার সিমি বলেন, ‘জার্মানি থেকে আমাদের মামি এসেছে। সে দেখতে অনেক সুন্দর। আমরা অনেক খুশি। সারা দিন আমাদের মামিকে নিয়েই আনন্দে কেটে যাচ্ছে।’ চয়নের মা ঝর্ণা বেগম বলেন, ‘ভাবতেও পারিনি জেনিফার আমাদের সঙ্গে এত সহজে মিশে যেতে পারবে।

বিদেশি বউমাকে পেয়ে আমরা সবাই খুশি। অল্প সময়ের মধ্যে সে সবাইকে খুব আপন করে নিয়েছে। গ্রামের বাড়িতে আনন্দ-উৎসবের মাধ্যমে আমরা নববধূকে বরণ করে নেব।’ বাবা জোসেফ স্ট্রায়াস মেয়ে জেনিফারের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রেখে চলেছেন। এ বিয়েতে জেনিফারের বাবা-মাসহ পরিবারের সবাই খুব আনন্দিত।

জেনিফার তার অনুভূতি ব্যক্ত করে বলেন, ‘বাংলাদেশকে আমি ভালোবেসে খুশি হয়েছি। এখানকার পরিবেশ, আতিথেয়তা ও সবার ভালোবাসা আমাকে মুগ্ধ করেছে। পরিবারের সবাই আমাকে আপন করে নিয়েছে। সবাইকে নিয়ে মিলেমিশে চলতে পেরে আমি ভীষণ খুশি হয়েছি।’

চয়ন ইসলাম বলেন, ‘আমি জার্মানিতে পড়াশোনা করার সময় জেনিফারের সঙ্গে পরিচয় হয়। পরিচয় থেকে ভালোবাসা। দীর্ঘ পাঁচ বছরের সম্পর্ক আমাদের। আমি একটি চাকরি করতাম। সেখানে মালিকের সঙ্গে মনোমালিন্য হলে চাকরি ছেড়ে বাংলাদেশে চলে আসি। আমার ভালোবাসার টানে জেনিফা বাংলাদেশে চলে এসেছে। আমরা বিয়ে করেছি। এতে আমার ও জেনিফারের পরিবারের সবাই খুব খুশি। কিছুদিনের মধ্যে জেনিফারের বাবা-মা বাংলাদেশ আসবেন। তখন মহাধুমধামে বিয়ের অনুষ্ঠান করার ইচ্ছা আছে।’

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর