শুক্রবার, ১৬ জুন, ২০২৩ ০০:০০ টা

দিনে ব্যবসায়ী রাতে দুর্ধর্ষ ডাকাত বিল্লাল

নিজস্ব প্রতিবেদক

বিল্লাল হোসেন পেশায় ডাকাত, চোর ও মাদক ব্যবসায়ী। দিনে কাস্টমারদের গাড়ি দেখিয়ে ব্যবসা করতেন। থাকতেন আরাম-আয়েশে। রাত হলেই হয়ে ওঠেন দুর্ধর্ষ ডাকাত চক্রের সর্দার। ডাকাতি করা গাড়ি তাৎক্ষণিক চেসিস অন্য গাড়িতে বদল করে সেই গাড়িতে করেই ডাকাতি এবং বিভিন্ন ব্যবসায়ীর কাছে মাদক বিক্রি করতেন। এ পর্যন্ত প্রায় ৩৫টি গাড়ি বিক্রি করেছেন বলে স্বীকার করেন বিল্লাল হোসেন। এই চক্রের মূল হোতা বিল্লালসহ চার সদস্যকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব।

গ্রেফতার অন্যরা হলেন- কবির হোসেন, মো. আশিক ও রাজ। বুধবার রাতে রাজধানীর বাড্ডা এলাকা থেকে তিনটি পিকআপ জব্দসহ তাদের গ্রেফতার করা হয়। গতকাল রাজধানীর উত্তরায় র‌্যাব-১ এর কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান সংস্থাটির অধিনায়ক লে. কর্নেল মোহাম্মদ মোসতাক আহমেদ। তিনি বলেন, বিল্লালের বিরুদ্ধে মাদক, চুরি ও ডাকাতিসহ বিভিন্ন থানায় পাঁচটি মামলা রয়েছে। এই চক্রটি চোরাই গাড়ির বিভিন্ন পার্টস ও চেসিস পরিবর্তন করে বিভিন্ন মাদক কারবারির কাছে অল্প মূল্যে বিক্রি করে। র‌্যাব-১ এর অধিনায়ক বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র‌্যাব জানতে পারে মেরুল বাড্ডার ডিআইটি রোডের ৪ নম্বর রোডের ৮২ নম্বর প্লটে মীম অটোমোবাইলস গ্যারেজে চুরি ও ডাকাতির গাড়ি রয়েছে এবং ডাকাত চক্রের সদস্যরা রয়েছে। এমন তথ্যের ভিত্তিতে র‌্যাব অভিযান চালিয়ে এই চক্রের মূল হোতাসহ চারজনকে গ্রেফতার করে।

ওই গ্যারেজ থেকে তিনটি চোরাই পিকআপ, চারটি মোবাইল ফোন ও ৭৫০ টাকাসহ তাদের গ্রেফতার করা হয়। র‌্যাবের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে বিল্লাল জানান, বিল্লালের নেতৃত্বে অন্য সহযোগীরা ডাকাতি ও চুরি করা গাড়িগুলো গ্রেফতার কবিরের ব্যক্তিগত মীম অটোমোবাইলস গ্যারেজে নিয়ে আসে। তারপর আরেক পলাতক আসামি মো. আবদুল করিম এসব গাড়ির বিভিন্ন পার্টস খুলে একাধিক গাড়িতে সংযোজন করে। এ ছাড়াও এক গাড়ির চেসিস নম্বর অন্য গাড়িতে সংযোজন করে বিক্রি করে। এসব গাড়ির বিভিন্ন পার্টস বিভিন্ন জায়গায় বিক্রি করে এবং গাড়িগুলো ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় তাদের অপরাধ কার্যক্রমে ব্যবহার করে।

র‌্যাব কর্মকর্তা মোতাহার আরও বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিতে তারা এই পন্থা অবলম্বন করে। যাতে তাদের আটক করলেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের সঠিক তথ্য উদঘাটন করতে না পারে। তারা পরস্পর যোগসাজশে বা নেটওয়ার্ক তৈরির মাধ্যমে সারা দেশ থেকে ডাকাতি ও চুরি করা গাড়ি ঢাকায় এনে বিক্রি করে। তাদের মধ্যে গ্রেফতার আশিক এবং রাজ গাড়ি চুরি ছাড়াও এক জেলার চুরি করা গাড়ি অন্য জেলায় বিক্রির কার্যক্রম করে থাকে। এই চোর চক্রের সদস্যরা একেকজন একেক দায়িত্ব নিয়ে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করে যা প্রাথমিকভাবে তারা স্বীকার করেছে। তারা প্রায় ছয়/সাত বছর ধরে এই কাজ করে আসছে। তারা এ পর্যন্ত প্রায় প্রায় ৩৫টি গাড়ি চুরি করে বিক্রি করেছে বলে স্বীকার করে। এমনকি চোরাইকৃত পিকআপ রং ও রেজিস্টেশন নম্বর পরিবর্তন করে বিক্রি করে আসছিল।

সর্বশেষ খবর