সোমবার, ১৯ জুন, ২০২৩ ০০:০০ টা

শ্লীলতাহানির শিকার ছাত্রীকে সালিশে জুতাপেটা

গলাচিপা (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি

‘আমি এহন মাদরাসায় যামু ক্যামনে? আমারে মিথ্যা অপবাদ দিয়া হগুলডির সামনে মেম্বারে জোতা (জুতা) দিয়া পিডাইছে। আমার এহন ডর করে। রাস্তায় যদি মেম্বারে আবার মারে!’ কথাগুলো বলছিলেন গলাচিপা উপজেলার মাদরাসাপড়ুয়া সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী। গত ১০ জুন রাত ৮টার দিকে প্রাইভেট পড়ে বাড়ি ফেরার পথে শ্লীলতাহানির শিকার হন ওই ছাত্রী। এ সময় স্থানীয় লোকজন তাকে বাড়ি নিয়ে আসে। পরের দিন (১১ জুন) সকালে স্থানীয় ইউপি সদস্যসহ কয়েক নেতা সালিশ বৈঠক বসিয়ে ছাত্রী ও তার ভগ্নিপতির কথা না শুনেই জুতাপেটা করেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ছাত্রীর বাবা বাদী হয়ে পটুয়াখালী বিজ্ঞ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন বিশেষ ট্রাইব্যুনালে মামলা করেছেন যা ২১ জুন শুনানির ধার্য তারিখ। এদিকে পুলিশ ঘটনার তদন্ত করছে বলে জানিয়েছেন গলাচিপা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শোনিত কুমার গায়েন। ঘটনার শিকার মাদরাসাছাত্রী জানান, ‘আমি ১০ জুন রাইতে প্রাইভেট পইড়া বাড়ি আসতেছিলাম। এমন সময় হানিফ আমার মুখ চাইপ্পা ধইররা বাড়ির পাশে জঙ্গলের মধ্যে নিয়া যায়। হে আমার জামা কাপড় খোলার সময় মুখের হাত সইরা গেলে আমি চিৎকার দিলে লোকজন আমারে উদ্ধার করে। পর দিন (১১ জুন) হানিফ উল্ডা আমার বিরুদ্ধে শহিদুল মেম্বারেরে লইয়া সালিশ বৈঠক বসায়। আমার কথা না শুনিয়া সালিশিতে বসিয়া তারা আমারে জোতা দিয়া পিডায়।’ এ ঘটনায় অভিযুক্ত হানিফ প্যাদা স্থানীয় সংবাদকর্মীদের বলেন, ‘আমাকে মিথ্যা হয়রানি করা হচ্ছে। এ ঘটনা সত্য না।’

এ বিষয়ে গোলখালীর ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. শহিদুল প্যাদা মোবাইল ফোনে বলেন, ‘এসব মিথ্যা। আমি এর কিছু জানি না।’ গোলখালী ইউপি চেয়ারম্যান মো. নাসির উদ্দিন বলেন, ‘আমি লোকমুখে ঘটনা শুনেছি। আজ (গতকাল) ঘটনাস্থলে যাচ্ছি।’

গলাচিপা থানার অফিসার ইনচার্জ শোনিত কুমার গায়েন বলেন, ‘ঘটনা তদন্তের জন্য আজ (গতকাল) অফিসার গেছে। তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

ঘটনা সম্পর্কে গলাচিপা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মহিউদ্দিন আল হেলাল বলেন, ‘এ বিষয়ে আমার জানা নেই। তবে ইউপি সদস্য এমন কোনো ঘটনায় জড়িত থাকলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

সর্বশেষ খবর