নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের চনপাড়ায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ফের দুই গ্রুপের মাঝে সংঘর্ষ ও গোলাগুলির ঘটনায় দুজন গুলিবিদ্ধসহ ১০ জন আহত হয়েছেন। গতকাল দুপুর আড়াইটার দিকে উপজেলার কায়েতপাড়া ইউনিয়নের চনপাড়া পুনর্বাসন কেন্দ্র এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। গুলিবিদ্ধরা হলেন- ৬ নম্বর ওয়ার্ডের বাদল মিয়ার ছেলে বাবলু (২৫) ও আজাহারের ছেলে মাসুদ (২১)। তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বাকিদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ বিভিন্ন হাসপাতাল-ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়েছে। পুলিশ অভিযান চালিয়ে ৪২টি রামদা উদ্ধার করেছে। এ ধরনের সংঘর্ষ প্রায়ই ঘটে।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ (পরিদর্শক) মো. বাচ্চু মিয়া জানান, রূপগঞ্জ থেকে দুজন গুলিবিদ্ধ হয়ে হাসপাতালে এসেছেন। আহত মাসুদের কোমরের পেছন দিকে গুলিবিদ্ধ ও মাথায় ধারালো অস্ত্রের আঘাত আছে। বাবলুর ডান পায়ের পাতায় গুলির আঘাত আছে। তবে মাসুদের অবস্থা গুরুতর। তাদের জরুরি বিভাগে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

রূপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ এফ এম সায়েদ বলেন, ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। অভিযান চালিয়ে ৪২টি রামদা উদ্ধার করা হয়েছে। স্থানীয় ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গতকাল দুপুরে রায়হান ও জয়নাল গ্রুপের মাঝে গোলাগুলি ও ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। জয়নাল গ্রুপের বাবলু ও মাসুদ নামে দুজন গুলিবিদ্ধসহ ১০ জন আহত হন। আহত বাবলু বলেন, কায়েতপাড়া ইউনিয়ন নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী জয়নালের পক্ষে নির্বাচন করি। তিনি আরও বলেন, চনপাড়া একটি মাঠের পাশে মাসুদ, সাকিব ও সবুজসহ আড্ডা দিচ্ছিলাম। এ সময় নির্বাচনের জেরে বর্তমান মেম্বার পক্ষের রায়হান, সাব্বির, শান্ত, মামুন, কালো ইমনসহ কয়েকজন পেছন থেকে মাসুদের মাথায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে। এগিয়ে গেলে পিস্তল দিয়ে গুলি করে তারা। এতে মাসুদের কোমরের পেছন দিকে ও আমার ডান পায়ের পাতায় গুলি লাগে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত কয়েক মাস ধরেই চনপাড়া পুনর্বাসন কেন্দ্র উত্তপ্ত। চলছে জয়নাল, ইয়াছমিন, শমসের,  রায়হান, শাহাবুদ্দিনসহ কয়েকটি গ্রুপের অস্ত্রের মহড়া, সংঘর্ষ, হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট। গত ১১ এপ্রিল রাতভর সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় তিনজন গুলিবিদ্ধসহ ২০ জন আহত হন। পরে গত ৩০ এপ্রিল পুলিশ চনপাড়ায় অভিযান চালিয়ে দেশি অস্ত্রসহ মাদক উদ্ধার করে। গত ১১ মে মাদক ব্যবসার নিয়ন্ত্রণকে কেন্দ্র করে আবারও সংঘর্ষ হয়। এ ঘটনায় সৈয়দ নামে একজন গুলিবিদ্ধসহ তিন পক্ষের ২৪ জন আহত হন।

জানা গেছে, চনপাড়া স্থানীয় মানুষসহ সবার কাছেই আতঙ্কের নাম। এখানে আধিপত্য ও ক্ষমতা ধরে রাখতে প্রতিনিয়ত চলে সংঘর্ষ ও গোলাগুলির ঘটনা। এসব সংঘর্ষ ও গোলাগুলিতে বেশ কয়েকজন মারা গেছেন।