রবিবার, ২ জুলাই, ২০২৩ ০০:০০ টা

এবার ২৫ লাখ পশু বিক্রি হয়নি

নিজস্ব প্রতিবেদক

এবার কোরবানিযোগ্য পশুর সংখ্যা ছিল ১ কোটি ২৫ লাখ ৩৬ হাজার ৩৩৩টি। এর মধ্যে ১ কোটি ৪১ হাজার ৮১২টি পশু কোরবানি হয়েছে। অর্থাৎ ২৪ লাখ ৯৪ হাজার ৫২১টি পশু অবিক্রীত রয়ে গেছে। গত বছর কোরবানিতে অবিক্রীত পশুর সংখ্যা ছিল ২১ লাখ ৬৯ হাজার ৭১৭টি। প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের হিসাব অনুযায়ী, এবার কোরবানির জন্য চাহিদা ছিল ১ কোটি ৩ লাখ ৯৪ হাজার ৭৩৯টি পশুর। অর্থাৎ চাহিদার চেয়ে সাড়ে ৩ লাখ পশু কম কোরবানি হয়েছে। জানা গেছে, এ বছর সবচেয়ে বেশি পশু কোরবানি হয়েছে ঢাকা বিভাগে, ২৫ লাখ ৪৮ হাজারটি। সবচেয়ে কম কোরবানি হয়েছে ময়মনসিংহ বিভাগে, ৩ লাখ ৮৫ হাজার পশু। এ বছর কোরবানিতে বিক্রির জন্য ৬৮০টি পশু প্রস্তুত করেছিলেন ঢাকার মোহাম্মদপুরের আল মদিনা ক্যাটলের কর্ণধার রমজান আলী। এর মধ্যে ১৬০টি গরু অবিক্রীত রয়ে গেছে। রমজান আলী বলেন, প্রত্যাশা অনুযায়ী বিক্রি হয়নি। এবার ভাগে কোরবানি বেশি হয়েছে, যা গত কয়েক বছর কম ছিল। মানুষ যদি কোরবানি দিতে পারত, পশু যা ছিল তাতে ঘাটতি দেখা দিত।

ছোট গরু ও অনেক বড় গরুর চাহিদা বেশি ছিল বলে মনে করেন নারায়ণগঞ্জের এসএস ক্যাটল ফার্মের মো. লুৎফর রহমান। তিনি বলেন, ৮০ হাজার থেকে দেড় লাখ টাকা মূল্যের ছোট গরুর চাহিদা বেশি ছিল। ৫ থেকে ৬ লাখ টাকার গরুও বিক্রি হয়েছে, যা ধনীরা কিনেছেন। মাঝারি আকারের গরু কম বিক্রি হয়েছে। লোকসান এড়াতে কম লাভে গরু বিক্রি করে দিয়েছেন জানিয়ে লুৎফর রহমান বলেন, ক্রেতাদের মাথায় গত বছরের দাম ছিল। কিন্তু এর মধ্যে যে খাদ্য, বিদ্যুৎ ও অন্যান্য খরচ বেড়ে গেছে, তা ক্রেতাদের মাথায় ছিল না। অবশ্য প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের পরিচালক (প্রশাসন) মোহাম্মদ রেয়াজুল হক বলেন, ‘শুধু কোরবানির সময় পশু দেব, তারপর সারা বছর সংকট থাকবে, এটা যেন না হয়। আমাদের স্টক (মজুদ বা অবিক্রীত পশু) থাকবে, সারা বছর অনেক উৎসব আছে। প্রতিদিন গরুর প্রয়োজন হয়। সেই হিসাবে উদ্বৃত্ত থাকা ঠিকই আছে।’

এদিকে, এবার গরুর চেয়ে ছাগল বেশি কোরবানি হয়েছে। ২০১৮ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত তিন বছর ছাগল-ভেড়ার চেয়ে গরু-মহিষ বেশি কোরবানি হয়েছে। এরপর চিত্র উল্টে যায়। ২০২১ সাল থেকে বা শেষ তিন বছর গরু-মহিষের চেয়ে ছাগল-ভেড়া বেশি কোরবানি হয়েছে। এবার ৪৬ লাখ ৮৮ হাজার ৯৩৫টি গরু-মহিষ কোরবানি হয়েছে, সেখানে ছাগল-ভেড়া কোরবানি হয়েছে ৫৩ লাখ ৫১ হাজার ৬৩৫টি। অর্থাৎ গরু-মহিষের চেয়ে ছাগল-ভেড়া সাড়ে ৬ লাখের বেশি কোরবানি হয়েছে। এ ক্ষেত্রেও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা সাধারণ মানুষের আর্থিক সক্ষমতার কথাই বলছেন। বড় প্রাণী বা গরু-মহিষ কোরবানি দেওয়ার সক্ষমতা কমায় মানুষ ছোট প্রাণী বা ছাগল-ভেড়ার দিকে ঝুঁকেছে।

সর্বশেষ খবর