শিরোনাম
মঙ্গলবার, ৪ জুলাই, ২০২৩ ০০:০০ টা
নিউইয়র্কে বঙ্গ সম্মেলন

সংখ্যালঘু সুরক্ষায় অবিলম্বে আইন পাসের ডাক

যুক্তরাষ্ট্র প্রতিনিধি

বাংলাদেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সুরক্ষায় অবিলম্বে আইন পাসের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে। নিউজার্সির আটলান্টিক সিটির জিম হুয়েলান বোর্ডওয়াক হলে চলমান ৪৩তম বঙ্গ সম্মেলনে গত শনিবার আলোচনা সভায় এই আহ্বান জানানো হয়। এর আয়োজক- ‘ইন্ডিয়ান সাব-কন্টিনেন্ট পার্টিশন ডকুমেন্টেশন প্রজেক্ট’ আলোচকরা বলেন, ‘বাংলাদেশে কয়েক যুগ ধরে অব্যাহত সংখ্যালঘু নির্যাতন বন্ধের লক্ষ্যে আর সময়ক্ষেপণ না করে ২০১৮ সালের নির্বাচনী ইশতেহারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অঙ্গীকার ‘সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন’ জরুরি ভিত্তিতে পাস করা দরকার। ইন্ডিয়ান সাব-কন্টিনেন্ট পার্টিশন ডকুমেন্টেশন প্রজেক্ট চেয়ারম্যান ড. দিলীপ নাথের পরিচালনায় এই আলোচনায় অংশ নেন মুক্তিযোদ্ধা এবং একুশে পদক প্রাপ্ত লেখক ও কাউন্সিলম্যান ডক্টর নূরন নবী, ডিস্টিংগুয়িশড্ প্রফেসার, মানবাধিকার প্রবক্তা ও লেখক ডক্টর সব্যসাচী দস্তিদার, লেখক, চিন্তাবিদ ও রাজনীতিবিদ তথাগত রায়, লেখক, কলামিস্ট ও মানবাধিকার কর্মী শিতাংশু গুহ, যুক্তরাষ্ট্র ঐক্য পরিষদের সভাপতি অধ্যাপক নবেন্দু দত্ত, অ্যাটর্নি ও মানবাধিকার কর্মী অশোক কর্মকার, কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও মানবাধিকার কর্মী ডক্টর দ্বিজেন ভট্টাচার্য্য এবং আর্কিটেক্ট ও মানবাধিকার কর্মী উৎসব চক্রবর্তী।

বক্তারা বলেন, সরকার চাইলে সংখ্যালঘু নির্যাতন ঠেকানো সম্ভব। তারা বলেন যে, ২০১৩ সালে রামুর বিভৎস ঘটনা থেকে শুরু করে ২০২১ সালের পূজা পর্যন্ত কিছুদিন পর পর ধর্মীয় জাতীয়তাবাদী, মৌলবাদী ও উগ্রপন্থি চক্র দেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর বর্বর অত্যাচার করে আসছে, সরকারের উচিত ভবিষ্যতে এ ধরনের সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাস বন্ধের ব্যবস্থা নেওয়া। ২০১৮ সালের নির্বাচনী ইশতেহারে প্রতিশ্রুত ‘সংখ্যালঘু কমিশন’ ছাড়াও আরও কিছু আইনকে ‘সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন’-এর অন্তর্ভুক্ত করে একটি কঠোর বিল পাস হলে সংখ্যালঘুরা কিছুটা রেহাই পেতে পারে, কারণ তখন নির্যাতকদের বিচার হয়ে শাস্তি পাওয়ার ভয় থাকবে। বক্তারা বলেন, সামনে নির্বাচন আসছে, নির্বাচনের আগে-পরে সংখ্যালঘুরা যাতে নির্যাতিত না হয়, সরকারকে এ বিষয়ে এই বিল পাস করার মাধ্যমে সতর্ক হতে হবে। বক্তাদের অভিমত- সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা-ভিত্তিক ১৯৭২ সালের সংবিধান পুনঃপ্রতিষ্ঠার কোনো বিকল্প নেই। তাঁরা মনে করেন, পঞ্চদশ সংশোধনীর সুযোগ নিয়ে সংবিধানের অষ্টম সংশোধনী বাতিল করা উচিত ছিল। তা না করায় সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাস বেড়ে গেছে। বৈঠকে ঐক্য পরিষদ নেতারা জানান যে, ‘সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন’-টি যাতে প্রকৃতই একটি টেকসই আইন হয়, অর্থাৎ সংখ্যালঘু নির্যাতন চিরতরে বন্ধ করতে সক্ষম হয় এবং ভবিষ্যতে সাম্প্রদায়িক সহিংসতা ঠেকাতে পারে এ জন্যে এতে বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ ধারা থাকা চাই।

সভায় এই আইনের একটি খসড়া কিছুটা পড়ে শোনানো হয় এবং জানানো হয় যে, এই খসড়াটি ইতোমধ্যে ওয়াশিংটনে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ ইমরানের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর কাছে বিবেচনার জন্য পাঠানো হয়েছে। ‘অবিলম্বে সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন চাই’ মর্মে একটি প্রস্তাব সভায় সর্বসম্মতিক্রমে গ্রহণ করা হয়েছে।

সর্বশেষ খবর