রবিবার, ৯ জুলাই, ২০২৩ ০০:০০ টা
অধ্যাপক তাহের হত্যা

দুই খুনির ফাঁসি কার্যকরে প্রক্রিয়া শুরু

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূ-তত্ত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. এস তাহের আহমেদ হত্যা মামলায় মৃত্যুদন্ড পাওয়া দুই আসামির ফাঁসি কার্যকরের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। প্রাণভিক্ষার আবেদন নাকচের চিঠি রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারা কর্তৃপক্ষের কাছে এসে পৌঁছেছে। জেলকোড অনুযায়ী, চিঠি হাতে পাওয়ার ২১ থেকে ২৮ দিনের দিনের মধ্যে যে কোনো দিন ফাঁসি কার্যকর করা হবে।

রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার নিজাম উদ্দিন জানান, প্রাণভিক্ষা নাকচের চিঠি গত বুধবার ডাকযোগে এসে পৌঁছায়। কারা কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে প্রায় ছয় মাস আগে রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষার আবেদন করেছিলেন আসামিরা। সে আবেদন গত মাসে রাষ্ট্রপতি নাকচ করেন। এর মাধ্যমে মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত অধ্যাপক মিয়া মোহাম্মদ মহিউদ্দিন ও নিহত অধ্যাপক তাহেরের বাসার কেয়ারটেকার জাহাঙ্গীর আলমের পক্ষে চলমান সব দাফতরিক ও আইনি প্রক্রিয়া শেষ হয়। এখন জেলকোড অনুযায়ী ফাঁসি কার্যকরে উদ্যোগ নেবে কারা কর্তৃপক্ষ।

রাজশাহীর ডিআইজি (প্রিজন্স) কামাল হোসেন বলেন, জেলকোড অনুযায়ী মৃত্যুদন্ড কার্যকরের দিনক্ষণ ঠিক করার পর আত্মীয়স্বজনকে শেষ দেখা করার জন্য খবর দেওয়া হয়। নিম্ন আদালতে রায় ঘোষণার পর থেকেই রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারের কনডেম সেলে আছেন তারা। কারা সূত্র জানায়, গত ২ মার্চ ওই আসামির ফাঁসি এবং যাবজ্জীবন কারাদন্ডপ্রাপ্ত এক আসামির রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন খারিজ করেন সুপ্রিম কোর্ট। নিম্ন আদালতে দুজনের মৃত্যুদন্ডের যে রায় দেওয়া হয়েছিল তাই বহাল থাকে আপিলে, খারিজ হয় রিভিউ আবেদনও। এরপর রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা ছাড়া আর কোনো পথই খোলা ছিল না তাদের। এরপরও দুজনের ফাঁসি কার্যকর স্থগিত চেয়ে হাই কোর্টে গত ৭ মে আবার রিট আবেদন করেন তাদের স্বজনরা। যদিও উত্থাপিত হয়নি মর্মে পরবর্তী সময়ে সে আবেদনও খারিজ করে দেন হাই কোর্ট। ২০০৬ সালের ১ ফেব্রুয়ারি রাবির শিক্ষকদের পশ্চিমপাড়া আবাসিক কোয়ার্টার থেকে নিখোঁজ হন অধ্যাপক তাহের। বাসাটিতে তিনি একাই থাকতেন। কেয়ারটেকার জাহাঙ্গীর আলম তার দেখাশোনা করতেন। পরদিন বাসাটির পেছনের ম্যানহোল থেকে উদ্ধার করা হয় অধ্যাপক তাহেরের গলিত মৃতদেহ। ৩ ফেব্রুয়ারি তার ছেলে সানজিদ আলভি আহমেদ রাজশাহীর মতিহার থানায় অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে হত্যা মামলা করেন। ২০০৭ সালের ১৭ মার্চ শিবির নেতা মাহবুব আলম সালেহীসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দেয় পুলিশ। বিচার শেষে ২০০৮ সালের ২২ মে রাজশাহীর দ্রুত বিচার আদালত চারজনকে ফাঁসি ও দুজনকে খালাস দেন। দন্ডিত অন্যরা হলেন জাহাঙ্গীরের ভাই নাজমুল ও তার স্ত্রীর ভাই সালাম।

 তবে বিচারে খালাস পান ছাত্রশিবিরের নেতা সালেহী ও আজিমুদ্দিন মুন্সি। পরবর্তীতে দন্ডপ্রাপ্তরা উচ্চ আদালতে আপিল করেন। আপিল বিভাগ মহিউদ্দিন ও জাহাঙ্গীরের রায় বহাল রাখলেও নাজমুল ও সালামের রায় কমিয়ে যাবজ্জীবন করেন।

কিন্তু তাদের দন্ড বৃদ্ধি চেয়ে আপিল করে রাষ্ট্রপক্ষ। শুনানি শেষে ২০২২ সালের ৫ এপ্রিল আপিল বিভাগ হাই কোর্ট বিভাগের রায়ই বহাল রাখেন।

সর্বশেষ খবর