মঙ্গলবার, ১ আগস্ট, ২০২৩ ০০:০০ টা

মোহাম্মদ মমিনুর রহমান মানবিক এক প্রশাসক

নিজস্ব প্রতিবেদক

মোহাম্মদ মমিনুর রহমান মানবিক এক প্রশাসক

সততা, সাহসিকতা, দক্ষতা, মানবিকতা ও উদ্ভাবনী মানসিকতার জন্য সুপ্রিয় ব্যক্তিত্ব ঢাকার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমান গতকাল তার নতুন পদ ঢাকা বিভাগের অতিরিক্ত কমিশনার পদে যোগদান করেছেন। মোহাম্মদ মমিনুর রহমান ছিলেন ১৮৫তম জেলা প্রশাসক। এই পদে তিনি যোগ দেন ২০২২ সালের ৮ ডিসেম্বর। তার আগে তিনি ছিলেন দেশের বাণিজ্যিক রাজধানী চট্টগ্রামে জেলা প্রশাসক। সেখানে তিনি অত্যন্ত সফলতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেন।

জনবান্ধব মোহাম্মদ মমিনুর রহমান ঢাকার জেলা প্রশাসক হিসেবে জেলার রাজস্ব প্রশাসনে গুরুত্বপূর্ণ সংস্কারের উদ্যোগ নেন। সব স্তরের সেবা প্রত্যাশীর চাহিদা পূরণে নেন কার্যকর ভূমিকা। ঢাকা মহানগরের চাঞ্চল্যকর সিদ্দিকবাজার বিস্ফোরণ, বঙ্গবাজার অগ্নিকাণ্ড ও নিউমার্কেট অগ্নিকাণ্ডোত্তর পরিস্থিতির প্রতিকারে তাৎপর্যময় সার্বিক ব্যবস্থাপনাসহ ক্ষতিগ্রস্তদের বিপুল আর্থিক সহায়তার ব্যবস্থা করেন। এ ছাড়া সরকারি সম্পত্তির সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা, অবৈধ দখলে থাকা খাস জমি ও অর্পিত সম্পত্তি উদ্ধার এবং সাধারণ মানুষের কল্যাণে উদ্ধারকৃত সম্পত্তির ব্যবহার নিশ্চিতকরণে মমিনুর রহমানের ভূমিকা ছিল আপসহীন। তিনি জেলার বিভিন্ন স্থানে ভূমিদস্যু এবং অবৈধ দখলদারদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করেন এবং সাফল্যের সঙ্গেই একের পর এক মূল্যবান সরকারি জমি অবৈধ দখলমুক্ত করেন। তিনি জেলা প্রশাসক থাকতে আট মাসে জেলায় ৫৭.৫৯ একর খাস জমি উদ্ধার করা হয় যার বাজারমূল্য প্রায় ২ হাজার কোটি টাকা। মিরপুর, পুরানা পল্টন, নবাবপুর রোড, তোপখানা রোড, ডুমনীসহ বিভিন্ন এলাকায় সরকারের মূল্যবান সম্পত্তি থেকে অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ করা হয়েছে। মমিনুর রহমান আট মাসে প্রায় ৪.৫২ একর অবৈধ দখলে থাকা স্থাপনাসহ অর্পিত সম্পত্তি দখলমুক্ত করেন যার আনুমানিক মূল্য প্রায় ১০০ কোটি টাকা। উদ্ধারকৃত এসব সম্পত্তি জনকল্যাণে ব্যবহার নিশ্চিতকরণের অনন্য দৃষ্টান্ত গড়েন মোহাম্মদ মমিনুর রহমান। তারই দৃঢ় নেতৃত্বে নবাবগঞ্জ উপজেলার কলাকোপা ইউনিয়নের নয়নাভিরাম জামিদার বাড়ি ‘ব্রজনিকেতন’ অবৈধ দখলমুক্ত করে ‘সংরক্ষিত পুরাকীর্তি ’ ঘোষণা করা হয়। ১, পুরানা পল্টনস্থ সরকারি খাস ও অর্পিত সম্পত্তির ওপর নির্মাণাধীন একটি ১৮তলা ভবন উদ্ধার করে জেলা প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে। পল্টন এলাকায় একাধিক ভবনসহ প্রায় ২০০ কোটি টাকা মূল্যের ৩০.৫ শতক সরকারি খাস জায়গা অবৈধ দখলমুক্ত করে জেলা প্রশাসনের নিজস্ব বাজেটে সহকারী কমিশনার (ভূমি), রমনা এর কার্যালয় নির্মাণ করা হয়েছে। ওই জায়গায় স্থাপিত হয় ‘ঢাকা কালেক্টরেট অফিসার্স ক্লাব’। তৃতীয় লিঙ্গের সদস্যদের সামাজিক সংগঠন ‘স্বপ্নজয় বাংলাদেশ ফাউন্ডেশন’ কার্যক্রম পরিচালনার জন্য ১৫ শতক অর্পিত সম্পত্তি ইজারা দেওয়া হয়েছে। যার আনুমানিক মূল্য প্রায় ১০ কোটি টাকা। ‘ভালো কাজের হোটেল’ নামের স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনকে বনগ্রামে একটি বাড়ি বরাদ্দ দিয়েও প্রশংসিত হয়েছেন মমিনুর রহমান। মোহাম্মদ মমিনুর রহমান ঢাকার জেলা প্রশাসক থাকাকালে একটি আধুনিক, সময়োপযোগী ও ডিজিটালাইজড অর্পিত সম্পত্তি ব্যবস্থাপনা ও রক্ষণাবেক্ষণের লক্ষ্যে তার নির্দেশনায় অর্পিত সম্পত্তি শাখার জন্য অনলাইনভিত্তিক অ্যাপস ডেভেলপ করা হয়েছে। ভূমি অধিগ্রহণ শাখার কার্যক্রমে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠায় অটোমেটেড কম্পেনসেশন পেমেন্ট সিস্টেম (ACPS) কার্যক্রম সম্প্রসারণ করা হয়েছে। ঢাকা জেলায় যোগদানের আগে মমিনুর রহমান দুর্নীতিবিরোধী অভিযান, ভূমিদস্যুদের বিরুদ্ধে সাহসিকতাপূর্ণ সাঁড়াশি অভিযান পরিচালনা করে হাজার কোটি টাকা মূল্যের সরকারি জমি উদ্ধার করেছেন। চট্টগ্রামে করোনাকালে মোহাম্মদ মমিনুর রহমান নিরলসভাবে কাজ করে মানুষের হৃদয়ের মণিকোঠায় স্থান করে নিয়েছেন।

সর্বশেষ খবর