বুধবার, ২ আগস্ট, ২০২৩ ০০:০০ টা

খুলনায় ২৩৩৪ কোটি টাকার প্রকল্প নিয়ে অনিশ্চয়তা

সামছুজ্জামান শাহীন, খুলনা

খুলনা নগরীতে ওয়াসার ২ হাজার ৩৩৪ কোটি টাকার পয়ঃনিষ্কাশন প্রকল্পের কাজ বন্ধ রয়েছে চার মাস ধরে। সড়কে খোঁড়াখুঁড়ি ও পাইপ বসানোর কাজে ধীরগতির অভিযোগে গত ৩ এপ্রিল থেকে ওয়াসার কাজ বন্ধ করে দেয় সিটি করপোরেশন। এ পর্যন্ত প্রকল্পের ২৬৯ কিলোমিটার পাইপলাইনের মধ্যে ২০ কিমি. পাইপলাইন বসানো হয়েছে। ওয়াসা কর্মকর্তারা বলছেন, দ্রুত পাইপ বসানোর কাজ শুরু করা না গেলে নির্দিষ্ট সময়ে প্রকল্প শেষ করা কঠিন হবে। এদিকে সর্বশেষ কেসিসি ও ওয়াসার মধ্যে নতুন এমইউ (সমঝোতা) তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। গত ৩০ জুলাই দুই পক্ষের বৈঠকের পর খসড়া প্রস্তাবনা দেওয়া হয়। এতে কেসিসি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সড়কে খোঁড়াখুঁড়ি ও পাইপ বসানোর কাজ শেষ করতে বলেছে। অন্যদিকে ওয়াসার পক্ষ থেকে নির্দিষ্ট সড়কে তাদের কাজ শেষ হওয়ার পর কার্পেটিং দিতে বলা হয়। যাতে একটি সড়কে কার্পেটিং করার পর আবারও তা খোঁড়াখুঁড়ি করতে না হয়। এর আগে পরিকল্পনা কমিশনের পক্ষ থেকে সড়কে ওয়াসা-কেসিসিকে সমন্বয় করে নিজ নিজ প্রকল্প শেষ করতে নির্দেশনা দেওয়া হয়। কেসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা লস্কার তাজুল ইসলাম জানান, পয়ঃনিষ্কাশন প্রকল্পে ওয়াসার একটি রাস্তায় খোঁড়াখুঁড়ির কারণে ম্যানহোল তৈরিতে এক বছরের বেশি সময় লাগছে।

 কেসিসির ৬০৭ কোটি টাকার চলমান রাস্তা মেরামত উন্নয়ন প্রকল্পের মেয়াদ এক বছর বৃদ্ধি করলেও ওয়াসার কাজ শেষ হতে সময় লাগবে ২০২৫ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত। ফলে কেসিসির প্রকল্পের মেয়াদ আবারও বৃদ্ধি করতে হবে। তিনি বলেন, পরিকল্পনা কমিশনের নির্দেশনা মেনে এমইউ তৈরি করা হচ্ছে। সড়কে খোঁড়াখুঁড়ি ও পাইপ বসানোর কাজ ওয়াসা আগে করবে। এরপর কেসিসি কার্পেটিং করবে। কিন্তু ওয়াসা আগে খোঁড়াখুঁড়ি করবে মানে এই নয় যে দীর্ঘ সময় ধরে তারা খোঁড়াখুঁড়ি করতেই থাকবে।

খুলনা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আবদুল্লাহ জানান, প্রকল্পের শুরুতে চীন থেকে ইঞ্জিনিয়ার ও সুপারভাইজারদের আসতে দেরি হওয়ায় কাজ শুরু করতে কিছুটা বিলম্ব হয়। এরপর যখনই ফুল স্প্রিডে কাজ শুরু হয় তখনই তা বন্ধ করে দেওয়া হয়। তিনি বলেন, বিষয়টি নিয়ে সিটি মেয়রের সঙ্গে তার কথা হয়েছে। এখনই কাজ শুরু করতে না পারলে অনিশ্চয়তা তৈরি হবে।

জানা যায়, নগরীর শেখপাড়া রোড, আহসান আহমেদ রোড, সাউথ সেন্ট্রাল রোড, টিবি ক্রস রোড, সামছুর রহমান রোড, দারোগাপাড়া, প্রান্তিকা আবাসিকে ৬/৭টি রাস্তা, ফায়ারব্রিগেড রোড, মির্জাপুর রোডে পাইপ বসানো ও ম্যানহোল নির্মাণ শেষ হয়েছে।

খুলনা ওয়াসার প্রকল্প ব্যবস্থাপক খান সেলিম আহম্মদ জানান, নগরীর প্রায় ৭০ শতাংশ বাড়ির সেফটিক ট্যাংক সরাসরি ড্রেনের সঙ্গে সংযুক্ত। অধিকাংশ বাড়ির সেপটিক ট্যাংক থেকে পানি বাড়ির পাশের ছোট ড্রেন, সেখান থেকে বড় ড্রেন, এরপর খাল দিয়ে নদীতে চলে যায়। এসব বর্জ্য ড্রেনের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়ে দূষিত করছে নগরী এবং পাশ দিয়ে বয়ে চলা নদী ও খাল। বড় ধরনের স্বাস্থ্য ঝুঁকি এড়াতে পয়ঃনিষ্কাশন প্রকল্প বাস্তবায়ন জরুরি।

এ বিষয়ে সিটি মেয়র তালুকদার আবদুল খালেক বলেন, জনভোগান্তি কমিয়ে দ্রুত এই কাজ শেষ করার জন্য দুই পক্ষের মধ্যে আলোচনা হয়েছে। এমইউ তৈরির পর সেই আলোকে ওয়াসার পয়ঃনিষ্কাশন ও কেসিসির সড়ক মেরামত উন্নয়ন কাজ একই সঙ্গে চলবে।

সর্বশেষ খবর