রবিবার, ৬ আগস্ট, ২০২৩ ০০:০০ টা

শিশুমৃত্যু উদ্বেগজনক খুলনায়

সামছুজ্জামান শাহীন, খুলনা

খুলনায় হঠাৎ করেই দুর্ঘটনায় শিশু মৃত্যুর ঘটনা বাড়ছে। সেই সঙ্গে অপঘাতে ও পানিতে ডুবে মৃত্যুর ঘটনাও উদ্বেগ ছড়াচ্ছে। গত তিন মাসে এ ধরনের ঘটনায় বিভিন্ন স্থানে ১০টি শিশুর মৃত্যু হয়েছে। বিশ্লেষকরা শিশু মৃত্যুর ঘটনায় পরিবারের অসচেতনতা ও সামাজিক নিরাপত্তাহীন পরিমণ্ডলকে দায়ী করছেন। জানা যায়, ১ আগস্ট খুলনার ডুমুরিয়ায় পরিত্যক্ত মাটির ঘরের দেওয়াল চাপায় মাহিম শেখ (১৪ মাস) নামে এক শিশুর মৃত্যু হয়। মাগুরাঘোনা ইউপি চেয়ারম্যান শেখ রফিকুল ইসলাম জানান, বাড়ির আঙিনায় পরিত্যক্ত ঘরের দেওয়াল ভেঙে পড়লে শিশুটি তার নিচে চাপা পড়ে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। এ ছাড়া গত ২৫ জুলাই ডুমুরিয়ার কাঁঠালতলায় সাপের কামড়ে মোহনা চক্রবর্তী (১২) নামের স্কুলছাত্রী, ২৪ জুলাই পানিতে ডুবে ডুমুরিয়ার বৃত্তি ভুলবাড়িয়া গ্রামে কুলসুম (৭) ও মোজাম্মেল (৫) মারা যায়। ২০ জুলাই নগরীর গোবরচাকায় স্কুলছাত্রী সাবরিনার রহস্যজনক মৃত্যু, ৯ জুলাই পাইকগাছার বাঁকা ব্রিজের নিচে ৬ মাসের শিশুর লাশ উদ্ধার ও ৬ জুলাই ডুমুরিয়ায় গোনালী গ্রামে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে রকিবুল ইসলাম নামের স্কুলছাত্রের মৃত্যু হয়। বাংলাদেশ মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থার খুলনার সমন্বয়কারী অ্যাডভোকেট মোমিনুল ইসলাম বলেন, গত কয়েক মাসে খুলনায় পরপর কয়েকটি শিশু অপহরণ ও ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। এর মধ্যে ২১ জুন খুলনার দৌলতপুরে শিশু অঙ্কিতাকে ধর্ষণ ও হত্যা মামলার রায়ে আসামি প্রীতম রুদ্রকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রদান করেন আদালত। একই সঙ্গে লাশ গুমের অপরাধে ৫ বছরের কারাদণ্ড ও জরিমানা করা হয়। ২০২১ সালের ২২ জানুয়ারি বাড়ির পাশে খেলতে গিয়ে নিখোঁজ হয় অঙ্কিতা। নিখোঁজের ৬ দিন পর তার লাশ পাবলা বণিকপাড়ায় প্রীতমের বাড়ি থেকে উদ্ধার করা হয়।

এ ছাড়া ১৯ জুন খুলনার চুকনগর থেকে গৃহবধূ শিউলী বেগমের মুখে চেতনানাশক দিয়ে তার মেয়ে রাহিয়া তাসনিম (৭)-কে নিয়ে পালানোর চেষ্টাকালে স্থানীয়রা একজনকে আটক করে গণধোলাই দেয়। ৬ জুন নগরীতে পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রকে অপহরণের ঘটনায় নবী মোল্লা (২৮) নামের যুবককে গ্রেফতার করে র‌্যাব।

শিশুদের নিয়ে কাজ করা সংগঠন মাসাসের নির্বাহী পরিচালক শামীমা সুলতানা শিলু বলেন, আমাদের শিশুরা নিরাপত্তাহীন পরিমণ্ডলে বেড়ে উঠছে। সামাজিক বন্ধন পারিবারিক শিক্ষা ও সচেতনতা যেমন একদিকে কমছে, তেমনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতাও প্রশ্নবিদ্ধ। থানায় মামলা না হলে অনেক সময় পুলিশ কোনো ভূমিকা নিতে রাজি হয় না। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ক্লাব, সামাজিক প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি যারা আছেন, শিশুর নিরাপত্তায় সামাজিকভাবে তাদের অনেক করণীয় আছে। কিন্তু তারা দায়বদ্ধতার তাগিদ অনুভব করেন না।

সর্বশেষ খবর