বুধবার, ৯ আগস্ট, ২০২৩ ০০:০০ টা

শিক্ষকের ভর্ৎসনা শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা লাশ নিয়ে বিক্ষোভ

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি

কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে স্কুলের সিঁড়ি ঘরে বসে সপ্তম শ্রেণির পাঁচ ছাত্রী ধূমপান করায় তাদের ডেকে ভর্ৎসনা এবং টিসি দিয়ে বের করে দেওয়ার ভয় দেখান দুই শিক্ষক। এ ঘটনার পর বাড়ি ফিরে ঘরের আড়ার সঙ্গে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে অভিমানে জিনিয়া খাতুন (১৪) নামে এক ছাত্রী আত্মহত্যা করে। গত সোমবার সন্ধ্যায় কুমারখালী উপজেলার কয়া ইউনিয়নের সুলতানপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। সে সুলতানপুর মাহাতাবিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী ছিল। এদিকে জিনিয়ার আত্মহত্যার ঘটনায় ক্ষোভে ফুঁসে উঠে সুলতানপুর গ্রাম। বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী জিনিয়ার লাশ নিয়ে গতকাল দুপুরে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করে। এ সময় ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবদুর রশিদ জিনিয়ার লাশ দেখার জন্য সেখানে গেলে বিক্ষুব্ধ জনতা তার ওপর হামলা চালায়। পরে রক্তাক্ত অবস্থায় পুলিশ তাকে উদ্ধার করে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে। অভিযুক্ত শিক্ষক মশিউর রহমান লাল্টু, ওয়ালিউর রহমান ও বিদ্যালয়ের আয়া শিউলী আত্মগোপন করেছেন।

জিনিয়ার মামা জাহিদ হাসান জানান, শিক্ষার্থীদের ভুলকে পুঁজি করে ভিডিও ধারণ করে ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি ও ভয়ভীতি দেখানো মোটেই কোনো শিক্ষকসুলভ আচরণ নয়। অভিযুক্ত দুই শিক্ষক মশিউর রহমান লাল্টু ও ওয়ালিউর রহমান বলেন, তারা ছাত্রীদের ধূমপানের কোনো দৃশ্য মোবাইলে ভিডিও ধারণ করেননি। অন্য ছাত্রছাত্রীরা তাদের ধূমপান করার বিষয়ে তাদের কাছে অভিযোগ করলে জিনিয়াসহ পাঁচ শিক্ষার্থীকে ডেকে নিয়ে ঘটনার বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় এবং ধূমপান করার বিষয়টি অভিভাবকদের জানানোর কথা বলা হয়।

এমন তুচ্ছ ঘটনায় কোনো শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করতে পারে- এটি তাদের ধারণার বাইরে ছিল। তবে শিক্ষার্থীর আত্মহত্যার এ ঘটনায় তারা দুজনই অনুতপ্ত এবং ক্ষমাপ্রার্থী বলে জানান। প্রধান শিক্ষক আবদুর রশিদ বলেন, এ ঘটনার সঙ্গে কোনো শিক্ষক জড়িত থাকলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এদিকে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে গতকাল দুপুর ১২টার দিকে ময়নাতদন্ত শেষে জিনিয়ার লাশ সুলতানপুর গ্রামে পৌঁছালে সেখানে এক হৃদয়বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়। দুপুর ২টার দিকে স্থানীয় ঈদগাহ ময়দানে জিনিয়ার জানাজার নামাজ হয়। পরে সুলতানপুর বড় গোরস্তানে তাকে দাফন করা হয়। কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আকিবুল ইসলাম জানান, এ ঘটনায় পরিবারের পক্ষ থেকে কেউ কোনো লিখিত অভিযোগ করেনি। পেলে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সর্বশেষ খবর