টানা ৯ দিন ধরে কীর্তনখোলা নদীর পানি বিপৎসীমার নিচে রয়েছে। অথচ তীরবর্তী বরিশাল নগরীর প্রধান প্রধান অনেক সড়কই এখন পর্যন্ত তলিয়ে আছে বানের পানিতে। জলাবদ্ধতাও আছে বিভিন্ন এলাকায়। ফলে জনদুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে।
এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রাইমারি ও সেকেন্ডারি ড্রেনের সঙ্গে মাস্টার ড্রেনের আন্তঃসংযোগ না দেওয়া, ড্রেনগুলো নিয়মিত পরিষ্কার না করা এবং খালের প্রবাহ বন্ধ হওয়ার কারণে জমে থাকা পানি নামতে পারছে না। খালের প্রবাহ ফিরিয়ে আনাসহ ড্রেনগুলো নিয়মিত পরিষ্কার না রাখা হলে আগামীতে জলাবদ্ধতা ভয়াবহ রূপ নিতে পারে। নগর উন্নয়ন কমিটির নেতা এবং বিশেষজ্ঞরা এ অবস্থায় দ্রুত খালগুলো পুনরুদ্ধার করে পুনঃখননের দাবি জানিয়েছেন। পানি উন্নয়ন বোর্ডের দৈনন্দিন রিপোর্ট অনুযায়ী, ৫ আগস্ট থেকে কীর্তনখোলা নদীর পানি বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে নদীতীরবর্তী বরিশাল নগরীতে পানি জমে থাকার কথা নয়। কিন্তু নগরীর প্রধান প্রধান সড়কে এখনো জমে আছে পানি। গতকালও নগরীর চৌমাথা-বটতলা সড়ক, বগুড়া রোড ও কালুশাহ্ সড়কসহ অলিগলির বিভিন্ন সড়কে পানি দেখা গেছে। পানি ভেঙে চলচল করছে হালকা ও ভারী সব যানবাহন। বরিশাল নদী খাল বাঁচাও আন্দোলনের সদস্য সচিব কাজী এনায়েত হোসেন শিবলু জানান, ব্যক্তিমালিকানাধীন এবং সরকারি পর্যায়ে পুকুর-জলায়শয় ভরাট করা হয়েছে। পানি চুষে নেওয়ার খালি জমি কমছে। বেশ কয়েকটি খাল সরকারিভাবে ড্রেনে পরিণত করা হয়েছে। অন্য খালগুলোও অবৈধ দখল ও দূষণে সংকুচিত হয়েছে। ড্রেনগুলো নিয়মিত পরিষ্কার করা হচ্ছে না। এসব কারণে জমে থাকা পানি ড্রেন-খাল হয়ে নদীতে নামতে পারছে না। যার কারণে জলাবদ্ধতা থেকে মুক্তি পাচ্ছে না নগরবাসী। বরিশাল পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. তাজুল ইসলামের মতে, ছোট নদী ও খাল পুনঃখনন করতে না পারা, নগরায়ণের নামে জলাধারগুলো ভরাট করা এবং যত্রতত্র ময়লা ফেলে প্রবহমান ড্রেনেজ লিংক বন্ধ করে ফেলায় জলাবদ্ধতা স্থায়ী রূপ নিয়েছে। বরিশাল সিটি করপোরেশনের অবসরপ্রাপ্ত প্রধান প্রকৌশলী মো. তারিকুল হক বলেন, প্রাইমারি, সেকেন্ডারি ও মাস্টার ড্রেনের সংযোগ নিশ্চিত করা এবং ড্রেনগুলো নিয়মিত পরিষ্কার রাখতে হবে। এর সঙ্গে নগরীর খালগুলো পুনরুদ্ধার করে পুনঃখনন করা না হলে নগরবাসীর জলাবদ্ধতা থেকে মুক্তি মিলবে না। অন্যদিকে সিটি করপোরেশনের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের প্রধান মো. রেজাউল কবির দাবি করেন, সিটি করপোরেশনের সব ড্রেন নিয়মিত পরিষ্কার করা হয়। এটা রুটিন কাজ।
সিটি করপোরেশনের নির্বাহী প্রকৌশলী আবুল বাশার বলেন, নগরীর সব খাল পুনরুদ্ধার ও পুনঃখননসহ সৌন্দর্য বর্ধনে ২ হাজার ৬০০ কোটি টাকার একটি প্রকল্প পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।