সোমবার, ২৮ আগস্ট, ২০২৩ ০০:০০ টা
ভিত্তিপ্রস্তর অনুষ্ঠানে ভারতীয় হাইকমিশনার

নলেজ পার্ক অর্থনৈতিক ও প্রযুক্তিগত অংশীদারিত্বকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবে

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম

ভারত সরকারের আর্থিক সহায়তায় চট্টগ্রামে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন হয়েছে নলেজ পার্কের। গতকাল সকালে নগরীর চান্দগাঁওয়ে বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক যৌথভাবে এ পার্কের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। চট্টগ্রামের আইটি পার্কটি প্রায় ২৫০ মিলিয়ন ইউএস ডলার মূল্যের ভারত সরকারের রেয়াতি লাইন অব ক্রেডিট (এলওসি)-এর অধীনে বাংলাদেশের ১২টি জেলায় আইটি, হাইটেক পার্ক স্থাপনের প্রকল্পের একটি অংশ। হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা তার বক্তব্যে আইসিটি সেক্টরে ভারত-বাংলাদেশ সহযোগিতায় প্রকল্পের গুরুত্ব তুলে ধরেন এবং আশা করেন যে, এটি দুই দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক ও প্রযুক্তিগত অংশীদারিত্বকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবে। প্রকল্পটি ডিজিটাল বাংলাদেশের লক্ষ্য এবং ২০৪১ সালের মধ্যে ডিজিটাল থেকে স্মার্ট বাংলাদেশে রূপান্তরের লক্ষ্যকেও এগিয়ে নিয়ে যাবে। হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা বলেন, এ আইটি পার্কগুলো মান প্রতিষ্ঠা, হাব এবং ইনকিউবেশন সেন্টার তৈরি, উদ্যোক্তা বিকাশ এবং নতুন ও উদীয়মান প্রযুক্তিতে সক্ষমতা তৈরিতে সহায়তা করে বাংলাদেশে আইটি শিল্প এবং আইটি-সক্ষম পরিষেবার প্রচারে ভূমিকা রাখবে। আইটি পার্কগুলো একটি প্রযুক্তিগতভাবে দক্ষ জনশক্তিকে লালন-পালন করবে; যা ২১ শতকে আমাদের অর্থনীতির দ্রুত বৃদ্ধি এবং বিকাশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিটি পার্ক ৩ হাজার লোকের জন্য সরাসরি কর্মসংস্থান সৃষ্টি করবে এবং প্রতি বছর ১ হাজার জনকে প্রশিক্ষণ দেবে বলে আশা করা হচ্ছে।

পার্কগুলো থেকে প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষ সুবিধাগুলো তাই রূপান্তরমূলক হবে। এটাও উল্লেখযোগ্য যে, এ প্রকল্পে গ্রিন বিল্ডিং নির্মাণ করা হবে, যা শক্তি সাশ্রয়ী এবং পরিবেশবান্ধব। আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের প্রতিযোগিতা মোকাবিলায় বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে আইওটি, রোবোটিক্স, সাইবার সিকিউরিটিসহ উচ্চপ্রযুক্তি নিয়ে কাজ করার লক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় আইটি বিজনেস ইনকিউবেটর স্থাপন করা হচ্ছে। এরই অংশ হিসেবে বর্তমানে চুয়েটে দেশের প্রথম বিশ্ববিদ্যালয়ভিত্তিক পূর্ণাঙ্গ আইটি বিজনেস ইনকিউবেটর স্থাপন করা হয়েছে। উদ্বোধনের পর মাত্র এক বছরেই সেখানে কিছু আইটি প্রতিষ্ঠান ও স্টার্টআপকে স্পেস বরাদ্দ প্রদান করা হয়েছে। অন্যদিকে সিঙ্গাপুর-ব্যাংকক মার্কেটের ঊর্ধ্বমুখী সম্প্রসারণের মাধ্যমে নির্মিত বীর মুক্তিযোদ্ধা লেফটেন্যান্ট শেখ জামাল সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্কে বাণিজ্যিক কার্যক্রম পুরোদমে চলছে।

 শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বলেন, প্রতিযোগিতার এ যুগে আমাদের তরুণদের টিকে থাকতে হলে প্রযুক্তি শিক্ষার বিকল্প নেই। সরকার এ জন্যই একটি প্রযুক্তি নির্ভর জাতি গড়ে তুলতে কাজ করে চলেছে। এখন থেকে আর চাকরির পেছনে ছুটতে হবে না, নিজেরাই উদ্যোক্তা হয়ে মানুষকে চাকরি দেবে।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে চট্টগ্রাম-৮ আসনের সংসদ সদস্য নোমান আল মাহমুদ বলেন, চট্টগ্রামের উন্নয়নে আইসিটি বিভাগ থেকে কিছু প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে, যা বাস্তবায়িত হলে চট্টগ্রাম দেশের অন্যতম ডিজিটাল সিটি হিসেবে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে বলে আমরা দৃঢ়ভাবে আশাবাদী।

জানা যায়, ভারত সরকারের আর্থিক সহায়তায় বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষের অধীনে ‘জেলা পর্যায়ে আইটি/হাইটেক পার্ক স্থাপন (১২টি জেলায়)’ করা হচ্ছে। এ পার্ক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তুলতে সহায়তা করবে। শিক্ষার্থীদের জন্য গবেষণা ও উদ্ভাবনী কার্যক্রমের সুযোগ সৃষ্টি হবে। থাকবে ছাত্রছাত্রীদের জন্য বিশেষায়িত ল্যাব। একাডেমিক ও ইন্ডাস্ট্রিয়াল গবেষণার জন্য পৃথকভাবে ইনক্লুসিভ রিসার্চ ফ্যাসিলিটি স্থাপনের মাধ্যমে এখানে একটি ইনোভেশন কালচার সৃষ্টি করা হবে। ন্যাশনাল ও গ্লোবাল স্টকহোল্ডারদের সঙ্গে এ নলেজ পার্কের র্স্টাটআপ এবং স্টেকহোল্ডারদের কোলাবরেশন সৃষ্টি করা হবে।

সর্বশেষ খবর