শিরোনাম
মঙ্গলবার, ২৯ আগস্ট, ২০২৩ ০০:০০ টা

পরিচয় মিলেছে সেই গৃহকর্মীর অভিযুক্ত গৃহকর্ত্রী পলাতক

নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজধানীর সেন্ট্রাল রোডের একটি বাসায় ‘নির্যাতনে নিহত’ সেই গৃহকর্মীর পরিচয় পাওয়া গেছে। নিহত হেনা (১০) ময়মনসিংহের মুক্তাগাছার মৃত হক মিয়ার মেয়ে। তিন বছর আগে বাসার গৃহকর্ত্রী সাথী আক্তার পারভীন (ডলি) ব্যক্তিগত কাজে ময়মনসিংহে গিয়েছিলেন। সেখানে তার সন্তানকে দেখভালের জন্য শিশু গৃহকর্মী হেনাকে ঢাকায় নিয়ে আসেন। সাথী আক্তার ভূমি অফিসের সার্ভেয়ার বলে জানা গেছে। গতকাল কলাবাগান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, আমরা তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় ও গৃহকর্ত্রী সাথীর স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে নিহত হেনার পরিচয় নিশ্চিত হয়েছি। পরে আত্মীয়-স্বজনদের মাধ্যমে হেনার সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য পাওয়া গেছে। ১০ বছরের মেয়েটির বাবা-মা মারা গেছেন। সাথী আক্তার তিন বছর আগে হেনাকে ঢাকায় নিয়ে আসেন। মৃত্যুর খবর পেয়ে হেনার স্বজনরা ঢাকায় এসেছেন। লাশের ময়নাতদন্ত হয়েছে।  পুলিশ বলছে, হেনা খুনে অভিযুক্ত সাথীকে নজরদারিতে রাখা হয়েছে। যে কোনো সময় গ্রেফতার করা হবে। তার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।

কলাবাগানের সেন্ট্রাল রোডের ৭৭ নম্বর ভবনের দ্বিতীয় তলায় ই-১ নম্বর ফ্ল্যাটে সাথী আক্তার পারভীন তার শিশু সন্তান ও হেনাকে নিয়ে বসবাস করতেন। তিনি হেনাকে নির্যাতন করতেন বলে ধারণা পুলিশের। ২৫ আগস্ট সকালেও হেনাকে নির্যাতন করা হয়। যে কারণে তার মৃত্যু হয়েছে। পরে সাথী তার সবকিছু ফেলে রেখে পালিয়ে যান। কলাবাগান থানা পুলিশ জানায়, ওইদিন রাতে অজ্ঞাত ফোনে গৃহকর্মী মৃত্যুর প্রাথমিক তথ্য পায় পুলিশ। রাত দেড়টার দিকে সেন্ট্রাল রোডের ওই ভবনে গিয়ে কয়েকটি ফ্ল্যাটে খোঁজও নেওয়া হয়। ভবনটিতে ৪৪টি ফ্ল্যাট। সাধারণভাবে খোঁজ নেওয়া বেগতিক বুঝে ফিরে আসে পুলিশ। পরদিন সকাল সাড়ে ৮টায় ভবনের মালিক ও সোসাইটির লোকজন নিয়ে ভবনটির দ্বিতীয় তলায় ওই ফ্ল্যাটের দরজা ভেঙে হেনার লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। পরে লাশ ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেলের মর্গে পাঠানো হয়। এ ঘটনায় কলাবাগান থানার এসআই বাবুল হোসেন একটি মামলা করেছেন। ঢাকা মেডিকেল সূত্র জানায়, হেনার শরীরে নতুন ও পুরনো অনেক আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। মুখে ফেনা এবং শরীর ফোলা। 

কলাবাগান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জানান, হেনার পরিবার একেবারেই গরিব। লাশ বহন ও দাফনের অর্থও নেই তাদের। অনেকেই আর্থিক সহযোগিতা করেছেন। সেগুলো লাশ বহন দাফনসহ অন্যান্য খরচের জন্য হেনার পরিবারকে দেওয়া হয়েছে। আর হেনাকে হত্যার পর পরই পালিয়ে যায় গৃহকর্ত্রী সাথী। তাকে গ্রেফতারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে।

তদন্ত সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, তাদের কাছে সাথীর সাবেক স্বামী রাহাত বলেছেন, উচ্ছৃঙ্খল চলাফেরাসহ নানা কারণে সাথী পারভীনকে তিনি তালাক দিয়েছেন। একটি মামলা চলমান থাকায় সাথী ওই ফ্ল্যাটটি দখল করে একাই থাকতেন।

সর্বশেষ খবর