মঙ্গলবার, ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

কংগ্রেস অনুমোদন দিলে জিএসপি সুবিধা বহাল হতে পারে : জন ফে

নিজস্ব প্রতিবেদক

ঢাকায় মার্কিন দূতাবাসের কমার্শিয়াল কাউন্সিলর জন ফে বলেছেন, জিএসপি (জেনারেলাইজড সিস্টেম অব প্রেফারেন্সেস) এখন আর কার্যকর নেই। তবে কংগ্রেস (মার্কিন সংসদ) অনুমোদন দিলে এটা আবার বহাল হতে পারে। রপ্তানি শুল্ক কমানো হলে বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রের আমদানি বাড়বে। ফলে বাংলাদেশেরও রপ্তানি বাড়বে। বাংলাদেশি রপ্তানিকারকরা চ্য্যালেঞ্জ মোকাবিলা করলেও সেখানে বাংলাদেশের রপ্তানি বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। জন ফে গতকাল ইআরএফ আয়োজিত বাংলাদেশ ইউএস ট্রেড অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তৃতা করছিলেন। অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ যৌথভাবে উপস্থাপন করেন পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) গবেষণা পরিচালক মোহাম্মদ আবদুর রাজ্জাক ও পলিসি এক্সেচেঞ্জের চেয়ারম্যান মাশরুর রিয়াজ। সংগঠন কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এই সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন ইআরএফ সভাপতি রিফায়েত উল্লাহ মিরধা। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম। বক্তব্য দেন বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান, বিটিএমএ সভাপতি মোহাম্মদ আলী খোকন ও ঢাকা চেম্বার সাবেক সভাপতি শামস মাহমুদ প্রমুখ। জন ফে বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে শুল্ক কমানোর যে প্রস্তাব করা হয়েছে তা একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আমদানি শুল্ক কমানো অনেক বিষয়ের ওপর নির্ভর করে। সত্যি কথা হচ্ছে গত সাত বছরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের রপ্তানি দ্বিগুণ হয়েছে। তাঁর প্রত্যাশা, এ দেশের রপ্তানিকারকরা যত বেশি হারে আমদানি শুল্ক মোকাবিলা করুন না কেন যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের রপ্তানি ধারাবাহিকভাবে বাড়বে।

ইউএসটিআরের এ দেশগুলোর রপ্তানি বিভিন্ন ইস্যুতে কি ধরনের পদক্ষেপ নিবে সে বিষয় তিনি কিছু বলতে পারবেন না। মার্কিন জিএসপি ফিরে পাওয়ার জন্য মূল প্রবন্ধের ব্যাপারে বলা হয়েছে বাংলাদেশ বিনিয়োগ বাজারে আগামীতে আরও ভালো করার বিষয়ে ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে। মূল প্রবন্ধে বাংলাদেশের শ্রমিকদের শ্রমের নিরাপত্তা ও অধিকার আদায়ে একটা রূপরেখার কথা বলা হয়েছে। জন ফে মনে করেন, শ্রম আইন সংস্কার এবং ট্রেড ইউনিয়ন রেজিস্ট্রেশন ছাড়াও অন্যান্য বিষয় মাথায় রেখে এগোলে বাংলাদেশ ডিএসপি এবং জিএসপি পেতে সহায়তা করবে ।

বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের বাংলাদেশি পণ্যেরে জিএসপি সুবিধা বাতিলের এক দশক হয়ে গেছে। তা পুনর্বহাল করা হয়নি। তবে এর কোনো নেতিবাচক প্রভাব তৈরি পোশাক রপ্তানি খাতে পড়েনি। রপ্তানিতে ছন্দপতনও হয়নি। তবে অন্য খাতের ব্যবসায়ীরা কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন বলে মনে করেন বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান। বলেন, আগের অনুরোধের পুনরাবৃত্তি ঘটিয়ে বলতে চাই, এই উত্তরণকালের মেয়াদ ২০৩২ সাল পর্যন্ত বাড়ানো হোক। করোনা মহামারির কারণে আমাদের তৈরি পোশাক শিল্প ও বৈশ্বিক ফ্যাশন শিল্প মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়া আরও কিছু কারণ তুলে ধরেন ফারুক হাসান। যেমন- মহামারিপরবর্তী বাজারের অস্থিরতা, ক্রেতাদের পণ্য ক্রয়ের ধরন ও উৎস পরিবর্তন, জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধি ইত্যাদি।

মূল প্রবন্ধে উল্লেখ করা হয়, আমেরিকার সঙ্গে বাণিজ্য বৃদ্ধি ও ঘাটতি কমাতে রপ্তানি বহুমুখীকরণের কোনো বিকল্প নেই। দেশটিতে বাংলাদেশি পণ্যের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে- সে সুযোগ কাজে লাগাতে হবে। যুক্তরাষ্ট্রে অনেক ভালো মানের তুলা উৎপাদন হয় সেখান থেকে তুলা আমদানি করলে আরও উন্নত মানের কাপড় প্রস্তুত করে আবার সে দেশেই রপ্তানি করা সম্ভব। একইভাবে হিমায়িত খাদ্য রপ্তানিতেও বিরাট সুযোগ রয়েছে, সেটাও কাজে লাগাতে হবে। শ্রমিকদের শ্রমের নিরাপত্তা ও অধিকার আদায়ের একটি সুপারিশমালাও তুলে ধরা হয় মূল প্রবন্ধে।

সর্বশেষ খবর