বৃহস্পতিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

‘প্রবাসী বাংলাদেশি ফোরাম’র ১২ দফা

লাবলু আনসার, যুক্তরাষ্ট্র

জীবন-জীবিকাসহ নানা প্রয়োজনে বিপুলসংখ্যক বাংলাদেশি যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বসবাস করছেন এবং প্রতিনিয়ত তারা প্রিয় মাতৃভূমিতে নানাভাবে নিগৃহীত হচ্ছেন। বসতভিটা বেহাত হওয়ার অভিযোগও আছে এর মধ্যে। এসব অভিযোগের স্থায়ী সমাধানের জন্য গত বৃহস্পতিবার নিউইয়র্ক সিটির জ্যাকসন হাইটসে এক সংবাদ সম্মেলন থেকে প্রবাসীদের ১২ দফা দাবি তুলে ধরে সারা বিশ্বের প্রবাসী বাংলাদেশিদের সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে সূচনা বক্তব্যে বাংলাদেশ সোসাইটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ফখরুল আলম বলেন, প্রিয় জন্মভূমি ত্যাগ আসলে একটা রক্তক্ষরণের মতো বিষয়, সেই তীব্র ব্যথাকে উপেক্ষা করে প্রবাসী জীবনযাপন করার পাশাপাশি নানাভাবে নিজ নিজ পরিবার থেকে শুরু করে রাষ্ট্রকে সহযোগিতা করছেন।

প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সে দেশের অর্থনীতি সমৃদ্ধ হচ্ছে, দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বসবাসকারী প্রবাসীরা আজ দেশে-প্রবাসে নানা সমস্যায় জর্জরিত। প্রবাসীদের পাঠানো অর্থ আবার বিদেশে পাচার হয়ে আসছে। অথচ তার কোনো প্রতিকার বা বিচার নেই। তিনি বলেন, অনেকে প্রবাসীদের সঙ্গে চরম প্রতারণা করছেন। প্রবাসীদের অর্থ নিয়ে জায়গা-জমি, ভূমি, অ্যাপার্টমেন্ট, প্লট বুঝিয়ে দিচ্ছেন না। এ অবস্থায় নিজেদের দাবি-দাওয়া আদায়ে সময় এসেছে প্রবাসীদের সোচ্চার হওয়ার।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন কুইন্স কমিউনিটি বোর্ড মেম্বার আহসান হাবীব। শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন প্রবীণ সাংবাদিক সৈয়দ মোহাম্মদ উল্লাহ ও মুহাম্মদ ফজলুর রহমান। এ ছাড়াও ফখরুল আলমসহ সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তর দেন কমিউনিটি লিডার অ্যাটর্নি মঈন চৌধুরী, কাজী আজহারুল হক মিলন, মোহাম্মদ আলী, কাজী আশরাফ হোসেন নয়ন, আমীন মেহেদী বাবু, মূলধারার রাজনীতিক সৈয়দ রাব্বী প্রমুখ।

সংবাদ সম্মেলনে প্রবাসীদের পক্ষ থেকে ১২ দফা দাবি তুলে ধরা হয়। এগুলো হচ্ছে ১. নিউইয়র্ক-ঢাকা-নিউইয়র্ক রুটে বিমানের সরাসরি ফ্লাইট চালু, ২. ঢাকাস্থ শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্রবাসীদের হয়রানি বন্ধ করা ৩. প্রবাসীদের ভোটাধিকার ৪. বিদেশের বাংলাদেশ কনস্যুলেট ও দূতাবাসের মাধ্যমে ভোটাধিকার ও এনআইডি প্রদানের ব্যবস্থা ৫. দ্বৈত নাগরিকত্বের ক্ষেত্রে হয়রানি বন্ধ ৫. বাংলাদেশের অফিস-আদালতে লাল ফিতার দৌরাত্ম্য বন্ধ ৬. প্রবাসীদের জন্য ঢাকায় চালু করা ‘ওয়ান স্টপ সার্ভিস’ কার্যকর করা ৭. দেশের ভূমিদখলকারীদের হাত থেকে প্রবাসীদের রক্ষা করা। বিশেষ করে চুক্তি মোতাবেক ক্রয় করা জমি, প্লট, অ্যাপার্টমেন্ট সহজে সংশ্লিষ্ট প্রবাসীর কাছে বুঝিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করা ৮. প্রিয় জন্মভূমি সফরকালে প্রবাসীদের জানমালের নিরাপদের ব্যবস্থা করা ৯. বাংলাদেশে প্রবাসীদের ঘরবাড়ি ও স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি রক্ষার ব্যবস্থা করা ১০. প্রবাসীদের প্রেরিত রেমিট্যান্সের অর্থে গড়ে ওঠা অর্থনীতির লক্ষ-কোটি টাকা বিদেশে পাচার বন্ধ করাসহ পাচারকারীদের বিচারের আওতায় নিয়ে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা ১১. কনস্যুলেট সেবা বৃদ্ধি করে প্রবাসীদের পাসপোর্ট নবপ্রণ, জন্ম সনদ, মৃত্যু সনদ, দেশের সম্পত্তি হস্তান্তরে পাওয়ার অব অ্যাটর্নি প্রদানের মতো কাজগুলো সহজ করা এবং ১২. প্রবাসী বাংলাদেশির মৃতদেহ বিনা খরচে দেশে নেওয়ার ব্যবস্থা করা।

 

 

সর্বশেষ খবর