দেশব্যাপী ৩১ আসনে ৪১ জন প্রার্থী নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন। ভোটে অনিয়ম, কারচুপি, জাল ভোট, পোলিং এজেন্টদের মারধর করে ভোটকক্ষ থেকে বিতাড়ন, সমর্থকদের ওপর হামলা ও প্রশাসনের অসহযোগিতার অভিযোগে বর্জনের ঘোষণা দেন তারা। এসব অভিযোগে গতকাল দিনভর সংবাদ সম্মেলন ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে লাইভের মাধ্যমে প্রার্থীরা তাদের বক্তব্য তুলে ধরেন।
নির্বাচনে সুষ্ঠু পরিবেশ নেই দাবি করে ভোট স্থগিত ও পুনঃগ্রহণের দাবিও জানিয়েছেন এসব প্রার্থীরা। তাদের মধ্যে জাতীয় পার্টিসহ অন্যান্য দল এবং স্বতন্ত্র প্রার্থীরা আছেন। কারচুপি ও পোলিং এজেন্টদের বের করে দেওয়ার অভিযোগে গতকাল বিকালে ফেসবুকে এসে নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেন মৌলভীবাজার-২ আসনে তৃণমূল বিএনপির প্রার্থী এম এম শাহীন ও স্বতন্ত্র প্রার্থী শফি আহমদ সলমান। সংবাদ সম্মেলন করে নির্বাচন বয়কট করেন কুষ্টিয়া-৩ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী পারভেজ আনোয়ার। অনিয়ম ও প্রশাসনের অসহযোগিতার অভিযোগ এনে কুমিল্লায় ভোট বর্জন করেন পাঁচ প্রার্থী। তারা হলেন- কুমিল্লা-১ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী ব্যারিস্টার নাঈম হাসান ও জাতীয় পার্টির আমির হোসেন, কুমিল্লা-৭ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী মুনতাকিম আশরাফ টিটু এবং জাতীয় পার্টির লুৎফর রেজা খোকন এবং কুমিল্লা-১১ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী মিজানুর রহমান। নির্বাচন বর্জন করেন নড়াইল-১ আসনের ওয়ার্কার্স পার্টির প্রার্থী শেখ নজরুল ইসলাম এবং নড়াইল-২ আসনের একই দলের প্রার্থী অ্যাডভোকেট হাফিজুর রহমান। সিলেট-২ আসনে নির্বাচন বর্জন করেন গণফোরামের প্রার্থী মোকাব্বির খান, জাতীয় পার্টির প্রার্থী ইয়াহিয়া চৌধুরী, তৃণমূল বিএনপির মোহাম্মদ আবদুর রব ও স্বতন্ত্র প্রার্থী মুহিবুর রহমান (ট্রাক)। সিলেট-৩ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী ডা. ইহতেশামুল হক চৌধুরী দুলাল ও জাতীয় পার্টির প্রার্থী মো. সেলিম উদ্দিন এবং সিলেট-৪ আসনে তৃণমূল বিএনপির প্রার্থী আবুল হোসেন ভোট বর্জন করেন। শরীয়তপুর-২ আসনের বিকল্পধারা বাংলাদেশের প্রার্থী আমিনুল ইসলাম বুলু নির্বাচন বয়কট করেন। ভোট বর্জন করেন কক্সবাজার-১ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী জাফর আলম, কক্সবাজার-৩ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী ব্যারিস্টার মিজান সাঈদ এবং কক্সবাজার-৪ আসনে জাতীয় পার্টির মনোনীত প্রার্থী লাঙ্গল মার্কার নুরুল আমিন সিকদার ভুট্টো ভোট বর্জন করেন। টাঙ্গাইল-২ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী ইউনুছ ইসলাম তালুকদার ঠান্ডু জালভোট ও এজেন্টদের মারধরের কথা এনে ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন। ভোলা-৩ আসনে ভোট থেকে সরে দাঁড়ান স্বতন্ত্র প্রার্থী মেজর (অব.) জসিম উদ্দিন। নির্বাচন বর্জন করেন পাবনা-২ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী ডলি সায়ন্তনী ও তৃণমূল বিএনপির প্রার্থী আবুল কালাম আজাদ। পাবনা-৪ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী পাঞ্জাব বিশ্বাস নির্বাচন বর্জন করেন। বাগেরহাট-৪ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. জামিল হোসাইন ভোট বর্জন করেন। ঠাকুরগাঁও-১ আসনের জাতীয় পার্টির প্রার্থী লাঙ্গল প্রতীকের মো. রেজাউর রাজী স্বপ্ন চৌধুরী ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন। লালমনিরহাট-২ আসনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী দেলোয়ার হোসেন ভোট বর্জন করেন। চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ আসনে বিএনএম প্রার্থী মোহাম্মদ আবদুল মতিন ভোট বর্জন করেন। কেন্দ্র দখলের অভিযোগে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ান যশোর-১ শার্শা আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী আশরাফুল আলম লিটন। নৌকা প্রতীকে প্রকাশ্যে সিল মারার অভিযোগকে কেন্দ্র করে সমর্থক নৌকা ও জাতীয় পার্টির সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনার পর ভোট বর্জন করেন নারায়ণগঞ্জ-২ আসনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী আলমগীর সিকদার। এজেন্ট বের করে দেওয়া ও সমর্থকদের লাঞ্ছিত করার অভিযোগে নির্বাচন বয়কট করেন ঢাকা-২ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী ডা. হাবিবুর রহমান। খুলনা-৩ আসনে নির্বাচন বর্জন করেন স্বতন্ত্র প্রার্থী ফাতিমা জামান সাথী। ময়মনসিংহ-১০ আসনে ভোট বর্জন করেন দুই স্বতন্ত্র প্রার্থী ডা. আবুল হোসেন দীপু ও অ্যাডভোকেট কায়সার আহমেদ। কুড়িগ্রাম-৪ আসনের জাতীয় পার্টির প্রার্থী এ কে এম সাইফুর রহমান বাবলু ও স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. মজিবুর রহমান নির্বাচন বর্জন করেন। বরিশাল-৫ ও জামালপুর-৫ আসনে ভোট গ্রহণ স্থগিত চেয়ে পুনরায় নির্বাচনের দাবি করেন আসন দুটির স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. সালাউদ্দিন রিপন ও মো. রেজাউল করিম। একই দাবি জানান ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী ফিরোজুর রহমানের প্রধান নির্বাচনি এজেন্ট।