মঙ্গলবার, ৯ জানুয়ারি, ২০২৪ ০০:০০ টা

বাবার দলীয় প্রতীকে জয়ী হয়ে সংসদে ছয় সন্তান

ইমরান এমি, চট্টগ্রাম

বাবার দলীয় প্রতীকে জয়ী হয়ে সংসদে ছয় সন্তান

চট্টগ্রামে বাবার দেখানো পথে হেঁটে ছয় নেতার সন্তান এখন জাতীয় সংসদে। তাদের বাবা আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীক নিয়ে হয়েছেন এমপি-মন্ত্রী। সময়ের আবর্তে ছয় সন্তানের বাবাদের মধ্যে একজন ছাড়া অন্যরা প্রয়াত। আওয়ামী রাজনীতিতে উত্তরাধিকারের পরম্পরা নতুন নয়। দ্বাদশ সংসদে বিজয়ী হয়ে সংসদে তারা বাবার সূত্রে পাওয়া দলীয় প্রতীকে। নতুন হয়েছেন তিনজন। বাকি তিনজন ছিলেন একাদশ সংসদেও।

প্রয়াত ছয় নেতার এমপি সন্তানরা হলেন- চট্টগ্রাম-১ আসনে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন এমপির ছেলে আইটি বিশেষজ্ঞ মাহবুব উর রহমান রুহেল, চট্টগ্রাম-২ আসনে প্রয়াত এমপি রফিকুল আনোয়ারের মেয়ে খাতিজাতুল আনোয়ার সনি, চট্টগ্রাম-৩ আসনে প্রয়াত এমপি মোস্তাফিজুর রহমানের ছেলে মাহফুজুর রহমান মিতা, চট্টগ্রাম-৪ আসনে প্রয়াত এমপি এ বি এম আবুল কাশেম মাস্টারের ছেলে এস এম আল মামুন, চট্টগ্রাম-৯ আসনে চট্টগ্রামের সাবেক মেয়র এ বি এম মহিউদ্দীন চৌধুরীর ছেলে মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল ও চট্টগ্রাম-১৩ আসনে আওয়ামী লীগের প্রয়াত প্রেসিডিয়াম সদস্য আখতারুজ্জামান চৌধুরী বাবুর ছেলে সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ। এর মধ্যে এবারই প্রথম এমপি হয়েছেন মাহবুব উর রহমান রুহেল, খাতিজাতুল আনোয়ার সনি ও এস এম আল মামুন। জানা যায়, চট্টগ্রাম-১৩ আসনে এমপি সাইফুজ্জামান চৌধুরীর বাবা আখতারুজ্জামান চৌধুরী ১৯৭০ সালের প্রাদেশিক পরিষদ সদস্য এবং ৭২ সালে গণপরিষদ সদস্য ছিলেন। স্বাধীনতার পর ১৯৮৬, ১৯৯১ ও ২০০৮ সালে এমপি হয়েছেন। ছিলেন আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্য সম্পাদক। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলার সভাপতি। তার মৃত্যুর পর উপ-নির্বাচনে প্রথম এমপি হন তার ছেলে চট্টগ্রাম চেম্বারের সভাপতি সাইফুজ্জামান চৌধুরী। এরপর টানা তৃতীয়বার এমপি হয়েছেন ভূমি প্রতিমন্ত্রী ও পূর্ণমন্ত্রীর দায়িত্বে। চট্টগ্রাম-১ আসনের এমপি ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনের ছেলে রুহেল যুক্তরাষ্ট্রে পড়াশোনা করে পৈতৃক ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত। এবার তিনি বাবার আসন থেকে এমপি নির্বাচিত হয়েছেন। তার পিতা আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য, দলীয় মনোনয়ন বোর্ডেরও সদস্য। ছিলেন আওয়ামী লীগ সরকারের মন্ত্রিসভায়ও। ৮০ বছর বয়সী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ ভোটে অংশ না নিয়ে নিজ আসনে ছেলেকে দলীয় প্রতীকে এমপি করেছেন। মোশাররফ ১৯৭০ সালে পূর্ব পাকিস্তান প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য ছিলেন। এরপর ১৯৭৩, ১৯৮৬, ২০০৮, ২০১৪ ও ২০১৮ সালে এমপি নির্বাচিত হন। চট্টগ্রাম-২ আসনের এমপি ছিলেন প্রয়াত রফিকুল আনোয়ার। স্থানীয়দের কাছেও ছিলেন একজন সফল রাজনীতিবিদ। গত সংসদে কন্যা খাতিজাতুল আনোয়ার সনি সংরক্ষিত আসনের এমপি ছিলেন। এবার সরাসরি ভোটে এমপি হয়েছেন বাবার আসন থেকে। চট্টগ্রাম-৩ আসনের প্রয়াত এমপি মোস্তাফিজুর রহমান ১৯৯১ ও ৯৬ সালে ছিলেন এই আসনের এমপি। তিনি একজন শিল্পপতি ও সাংবাদিক হিসেবে ব্যাপক জনপ্রিয় ছিলেন। তার ছেলে মাহফুজুর রহমান মিতা ২০১৪ ও ১৮ সালে এই আসনের এমপি হয়েছেন। চট্টগ্রাম-৪ আসনে ১৯৯৬ ও ২০০৮ সালের এমপি ছিলেন আবুল কাশেম মাস্টার। ছিলেন ১৯৭৫ থেকে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত সীতাকুণ্ড উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি। এবার তার সন্তান এস এম আল মামুন হয়েছেন এমপি। মামুন উপজেলা চেয়ারম্যান ও উত্তর জেলা যুবলীগের সভাপতি ছিলেন। অপরদিকে মহিবুল হাসান চৌধুরীর পিতা এ বি এম মহিউদ্দীন চৌধুরী এমপি না থাকলেও ছিলেন চট্টগ্রাম সিটির তিনবারের মেয়র ও নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি। চট্টগ্রামের গণমানুষের নেতা হিসেবে সারা দেশে ব্যাপক জনপ্রিয় ছিলেন।

 

 

সর্বশেষ খবর