বুধবার, ৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ ০০:০০ টা

আদালত অবমাননার দায় থেকে অব্যাহতি পেলেন কুমিল্লার বিচারক

নিজস্ব প্রতিবেদক

আদালত অবমাননার দায় থেকে অব্যাহতি পেয়েছেন কুমিল্লার সাবেক চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. সোহেল রানা। সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের রায়ে তিনি অব্যাহতি পান। গতকাল বিচারক সোহেল রানার আপিল নিষ্পত্তি করে প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন ছয় বিচারপতির আপিল বেঞ্চ এ রায় দেন। বিচারক সোহেল রানা বর্তমানে আইন মন্ত্রণালয়ে সংযুক্ত রয়েছেন।

এর আগে ১২ নভেম্বর আদালত অবমাননার দায়ে বিচারক সোহেল রানাকে ৩০ দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছিলেন হাই কোর্ট। একই দিন ওই রায়ের বিরুদ্ধে তিনি আপিল বিভাগের চেম্বার জজ আদালতে গেলে সাজা স্থগিত করেন আদালত। গতকাল আদেশের পর বিচারক সোহেল রানার আইনজীবী শাহ মঞ্জুরুল হক বলেন, যেহেতু দায় থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে তাই তার আর কোনো দণ্ড থাকল না। তিনি জানান, হাই কোর্ট বিভাগ আদালত অবমাননার কারণে ৩০ দিনের সাজা দিয়েছিলেন এবং ৫ হাজার টাকা জরিমানা করেছিলেন। এর বিরুদ্ধে বিচারক সোহেল রানার আপিলটা নিষ্পত্তি করেছেন এবং কিছু পর্যবেক্ষণ দিয়েছেন।

আদালত অবমাননার যে দায় সেটা থেকে তাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। বাকি বিচারক জীবনের জন্য আদালত কিছু নির্দেশনা দেবেন পূর্ণাঙ্গ রায়ে।

জানা যায়, ২০১৭ সালের ২৭ মার্চ কুমিল্লার কোতোয়ালি মডেল থানায় টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ আইনে মামুন চৌধুরী ও রিয়া আক্তার দম্পতির বিরুদ্ধে একটি মামলা হয়। মামলাটির কার্যক্রমের বৈধতা নিয়ে তারা হাই কোর্টে একটি আবেদন করেন। ওই আবেদনের শুনানি নিয়ে ২০১৮ সালের ৪ নভেম্বর হাই কোর্ট রুল জারি করে মামলার কার্যক্রম স্থগিত করেন। এ স্থগিতাদেশ থাকা সত্ত্বেও কুমিল্লার তৎকালীন চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সোহেল রানা ওই মামলায় অভিযোগ গঠন করেন। এতে উচ্চ আদালতের আদেশ উপেক্ষা করে বিচারকাজ পরিচালনার বিষয়ে হাই কোর্টে আবেদন করেন সংক্ষুব্ধ মামুন। পরে বিচারক সোহেল রানা হাই কোর্টে হাজির হন এবং লিখিত জবাব দাখিল করেন। জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় গত বছরের ২৮ আগস্ট বিচারক সোহেল রানার প্রতি স্বতঃপ্রণোদিত আদালত অবমাননার রুল দেন হাই কোর্ট। পাশাপাশি তাকে হাই কোর্টে হাজির হতে নির্দেশ দেওয়া হয়। রুলের পর বিচারক সোহেল রানা সংক্ষুব্ধ মামুনের মামলাটির অভিযোগ গঠনের আদেশ প্রত্যাহার করে নেন এবং আদালতে নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করেন। হাই কোর্ট তার ক্ষমা প্রার্থনা গ্রহণ না করে গত ১২ নভেম্বর এক আদেশে ৩০ দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড ও ৫ হাজার টাকা জরিমানা করেন। একই সঙ্গে এ বিচারককে সাত দিনের মধ্যে ঢাকার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আত্মসমর্পণ করতে নির্দেশ দেওয়া হয়। আদেশের পর ওই বিচারক জামিন চেয়ে আবেদন করেন। হাই কোর্ট তাকে আপিলের শর্তে ৩০ দিনের জামিন দেন। এরপর একই দিন বিকালে হাই কোর্টের আদেশ স্থগিত চেয়ে আপিল বিভাগে আবেদন করেন বিচারক সোহেল রানা। এ আবেদনের পর চেম্বার জজ আদালত হাই কোর্টের আদেশ স্থগিত করে আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য ধার্য করেন। এর মধ্যে রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেন বিচারক সোহেল রানা। আপিলেও নিঃশর্ত ক্ষমা চান তিনি।

সর্বশেষ খবর