বুধবার, ২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ ০০:০০ টা

রাজধানীতে কিশোর গ্যাংয়ের ২৭ সদস্য গ্রেফতার

নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজধানীতে ত্রাস সৃষ্টিকারী কিশোর গ্যাংয়ের লিডারসহ পাঁচটি গ্রুপের ২৭ জন সদস্যকে গ্রেফতার করেছেন র‌্যাব-৩-এর সদস্যরা। সোমবার রাতে শাহজাহানপুর, সবুজবাগ, শ্যামপুর ও বংশাল এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে ২৫টি মোবাইল ফোন, ২০টি সিমকার্ড এবং নগদ টাকাসহ দেশি অস্ত্র উদ্ধার করা হয়। এদের মধ্যে কিশোর গ্যাং রাব্বি গ্রুপের পাঁচজন, হৃদয় গ্রুপের সাতজন, মুন্না গ্রুপের তিনজন, হাসান গ্রুপের দুজন এবং রকি গ্রুপের ১০ জন রয়েছে। তারা পেশায় গাড়ির হেলপার, ড্রাইভার, গ্যারেজের মিস্ত্রি, দোকানের কর্মচারী, নির্মাণ শ্রমিক, ভাঙারি পণ্যের ক্রেতা, সবজি বিক্রেতা।

এসব পেশার আড়ালে তারা মাদক সেবন, ইভটিজিং, ধর্ষণ, ছিনতাই, চাঁদাবাজি, ডাকাতিসহ বিভিন্ন ধরনের অপরাধে জড়িত। গতকাল রাজধানীর টিকাটুলিতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র‌্যাব-৩-এর অধিনায়ক লে. কর্নেল আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, শাহজাহানপুর, সবুজবাগ, শ্যামপুর ও বংশাল এলাকায় কিশোর গ্যাংয়ের এ সদস্যরা দীর্ঘদিন ধরে এলাকার আধিপত্য বিস্তারের নামে মাদক সেবন, সাইলেন্সারবিহীন মোটরসাইকেল চালিয়ে বিকট শব্দ করে জনমনে ভীতির সঞ্চার, স্কুল-কলেজে বুলিং, র‌্যাগিং, ইভটিজিং, ধর্ষণ, ছিনতাই, চাঁদাবাজি, ডাকাতি, অস্ত্র প্রদর্শন এবং অশ্লীল ভিডিও শেয়ারসহ নানাবিধ অনৈতিক কাজে লিপ্ত ছিল। তাদের আইনের আওতায় আনতে র‌্যাব গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ায়। এরই ধারাবাহিকতায় তাদের গ্রেফতার করা হয়।

জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানায়, তাদের প্রতিটি গ্রুপে প্রায় ১৫-২০ জন সদস্য রয়েছে। রাব্বি গ্রুপটি সন্ত্রাসী মো. রাব্বির নেতৃত্বে দীর্ঘদিন ধরে অবৈধ প্রভাব বিস্তার করে আসছে। নিজেদের মধ্যে কোন্দলের কারণে তারা দুই থেকে তিনটি গ্রুপে ভাগ হয়। সন্ত্রাসী হৃদয়ের নেতৃত্বে আরেকটি গ্রুপ রাজধানীর বংশাল ও আশাপাশের এলাকায় চাঁদাবাজি, ছিনতাই, ডাকাতিসহ অন্যান্য সন্ত্রাসী কার্যক্রম করত। এ গ্রুপের সন্ত্রাসীরা পথচারীদের আকস্মিকভাবে ঘিরে ধরে চাপাতিসহ ধারালো অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে অর্থ ও মূল্যবান সামগ্রী ছিনতাই করে আসছিল। তারা মাদক সেবনসহ মাদক ব্যবসার সঙ্গেও জড়িত। র‌্যাব কর্মকর্তা আরিফ মহিউদ্দিন আরও বলেন, শাহজাহানপুর ও সবুজবাগ এলাকায় সন্ত্রাসী মুন্না ও হাসানের নেতৃত্বে দুটি কিশোর গ্যাং গ্রুপ রয়েছে। এ গ্রুপের সদস্যরা সাইলেন্সারবিহীন মোটরসাইকেলে বিকট শব্দ করে খিলগাঁও ফ্লাইওভার এলাকায় জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি করত। এ ছাড়া রকি গ্রুপটি শ্যামপুর কদমতলী, যাত্রাবাড়ীসহ আশপাশের এলাকায় সন্ত্রাসী কাজে লিপ্ত ছিল। চাঁদাবাজি, ছিনতাই, মানুষকে হুমকি ও মারধরসহ বিভিন্ন ধরনের অপরাধের সঙ্গে জড়িত। তাদের মূল টার্গেট ছিল এলাকায় আধিপত্য বিস্তার করা। তারা রকির নেতৃত্বে টাকার বিনিময়ে ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী হিসেবেও কাজ করত। গ্রেফতারদের মধ্যে ১২ জনের বিরুদ্ধে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন থানায় চুরি, ডাকাতির চেষ্টা, অপহরণ ও মুক্তিপণ আদায়, মারামারি, ছিনতাই, চাঁদাবাজি, মাদক, দস্যুতা, অস্ত্র ও হত্যাচেষ্টাসহ একাধিক মামলা রয়েছে।

সর্বশেষ খবর