প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান বলেছেন, মামলাজট পুরনো ব্যাধি। এটি কমাতে হলে বিচারকের সংখ্যা বাড়ানোর পাশাপাশি ‘বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি’ পদ্ধতি জনপ্রিয় করতে হবে। তিনি গতকাল সকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আদালত প্রাঙ্গণে বিচার প্রার্থীদের জন্য নবনির্মিত বিশ্রামাগার ‘ন্যায়কুঞ্জ’ উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন। এ সময় প্রধান বিচারপতি বলেন, মামলাজট নতুন কিছু নয়- পুরনো ব্যাধি। মানুষ বাড়ছে। সেজন্য মামলাজট বাড়ছে। মানুষ লেখাপড়া যত শিখছে এতে মনে হয় মানুষ এক ধরনের অস্থিরপ্রবণ হয়ে উঠছে। মানুষকে বুঝাতে হবে। প্রধান বিচারপতি বলেন, শুধু মামলা-মোকদ্দমা করেই সমস্যা সমাধান হয় না। বিকল্প ব্যবস্থা আছে। আগে গ্রামের সালিশ ছিল। আইন করে ‘বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি’ পদ্ধতির মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এটিকে জনপ্রিয় করলে মামলাজট কিছুটা কমবে। তিনি বলেন, যে পরিমাণ বিচারক সারা দেশে থাকা দরকার সেই পরিমাণ নেই। আমাদের দেশে ৯০ থেকে ৯৫ হাজার মানুষের জন্য একজন বিচারক। তা আবার সহকারী জজ থেকে প্রধান বিচারপতি পর্যন্ত। এত কম বিচারক দিয়ে মামলাজট কমানো সম্ভব নয়। সেজন্য আমরা প্রতিবছর জুডিশিয়াল সার্ভিস কমিশনের মাধ্যমে ১০০ বিচারক নিয়োগ করতে পারি। এ সংখ্যা বাড়াতে হবে। লজিস্টিক সাপোর্টসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা বাড়াতে হবে। তিনি বলেন, আমাদের বিচারকরা কোর্টে অলস সময় কাটান না। তারা কাজ করে যাচ্ছেন। তারপরও মামলা শেষ হচ্ছে না। আরও বাড়ছে। তিনি বলেন, এক বছর যদি থাকে ৫০০, পরের বছর ৫৫০ হয়ে যায়। তিনি বলেন, খামোখা মামলা হয়। আমরা যে বিষয়টি পারিবারিক বা সামাজিকভাবে সমাধান করতে পারি, সেটি না করে আমরা আদালতে চলে যাই। সেজন্য মামলা বাড়ছে।
এ সময় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা ও দায়রা জজ শারমিন নিগার, নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনাল-১-এর বিচারক মো. ফারুক, চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মাসুদ পারভেজ, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান, গণপূর্ত বিভাগ, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নির্বাহী প্রকৌশলী সাকিউল আলম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. ইকবাল হোসেন, জেলা জজ কোর্র্টের জিপি অ্যাডভোকেট ওয়াছেক আলী, পিপি অ্যাডভোকেট মাহবুবুল আলম খোকন, বিভিন্ন পর্যায়ের বিচারকসহ আইনজীবীরা উপস্থিত ছিলেন। ন্যায়কুঞ্জ উদ্বোধনের পর প্রধান বিচারপতি সিজিএম কনফারেন্স রুমে বিচারকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। বিকালে তিনি আখাউড়া উপজেলার ধলেশ্বর গ্রামে রাবেয়া খাতুন স্মৃতি পাঠাগার আয়োজিত মুক্তিযোদ্ধা সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দেন।
