শনিবার, ৩০ মার্চ, ২০২৪ ০০:০০ টা

মুক্তিযোদ্ধা হুমায়ুনের প্রশ্ন, তাঁকে কেন এত অবহেলা

নিজস্ব প্রতিবেদক

মুক্তিযোদ্ধা হুমায়ুনের প্রশ্ন, তাঁকে কেন এত অবহেলা

‘মানুষের দোরে দোরে অনেক ঘুরেছি। এ বলে ওখানে যাও, সে বলে সেখানে যাও। যেতে যেতে শরীরের সব শক্তি গেছে। বয়স ৭২ হয়ে গেছে। যে কোনো সময় মরে যেতে পারি। জানি না, মরণের আগে গেজেটে নামটা উঠবে কি না। আপনারা কি আমার জন্য কিছু করবেন? প্রশ্ন করেছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. হুমায়ুন কবির। তিনি কয়েকদিন আগে ‘বাংলাদেশ প্রতিদিন’ অফিসে এসেছিলেন। হুমায়ুন কবির একাত্তরে পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে ছিলেন। ২০ মার্চ ছুটিতে আসেন। চাঁদপুর জেলার কচুয়া উপজেলার লুন্তি নোয়াবাড়ী গ্রামের বাড়িতে। হানাদার বাহিনী গণহত্যা শুরু করলে ১০ এপ্রিল মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেন। তাঁকে আর্টিলারিতে ব্যস্ত করা হয়। ২ নম্বর সেক্টরে মেজর হায়দারের অধিনায়কত্বে ভারতের কোলাবন থেকে কুমিল্লার শালঙ্গা নদী এলাকায় যুদ্ধ করেছেন।

স্বাধীনতার পর হুমায়ুন কবিরকে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ একটি পরিচয়পত্র দেয় (নং ক খ ২০০৮৯) যাতে রয়েছে সংসদ চেয়ারম্যান আহাদ চৌধুরীর স্বাক্ষর। ব্যস ওই পর্যন্তই। আজ অবধি রাষ্ট্রীয় ভাতা তাঁর ভাগ্যে জুটলো না। মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে সার্টিফিকেটের জন্য চট্টগ্রাম সেনানিবাসে আর্টিলারি রেকর্ড অধিকর্তার কাছে দরখস্ত করে সাড়া পাননি। হুমায়ুন কবির বলেন, আমাকে গেজেটভুক্ত করার জন্য মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রীর কাছে লিখিত আবেদন করেছি, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়েও আবেদন করেছি, কোনো সাড়া পাইনি। আমায় কেন এত অবহেলা বুঝি না। এ অবহেলার প্রতিকার চাই। একাত্তরের মুক্তিযোদ্ধাদের একটি তালিকা ভারতের কাছে আছে, সেখানে আমার ‘নাম আছে। যারা আমার নাম গেজেটভুক্ত করতে ইতস্তত করছেন তারা ওই তালিকাটা যাচাই করে দেখুন।’

নিদারুণ অর্থকষ্টের মধ্যে দিনাতিপাতরত হুমায়ুন কবির (ফোন : ০১৮৫২-৩৪৩৩৩২) ক্লান্ত পরিশ্রান্ত হলেও হতাশ নন। তাঁর বিশ্বাস, হৃদয়বান কেউ না কেউ তাঁকে উদ্ধারে এগিয়ে আসবেন। তিনি বলেন, ‘বিশ্বাস নিয়ে বেঁচে আছি।’

সর্বশেষ খবর