দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করে কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রোশন আলী মাস্টারের সাড়ে চার মিনিটের একটি বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়ে পড়েছে। ওই ভিডিও বক্তব্যে তাকে বলতে শোনা গেছে, ‘ভোটে আমরা হারিনি। ম্যাকানিজম করে হারানো হইছে। যে কোনো কারণে আমরা রেজাল্ট নিতে পারিনি। ৮২ হাজার ভোট কি কম? এগুলোর অনেক ইতিহাস। এগুলো আপনারা বুঝবেন না। আপনাদের ভাইঙ্গা বুঝাইতে অইব’। যাদের আমি নেতা বানাইছি তারা আমারে এখন (আঞ্চলিক গালি) দিয়াও গনে না। আমাদের দলে অনেক মীরজাফর আছে। এগুলো যুগ যুগ ছিল, থাকবে। তারা যদি ভালো হয়ে যায়, আমরাও ভালো হয়ে যাব। হজ করার পর যদি দেখি ভালো না হইছে, তাহলে মাঠে  নাইম্যা পড়ব।

শনিবার বিকালে রোশন আলী মাস্টার ওমরা হজ পালনের উদ্দেশে সৌদি গমন উপলক্ষে দেবিদ্বার পৌর এলাকার তার নিজ বাসভবনে ইফতার মাহফিলে ওই বক্তব্য রাখেন। ওই সময় উপস্থিত ছিলেন সাবেক সংসদ সদস্য রাজী মোহাম্মদ ফখরুল। তার বক্তব্যে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন দেবিদ্বার উপজেলা আওয়ামী লীগের তৃণমূল নেতা-কর্মীরা।

দেবিদ্বার উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ হুমায়ুন কবীর বলেন, তার লাগামহীন এসব বক্তব্যে সাধারণ মানুষের কাছে আওয়ামী লীগ হাস্যরসে পরিণত হচ্ছে। তাকে কেউ থামাতেই পারছে না। এর আগে দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনের বিভিন্ন সভায় তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী ও তার নেতা-কর্মীদের গালাগাল করেও বক্তব্য রেখে বিতর্কিত হন, যা সবাই দেখেছেন ও শুনেছেন। তারও আগে বিএনপির এক নেতার সঙ্গে তার ফোনালাপ ফাঁস হয়। ওই ফোনালাপে তাকে বলতে শোনা গেছে, ‘আওয়ামী লীগ ও নৌকা যারা করে তারা সব রাজাকারের বাচ্চা’। তার কর্মকান্ডে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের নেতারাও বিব্রত। আসলে তিনি মাইক হাতে পেলে কী বক্তব্য দেবেন হিতাহিত জ্ঞান হারাই ফেলেন!

এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রোশন আলী মাস্টারকে একাধিকবার ফোন করলেও তিনি রিসিভ করেননি।

২০২১ সালের ২৭ ডিসেম্বর তার সঙ্গে বিএনপি নেতা দেবিদ্বার উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মো. রহুল আমিনের একটি অডিও ফোনালাপ ফাঁস হলে সারা দেশে তোলপাড় সৃষ্টি হয়। ওই অডিও কলে তাকে বলতে শোনা গেছে, ‘যারা নৌকা করে তারা সব রাজাকারের বাচ্চা’। তার শেল্টার নিয়ে বিএনপি যেন আন্দোলন-সংগ্রামে মাঠে নামে সে কথাও বলতে শোনা গেছে। এর প্রতিবাদে সাবেক সংসদ সদস্য রাজী ফখরুলের নেতা-কর্মীরা রোশন আলী মাস্টারের পদত্যাগ দাবিতে ঝাড়ু ও জুতা মিছিল এবং তার কুশপুত্তলিকা দাহ করেন।