সোমবার, ২২ এপ্রিল, ২০২৪ ০০:০০ টা

মোবাইল ফোনে গান শোনা নিয়ে পিটিয়ে হত্যা স্ত্রী-কন্যাকে

দিনাজপুর প্রতিনিধি

দিনাজপুরের নবাবগঞ্জে স্ত্রী ও শিশুকন্যাকে বাঁশের খাটিয়া দিয়ে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগে শহিদুল ইসলামকে আটক করেছে পুলিশ। শনিবার দিবাগত রাত সাড়ে ৮টার দিকে নবাবগঞ্জ উপজেলার দাউদপুর ইউপির হেয়াতপুর গ্রামের (চিনিরচড়া) পশ্চিমপাড়া এলাকায় রোমহর্ষক এ ঘটনা ঘটে। আটক শহিদুল ইসলাম (৩৭) নবাবগঞ্জ উপজেলার দাউদপুর ইউপির হেয়াতপুর (চিনিরচড়া) গ্রামের সোহরাব আলীর ছেলে। এ ঘটনায় নিহতরা হলেন- নবাবগঞ্জ উপজেলার দাউদপুর ইউপির হেয়াতপুর (চিনিরচড়া) গ্রামের পশ্চিমপাড়া এলাকার মো. শহিদুল ইসলামের স্ত্রী মর্জিনা বেগম ও তার ছোট মেয়ে আফরিন জান্নাত (৬)। এ ছাড়া এ ঘটনায় তাদের বড় ছেলে আল আমিন (১৩) রংপুর মেডিকেলে আহত অবস্থায় চিকিৎসাধীন রয়েছে। মোবাইল ফোনে গান শোনা নিয়ে এ ঘটনা ঘটেছে বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে। বিষয়টি নিয়ে গতকাল প্রেস ব্রিফিং করেছেন দিনাজপুর পুলিশ সুপার শাহ ইফতেখার আহমেদ। মামলা সূত্রে জানা যায়, নবাবগঞ্জের হেয়াতপুর চিনিরচড়া গ্রামের শহিদুল ইসলাম একজন কাঠকাটা শ্রমিক। তিনি নিয়মিত সকালে কাজ করতে যান আর সন্ধ্যায় বাড়ি ফেরেন। প্রতিদিনের মতো গত শনিবার কাজ করতে যান এবং সূর্যাস্তের আগে বাড়ি ফিরে আসেন। এরপর সাইকেল মেরামত করতে দাউদপুর বাজারে যান। দাউদপুর বাজারে যাওয়ার সময় মোবাইল ফোনে গান শোনার শব্দে বিরক্ত হয়ে সন্তাদের শাসন করেন। এনিয়ে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে পাশে থাকা বাঁশের মোটা খাটিয়া দিয়ে স্ত্রী মর্জিনা বেগমকে আঘাত করেন। পরে সন্তানরা এলে তাদেরও আঘাত করে চলে যান। বাজার থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে বাড়িতে ফিরে এসে স্ত্রী মর্জিনা বেগম (৩২), ছেলে আল আমিন (১৩) ও মেয়ে আফরিন জান্নাতকে (৬) বাড়ির আঙিনায় রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন।

পরে তার চিৎকারে প্রতিবেশীরা ছেলে আল আমিন ও মেয়ে আফরিন জান্নাতকে উদ্ধার করে নবাবগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেন। সেখানে তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে উন্নত চিকিৎসার জন্য রংপুর মেডিকেলে পাঠানো হয়। অপরদিকে শহিদুল ইসলাম তার স্ত্রী মর্জিনা বেগমকে রিকশাভ্যানযোগে দাউদপুর বাজারে ডা. আজিজের কাছে নিয়ে গেলে তিনি তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এরপর শহিদুল তার স্ত্রী মর্জিনা বেগমের লাশ বাড়িতে নিয়ে যান। পরে পুলিশ সংবাদ পেয়ে মর্জিনা বেগমের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠায়।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মমিনুজ্জামান জানান, ওই মামলায় মর্জিনা বেগমের স্বামী গৃহকর্তা শহিদুল ইসলামকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তার স্বীকারোক্তিতে জানা যায়, সন্তাদের শাসন করা নিয়ে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে তিনি বাঁশের খাটিয়া দিয়ে স্ত্রী ও দুই সন্তানকে আঘাত করেন। এতে দুজনের মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় নিহতের মা মামলা দায়ের করেছেন। গতকাল আসামিকে দিনাজপুর জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।

সর্বশেষ খবর