রবিবার, ৯ জুন, ২০২৪ ০০:০০ টা

বাজেটে রাজস্বব্যবস্থা অটোমেশনে বরাদ্দ নেই : ফিকি সভাপতি

নিজস্ব প্রতিবেদক

ফরেন ইনভেস্টরস চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ফিকি)-এর সভাপতি জাভেদ আখতার বলেছেন, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে কর, ভ্যাট এবং কাস্টমস প্রশাসনের অটোমেশনের জন্য কোনো বরাদ্দ বা নির্দিষ্ট দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়নি। এ ধরনের সংস্কারের অভাবে ভ্যাট ক্রেডিট সম্পর্কিত জটিলতা এবং ব্যবসার ওপর সম্ভাব্য আর্থিক চাপ অব্যাহত থাকবে। ভ্যাট প্রক্রিয়াগুলো সরল করতে এবং ব্যবসায়সমূহের ওপর প্রশাসনিক বোঝা কমাতে ধারাবাহিক সংস্কার প্রয়োজন। ফিকির পাঠানো প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জাভেদ আখতার বলেন, কর প্রশাসনের দক্ষতা এবং স্বচ্ছতা বাড়াতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) ডিজিটালাইজেশনের জন্য সম্পদ বরাদ্দ অপরিহার্য। এ উদ্দেশ্যে ৫০০ মিলিয়ন টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে।

এর মধ্যে উন্নত তথ্য বিশ্লেষণ, ইলেকট্রনিক কর ফাইলিং সিস্টেম এবং করদাতাদের জন্য উন্নত ডিজিটাল ইন্টারফেস বাস্তবায়ন অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এই ডিজিটাল রূপান্তর বাজেটের রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা অর্জন এবং সামগ্রিক অর্থনৈতিক উন্নয়নকে সমর্থন করার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তিনি আরও বলেন, প্রস্তাবিত বাজেট অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে ব্যবসার বৃদ্ধির জন্য একটি অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি করবে। মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, সামগ্রিক চাহিদা হ্রাস এবং বাজারের সরবরাহের দিকে নজর দেওয়ার ওপর বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে বাজেট অর্থনীতি স্থিতিশীল করার জন্য একটি শক্তিশালী ভিত্তি স্থাপন করবে।

বাজেটে মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ এবং অর্থনীতি স্থিতিশীল করার জন্য সুদের হার ৮.৫ ভাগ বাড়িয়ে কঠোর মুদ্রানীতি অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। স্ট্যান্ডিং লেন্ডিং ফ্যাসিলিটি (এসএলএফ) এবং স্ট্যান্ডিং ডিপোজিট ফ্যাসিলিটি (এসডিএফ) হার যথাক্রমে ১০ ভাগ এবং ৭ ভাগ নির্ধারণ করা হয়েছে; যাতে মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করা যায় এবং সঞ্চয়কে উৎসাহিত করবে। এ ছাড়াও প্রযুক্তিগত অগ্রগতির মাধ্যমে কৃষি উৎপাদনশীলতা ২০ ভাগ এবং শিল্প উৎপাদন ১৫ ভাগ বাড়ানোর জন্য উল্লেখযোগ্য বিনিয়োগ করা হয়েছে। এটি চাহিদা ও সরবরাহের ভারসাম্য রক্ষা করবে এবং অর্থনীতিকে স্থিতিশীল করবে। জাভেদ আখতার বলেন, বাজেটের একটি উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য হলো এর প্রগতিশীল ব্যবসাবান্ধব দৃষ্টিভঙ্গি, যা ভোক্তাদের জন্য খরচ কমানোর ওপর ফোকাস করে। একটি ভবিষ্যতাপেক্ষ করব্যবস্থা প্রবর্তন দীর্ঘদিনের চাহিদা পূরণ করেছে, যা ব্যবসায় সঠিক কর পরিকল্পনা করতে সক্ষম হবে। শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত নয় এমন কোম্পানির করপোরেট করহার নগদ লেনদেনের শর্ত পরিপালন সাপেক্ষে ২৭ দশমিক ৫ শতাংশ হতে আড়াই শতাংশ কমিয়ে ২৫ শতাংশ করার প্রস্তাব করা হয়েছে; যাকে আমরা সাধুবাদ জানাই। করহার হ্রাসের প্রস্তাব বেসরকারি বিনিয়োগ উৎসাহিত করবে আশা করা যায়।  ফিকি সভাপতি বলেন, প্রস্তাবিত বাজেটটি কর সংস্কারের ওপর ফোকাস করে; যা করব্যবস্থাকে সরল এবং স্পষ্ট করে তুলেছে। এর মধ্যে করের আওতা ২৫ ভাগ বৃদ্ধি, ইলেকট্রনিক ফিস্কাল ডিভাইস প্রবর্তন এবং কর সংগ্রহকে সহজতর করতে এবং খরচ কমাতে ই-পেমেন্ট সিস্টেম প্রচার করা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। করদাতাদের সংখ্যা ২ মিলিয়ন থেকে ২.৫ মিলিয়ন বাড়ানোর আশা করা হচ্ছে, যা একটি ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ তৈরি করবে এবং করব্যবস্থার পূর্বানুমানযোগ্যতা ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করবে। সরাসরি কর বৃদ্ধি এবং ইলেকট্রনিক ট্যাক্স ডিডাকশন অ্যাট সোর্স (ই-টিডিএস) সিস্টেম প্রয়োগের মাধ্যমে প্রস্তাবিত বাজেট কর প্রতিপালন এবং কর ফাঁকি হ্রাস করার লক্ষ্য রাখে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর