শিরোনাম
শনিবার, ২৯ জুন, ২০২৪ ০০:০০ টা

সুনামগঞ্জে সড়কে ক্ষতি ২৭০০ কোটি টাকা

উদ্যোগ নেই স্থায়ী প্রতিকারে

সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি

বছর বছর বন্যা হয় সুনামগঞ্জে। বসতবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বানের পানিতে নষ্ট হয় অককাঠামো। ভাঙে রাস্তাঘাট; সড়ক, মহাসড়ক। কয়েক দিনের বন্যা যে ক্ষত রেখে যায়, সেটি সারতে লাগে কয়েক বছর। দীর্ঘ দুর্ভোগে পড়েন সাধারণ মানুষ। ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক মেরামতে ব্যয় হয় মোটা অঙ্কের টাকা। কিন্তু উদ্যোগ নেই স্থায়ী প্রতিকারে। সংশ্লিষ্ট বিষয়ে অভিজ্ঞজনরা বলছেন, বিশ্বের বৃষ্টিবহুল এলাকা চেরাপুঞ্জির ভাটিতে থাকা বন্যাপ্রবণ সুনামগঞ্জে সড়ক মহাসড়কের নির্মাণ কৌশলে পরিবর্তনই পারে ক্ষয়ক্ষতি কমিয়ে আনতে। পরিসংখ্যান মতে, ২০২২ সালে শতাব্দীর ভয়াবহ বন্যার কবলে পড়ে সুনামগঞ্জ। বসতবাড়ি, অবকাঠামোর পাশাপাশি সেই বন্যায় লন্ডভন্ড হয়ে যায় জেলার সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা। স্মরণকালের ভয়াবহ এই বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয় জেলার ২ হাজার ২০০  কিলোমিটার সড়ক, মহাসড়ক। ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়ায় ১ হাজার ৮০০ কোটি টাকা।  ২০২২ সালের বন্যার ক্ষত সেরে ওঠার আগেই দুই বছরের মাথায় আবার আসে বন্যা। ছয় দিনের বন্যায় ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত জেলার ২৭০ কিলোমিটার সড়ক। সড়ক জনপথ ও স্থানীয় সরকার বিভাগের আওতাধীন এই সড়কগুলো চলাচলের উপযোগী করতে লাগবে আরও ৫০০ কোটি টাকা।

সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, সুনামগঞ্জ শহরতলির একটি অঞ্চলকে জেলা সদরের সঙ্গে যুক্ত করেছে নবীনগর-গোদারগাঁও সড়ক।

 সুরমা নদীর তীরঘেঁষা এই সড়কের ১০টি অংশ ভেসে গেছে পানির তোড়ে। ছাতক-সুনামগঞ্জ সড়কের আইন্ধারিগাঁও এলাকায়ও পানির তোড়ে ভেঙে গেছে অন্তত ১০০ মিটার সড়ক।

আগের বন্যায় ছাতক-সুনামগঞ্জ সড়কের নোয়াগাঁও ও পানাইল এলাকায় আরও দুটি অংশ ভেঙে ভেসে যায়। সেই ভাঙা দুটি অংশে সেতু নির্মাণের কাজ শুরু হলেও স্থাপিত হয়নি সড়ক যোগাযোগ।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে ভারী বৃষ্টিপাত এই বন্যার পেছনে দায়ী। পানির মাত্রাতিরিক্ত উচ্চতা বৃদ্ধির পেছনে দায়ী নদী ভরাট এবং পানির স্বাভাবিক গতিপথে বিঘ্ন সৃষ্টিকারী অপরিকল্পিত রাস্তাঘাট নির্মাণ। এ ছাড়া হাওরের প্রকৃতির সঙ্গে অসামঞ্জস্য ডিজাইনে নির্মিত সড়ক নির্মাণও এর পেছনে দায়ী।

সুনামগঞ্জ সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আশরাফুল ইসলাম প্রামাণিক বলেন, সুরমা-কুশিয়ারাসহ জেলার সব নদী খনন করে পানির ধারণক্ষমতা বৃদ্ধিই হচ্ছে প্রথম কাজ। এ ছাড়া পানির গতিপ্রবাহের প্রতিবন্ধকতাগুলো দূর করতে হবে। হাওরে ডুবন্ত সড়ক নির্মাণে গুরুত্ব দিতে হবে। বিটুমিনের পরিবর্তে কনক্রিট দিয়ে সড়ক নির্মাণ করতে হবে। সড়কের শোল্ডারগুলো কনক্রিটের ব্লক দ্বারা ঢেকে দিতে হবে। যাতে পানির তোড়ে সড়কের মাটি ভেসে না যায়।

সুনামগঞ্জ স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আনোয়ার হোসেন বলেন, ভূ-প্রাকৃতিক অবস্থান বিবেচনা করে সড়কগুলো বাস্তবসম্মত ডিজাইন করলে ক্ষতি কমিয়ে আনা সম্ভব। কিশোরগঞ্জের ইটনা-মিঠামইনে হাওরের ওপর দিয়ে যে অল ওয়েদার সড়ক করা হয়েছে, সেখানে ঘন ঘন ব্রিজ নির্মাণ করে দিতে হবে। তার মতে, হাওর এলাকায় পানির প্রবাহে বাধা সৃষ্টি করে এমন স্থাপনা রাখা যাবে না।

সর্বশেষ খবর