সোমবার, ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ০০:০০ টা

কেজরিওয়ালের নাটকীয় সিদ্ধান্ত

কলকাতা প্রতিনিধি

কেজরিওয়ালের নাটকীয় সিদ্ধান্ত

দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফার নাটকীয় সিদ্ধান্ত নিলেন অরবিন্দ কেজরিওয়াল। গতকাল দলীয় সভা থেকে এ ঘোষণা দেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী। তিনি জানান, ‘আমি দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীর পদ ছেড়ে দিচ্ছি। দিল্লির বিধানসভা নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত আম আদমি পার্টির (আপ) অন্য কেউ মুখ্যমন্ত্রী হবেন।’ উল্লেখ্য, আবগারি নীতি দুর্নীতি মামলায় গত শুক্রবার সুপ্রিম কোর্ট থেকে জামিন পান কেজরিওয়াল। শীর্ষ আদালতের নির্দেশের পরেই রাতে দিল্লির তিহার জেল থেকে ছাড়া পান তিনি। এরপর প্রথমবারের জন্য দলীয় কার্যালয়ে যান কেজরিওয়াল। সেখান থেকেই মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার কথা জানান। আগামী দুই দিনের মধ্যে দলের বিধান পরিষদের বৈঠকে কেজিওয়ালের বিকল্প বেছে নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি। আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে দিল্লিতে বিধানসভার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। তবে কেজরিওয়ালের দাবি, আগামী নভেম্বর মাসে মহারাষ্ট্রের বিধানসভা নির্বাচনের সঙ্গেই যেন দিল্লিতে ভোট করানো হয়। এ ব্যাপারে তিনি বলেন ‘আগামী ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে মহারাষ্ট্র বিধানসভা নির্বাচন। আমি দাবি জানাব, মহারাষ্ট্রের সঙ্গে যেন দিল্লিতেও নির্বাচন করা হয়। যতক্ষণ পর্যন্ত সেই নির্বাচন না হচ্ছে, আম আদমি পার্টি থেকে অন্য কাউকে মুখ্যমন্ত্রীর পদে বসানো হবে।’ আপ দলের সূত্রে জানা গেছে, মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগের পর ১৫ দিনের মধ্যেই তিনি সরকারি বাসভবন ছেড়ে দেবেন।

 সেই বৈঠকেই এই গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেন তিনি। কেজরিওয়াল জানান ‘দুই দিন পর আমি মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দিতে চলেছি। জনগণের রায় না পাওয়া পর্যন্ত মুখ্যমন্ত্রীর গদিতে বসব না। আমি প্রতিটি বাড়ি যাব এবং রাস্তায় বেরোব। মানুষের রায় না পাওয়া পর্যন্ত আমি মুখ্যমন্ত্রীর চেয়ারে বসব না। কেজরিওয়াল আরও জানান ‘আগামী দুই দিনের মধ্যে ক্যাবিনেট বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর দলের অন্য কাউকে মুখ্যমন্ত্রীর পদের জন্য ঘোষণা দেওয়া হবে। যদিও আবগারি নীতি দুর্নীতি মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া মণীশ সিসোদিয়া মুখ্যমন্ত্রীর পদে বসবেন না বলেও পরিষ্কার করেছেন কেজরিওয়াল।

কেজরিওয়াল জানান ‘আমি মণীশ সিসোদিয়ার সঙ্গে কথা বলেছি, কিন্তু তিনিও বলেছেন যে মানুষ আমাদেরকে সৎ বলার পরেই তিনি ওই পথ গ্রহণ করবেন। স্বাভাবিকভাবে আমার এবং মণীশের ভাগ্য আপনাদের হাতে ঝুলে রয়েছে।’ কেজরিওয়ালের অভিমত, এর আগে তাকে গ্রেপ্তারের পরও মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দেননি, কারণ তিনি সংবিধানকে বাঁচাতে চেয়েছিলেন। তারা (বিজেপি) কর্ণাটকের মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া, কেরালার মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন। আমি অ-বিজেপি দলগুলোকে আহ্বান জানাব, আপনাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হলেও পদত্যাগ করবেন না। এটা হচ্ছে তাদের নতুন খেলা।’ কেন্দ্রকে নিশানা করে কেজরিওয়াল বলেন, ‘এই সরকার ব্রিটিশ শাসনের চেয়েও বেশি স্বৈরাচারী। জেলে থাকাকালীন দিল্লির লেফটেন্যান্ট গভর্নরকে উদ্দেশ করে আমি একটি চিঠি লিখেছিলাম। তাতে বলেছিলাম আমার অনুপস্থিতিতে স্বাধীনতা দিবসে আমাদের ক্যাবিনেট মন্ত্রী অতিশীকে যেন স্বাধীনতার পতাকা উত্তোলন করতে দেওয়া হয়।

কিন্তু সেই চিঠি ফিরিয়ে দেওয়া হয় এবং আমাকে হুঁশিয়ারি করা হয় যে আমি যদি ফের চিঠি লিখি তবে আমার পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে দেওয়া হবে না।’

যদিও কেজরিওয়ালের মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার সিদ্ধান্তকে কটাক্ষ করেছে বিজেপি।

সর্বশেষ খবর