১৫ জুন, ২০২০ ১৫:০৩

মৃত্যুর মিছিলে কে যে কবে যাই!

আহমেদ আল আমীন

মৃত্যুর মিছিলে কে যে কবে যাই!

আহমেদ আল আমীন

আমরা কিন্তু অনেক দূরে এগিয়ে গিয়েছি; মানে পিছিয়ে গিয়েছি! আমরা এখন হাতের মুঠোয় টাইম বোমা নিয়ে চলছি। বসে আছি টাইম বোমার ওপরে। আর এভাবে প্রতিনিয়ত ধাবিত হচ্ছি, জীবন ছেড়ে, মৃত্যু উপত্যকার দিকে। চারদিকে কালো শোক, পাতা ঝরার শব্দ। 

মৃত্যুকে এখন আর কেউ হয়ত অস্বীকার করে না। মরার আগেই স্বীকার করে মৃত্যুকে। মরতে হবে--একথা জানে সবাই, মানে সবাই। কিন্তু, টাইম বোমার বিষ্ফোরণে সংঘটিত মৃত্যুকে মেনে নেওয়া যায় না। সবচেয়ে ভয়ানক ও বেদনারই বোধহয় সে মৃত্যু। 

কারণ, মৃত্যুর আগেই প্রতিটি মুহুর্তে মরতে হয় সেই মানুষটিকে। মৃত্যুর বেহায়া ভয় ঘনঘোর অমানিশা কিংবা কালো ধোঁয়ার মতো আচ্ছন্ন করে রাখে তাকে। কখন যে বোমাটি ফেটে যায়! পঁচা ডিমের মতো এই বুঝি ফেটে গেলো, টাইম বোমা! জীবনের হাল ছেড়ে দিয়ে, দুরু দুরু বুকে, ক্ষণে ক্ষণে, বোমার বিষ্ফোরণ তথা মৃত্যুর অপেক্ষায় জেগে থাকা; উফ্! সে যে কী ভীষণ যন্ত্রণা! 

এমনই টাইম বোমার ওপরে কিন্তু বসে আছি সবাই। আর বিস্ফোরণও শুরু হয়ে গেছে। তাই মৃত্যুর মিছিলে আছি সবাই। কিন্তু, সেই মিছিলে কে যে কবে যাই, তা বলা যায় না। এ মিছিলের শেষ কোথায়? কত লাশের ওপর দিয়ে এর শেষ সীমানা মিলেছে, কেউ জানে না।  

তাই এখন অন্তত মৃত্যু ভাবনা ভাবতে হবে। মৃত্যুর আগে মৃত্যুকে স্মরণ করাই যুক্তিসংগত ও বুদ্ধিমানের কাজ। মৃত্যু ভাবনা মানুষকে সংযত করে, সংযমী করে তোলে। জোয়ান পাগলা ঘোড়ার মুখে লাগাম টানে কারো মৃত্যু ভাবনা। সকাল, সন্ধ্যা ও রাতের মৃত্যু ভাবনায় কেউ মহান হতে পারে, সত্যিকারের মানুষ হতে পারে। 

তাই মৃত্যুর আগে একবার ভালো হয়ে যান। মানুষের মতো মানুষ হয়ে যান। বগলের নিচে দুটি টাইম বোমা নিয়েও আগের মতো স্বার্থপরতা আর কাউকে মানায় না। দেখুন, বোমা ফাটতে শুরু করেছে, আমরা কিন্তু আওয়াজ পাচ্ছি। 

এই সময়ে স্বার্থপরতা ছেড়ে দিন, পরার্থপরতায় মনোনিবেশ করুন। মৃত্যুর আগে কিছু ভালো কাজ করে যান, যাতে মৃত্যুর পরেও বেঁচে থাকতে পারেন। কিছু কীর্তি রেখে যান মানবের তরে। আর চেষ্টা করুন, টাইম বোমাটিকে বিকল করতে কিংবা একটু দূরে সরিয়ে দিতে, অনেক দূরে। জানেন তো, কীর্তিমানের মৃত্যু নেই। এখন কুকুর-বিড়ালের মতো মরবেন, নাকি মানুষের মতো বীরের মৃত্যুকে বরণ করবেন, সে সিদ্ধান্ত আপনার। 

বিডি প্রতিদিন/আল আমীন

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর