১৬ জুন, ২০২০ ১৩:০৪

মানবতার কাঠগড়ায় চীন!

হাসান ইবনে হামিদ

মানবতার কাঠগড়ায় চীন!

করোনাভাইরাসের প্রথম খোঁজ মিলেছিল চীনে। চীনের উহান থেকে জন্ম নেয়া এই ভাইরাস এখন পৃথিবীর সর্বত্র ছড়িয়ে পড়েছে। ইতালি, স্পেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে তো  চীনের থেকেও ভয়ঙ্কর রূপ ধারণ করেছে করোনা। করোনায় আক্রান্ত হয়ে ইউরোপ ও আমেরিকার জনজীবন একরকম বিধ্বস্ত। ইতিমধ্যে অনেক দেশ তাদের ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চলগুলোকে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য লকডাউন করে দিয়েছে, বলতে গেলে গোটা বিশ্বই এখন লকডাউনে আছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ব্যবসা বাণিজ্য, ধর্মীয় উপাসনালয়সহ সবকিছু এখন বন্ধ।  বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা করোনাভাইরাসের সংক্রমণকে বিশ্বব্যাপী মহামারী হিসেবে আখ্যা দিয়েছে। এদিকে এ রোগের উৎস নিয়ে শুরু হয়েছে নানা তর্ক বিতর্ক। চীনে কীভাবে এই ভাইরাসের উৎপত্তি হলো সে বিষয়ে কোনো নির্দিষ্ট তথ্য কারো কাছে নেই। এই মহামারীর জন্য পশ্চিমা বিশ্ব চীনকে দায়ী করে বিবৃতি দিচ্ছে। জিন এর পরিবর্তে নভেল করোনাভাইরাস একটি ভয়ঙ্কর রাসায়নিক মারণাস্ত্র বলে দাবি করেছেন মার্কিন বিজ্ঞানীরা। এই তর্ক বিতর্কের মাঝেই চীনের নানামুখী উদ্যোগ ও বিতর্কিত কর্মকাণ্ড জনমনে নানা প্রশ্নের জন্ম দিচ্ছে।

গোটা বিশ্ব করোনার সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার জন্য চীনকেই কাঠগড়ায় তোলা হচ্ছে। কেননা চীনের বিরুদ্ধে তথ্য গোপনের অভিযোগের সত্যতা মিলেছে। চীন করোনাভাইরাসে মৃতের সংখ্যা লুকিয়েছে। অপরদিকে চীন বরাবরই এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছে। কিন্তু গত ১৭ এপ্রিল হঠাৎ করেই চীনে একদিনে নতুন আরও ১২৯০ জনের মৃত্যুর খবর জানায় দেশটি। অথচ তখন লকডাউন তুলে নিয়ে মোটামুটি স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরেছে চীন। তাহলে নতুন করে যেখানে অসুস্থই হয়নি দেশটিতে সেখানে একদিনে এতো কীভাবে মারা যাবে! এই প্রশ্নের উত্তরে চীন জানায়, এই মৃতের সংখ্যা আগে যোগ করা হয়নি! দেশটির রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা সিনহুয়া জানায়, নতুন যোগ করা মৃত ব্যক্তিদের সবাই উহানের এবং বেশ কয়েকটি কারণে এটি প্রকাশ করতে দেরি হয়েছে। কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়, মহামারির সময় স্বাস্থ্যকর্মী ও সংস্থাগুলো রোগীদের চিকিৎসায় ব্যস্ত থাকায় তথ্য বিলম্বিত এবং অসম্পূর্ণ ছিল। প্রাদুর্ভাবের সময় চিকিৎসা করতে বিভিন্ন বেসরকারি ক্লিনিক ও প্রতিষ্ঠানকে অনুমতি দেয়া হয়েছিল। তাদের অনেকেই কেন্দ্রীয় নেটওয়ার্কের সঙ্গে যুক্ত হতে পারেনি। ফলে সেখানে আক্রান্ত-মৃতের সংখ্যা পেতে দেরি হয়েছে। নিশ্চয়ই এটি গ্রহণযোগ্য কোন উত্তর হতে পারে না। কেননা তথ্য অসম্পূর্ণ রেখে মৃতের সংখ্যা আগাম কেন জানানো হবে? আবার কেন্দ্রীয় নেটওয়ার্কের সাথে যোগাযোগ না রেখে কীভাবে বেসরকারি হাসপাতাল চলেছে? আর কেন্দ্রই বা কীভাবে বেসরকারি হাসপাতালকে অনুমতি দিয়ে আবার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রেখে মৃতের সংখ্যা আগেভাগে প্রকাশ করবে? চীন মৃতের সংখ্যা লুকোনো নিয়ে যে উত্তর দিয়েছে তা নিঃসন্দেহে নতুন প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। কোন স্বাভাবিক মানুষ এই উত্তরে সন্তুষ্ট হতে পারে না। চীন যে মৃতের সংখ্যা লুকিয়েছে তা তাদের অসংলগ্ন আচরণ ও কার্যক্রমেই পরিষ্কার।

শুধু মৃতের সংখ্যা নয় বরং আরো নানা বিষয়ে চীন তথ্য গোপন করে এসেছে শুরু থেকেই। ফলে বিশ্ব এক ভয়াবহ অবস্থার সম্মুখীন হয়েছে যার ফল ভোগ করছে সাধারণ মানুষ। চীনে করোনা সংক্রমণ গত বছর ডিসেম্বরে শুরু হয়। বছরের শুরুতেই এক জন মারা যান। চীন বিষয়টি চেপে যায়। চীনা সংবাদমাধ্যমকে সেন্সর করা হয়। চিকিৎসকদেরও মুখ বন্ধ করে দেয় চীন। চীন সোশাল মিডিয়াকেও নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসে। কোন ধরণের আন্দোলন যেনো দানা না বাঁধে সে ব্যাপারে সতর্ক ছিলো চীন। কিন্তু ৬ ফেব্রুয়ারি চীনের উহানের ডা. লি ওয়েংলিয়ং-এর মৃত্যুর পরই সেখানকার ভয়াবহ ছবিটা প্রকাশ পায়। ফলে  সাধারণ মানুষ ক্ষোভে ফেটে পড়েন। চীনারাও বুঝতে পারেন কী ভয়ঙ্কর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। দ্য গ্লোব অ্যান্ড মেইল জানাচ্ছে, লকডাউন শেষ হতেই পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন সাধারণ মানুষ। উহানের আকাশ ভরে যায় মরা পোড়ানোর ছাইয়ে। সামাজিক গণমাধ্যমে চীন থেকেই অনেকে মন্তব্য করেন তাদের নিখোঁজ প্রিয়জনের লাশটুকুও তাদের দেখতে দেয়া হয়নি। চীন সমালোচকদের মুখ বন্ধ করার চেষ্টা করেও শেষমেষ ব্যর্থ হয়। একে একে বেরিয়ে আসে ভয়ানক সব তথ্য। ওয়াশিংটন পোস্টের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, চীনে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে প্রায় ৫০ হাজার মানুষ মারা গেছে। দেশটি মৃত ও আক্রান্ত লোকজনের বিষয়ে প্রকৃত তথ্য দেয়নি। চীনের সাময়িকী ক্যাক্সিন এর তথ্য উদ্ধৃত করে প্রতিবেদনে বলা হয়, উহানের হানকাউ নামের একটি শ্মশানে প্রতিদিন ১৯ ঘণ্টা ধরে মৃতদেহ সৎকার হয়েছে। মাত্র দুই দিনে সেখানে ৫ হাজার মানুষের মরদেহ পোড়ানো হয়। তাদের দাবি গত ২৩ মার্চ থেকে মৃতদেহ সৎকার শেষে উহানে শব বা মৃতদেহের ছাই ভরা ৩ হাজার ৫০০ কলস ফিরে এসেছে প্রতিদিন। এই হিসাবে ওয়াশিংটন পোস্ট এর প্রতিবেদনে ৩ এপ্রিল পর্যন্ত ১২ দিনে উহানে ৪২ হাজার মানুষের মৃত্যুর তথ্য উঠে এসেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, চীন সরকার করোনাভাইরাসের কারণে মৃত্যুর যে সংখ্যা দিয়েছে সেটা সঠিক নয়, উহানে মৃত্যুর সংখ্যা এরচেয়ে ১৬ গুণ বেশি। এই সার্বিক বিষয় নিয়ে উন্মুক্ত আলোচনায় চীনের রয়েছে ঘোর আপত্তি। চীন এখন বিষয়টি জাতিসংঘের বৈঠকে তুলতে দিচ্ছে না। জাতিসংঘের ১৫ সদস্যের নিরাপত্তা পরিষদে করোনার বিষয়টি তুলতেই দেয়নি চীন। চীনা দূত ঝাং ঝুনের দাবি, আলোচ্য সূচিতে না থাকায় করোনা নিয়ে আলোচনা করা যাবে না। তাই করোনার মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ও ঠাঁই পেল না জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে।

চীন গোটা বিশ্বকে ভাইরাস ও তার ভয়াবহতা নিয়ে মিথ্যা কথা বলেছে। মৃতের সংখ্যা লুকানোর ফলে এর ভয়াবহতা আঁচ করা যায়নি তাই অন্যান্য দেশে মৃতের সংখ্যা বেড়েছে। পশ্চিমা বিশ্ব বলছে, রোগকে ছড়িয়ে পড়া থেকে আটকানোর চেষ্টা করেনি চীন। চীনের আধিকারিকেরা, গবেষকরা এবং কমিউনিস্ট পার্টির সদস্যরা প্রত্যেকে ভুল বার্তা ছড়িয়েছে। তথ্য চেপে দেওয়া এবং ভাইরাসের ভয়াবহতা বোঝানো হয়নি বলেও অভিযোগ তোলা হয়। প্রতারণার অভিযোগ এনে ইতোমধ্যে কোর্টে মামলাও করা হয়েছে। মার্কিন আইনজীবী ল্যারি ক্লেমন গত ২৪ মার্চ ইউএস জেলা আদালতে চীনের বিরুদ্ধে করোনাভাইরাস তৈরি এবং জীবাণু অস্ত্র হিসাবে বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য ২০ লাখ কোটি মার্কিন ডলার মামলা দায়ের করেছেন। তিনি অভিযোগ করেন যে, এই নভেল করোনাভাইরাস চীন জীবাণু অস্ত্র হিসেবে তৈরি করেছে এবং তা বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে দেওয়ার ইচ্ছা থাকুক বা না থাকুক, যেহেতু চীন জীবাণু অস্ত্র অবৈধ করার চুক্তিতে সম্মতি জানিয়েছে, সেহেতু চীন মার্কিন আইন, আন্তর্জাতিক আইন, চুক্তি এবং নীতি লঙ্ঘন করেছে। এ ধরনের কার্যক্রম গণপ্রজাতন্ত্রী চীন সরকারের রাষ্ট্রীয় পদক্ষেপ হতে পারে না। অভিযোগে আরও বলা হয় যে, পরীক্ষাগারের মধ্যে এ ধরনের প্রাণহানিকর ভাইরাস রাখার উদ্দেশ্য মার্কিন নাগরিক ও অন্যান্য ব্যক্তি এবং চীনের শত্রু বলে মনে করা দেশগুলির জাতিসত্ত্বাকে হত্যা করা। মার্কিন স্টেট মিসৌরিতেও আরেকটি মামলা দায়ের করেন সেখানকার অ্যাটর্নি জেনারেল এরিক স্মিত। মামলায় বলা হয়েছে, একাধিক মৃত্যু, যন্ত্রণা ও বিপুল আর্থিক ক্ষতির জন্য দায়ী চীন। শুধু আমেরিকা নয়, এই ভাইরাসের জন্য চীনকে দায়ী করেছে ফ্রান্স, জার্মানির মত দেশও। জার্মান চান্সেলর অ্যাঞ্জেলা মার্কল জানান, ভাইরাস কোথা থেকে এলো তা নিয়ে চীন তথ্য চেপেছে। চীন গোটা বিশ্বকে করোনাভাইরাস নিয়ে ভুল বোঝাচ্ছে। 

এদিকে নভেল করোনাভাইরাসকে একটি ভয়ঙ্কর রাসায়নিক মারণাস্ত্র বলে দাবি করেছেন বিশ্বের অনেক বিজ্ঞানী। মার্কিন আইনজীবী, রাসায়নিক অস্ত্র বিরোধী সংগঠনের অন্যতম সদস্য প্রফেসর ড. ফ্রান্সিস বয়েল দাবী করেন, কানাডার ল্যাবরেটরি থেকে এক চাইনিজ গবেষক ভাইরাস চুরি করে উহানে অবস্থিত ইনস্টিটিউট অব ভাইরোলজি এর বায়োসেফটি ল্যাবরেটরি লেভেল-৪ এ সংগ্রহ করেন এবং জিনের বদল ঘটিয়ে নভেল করোনাভাইরাস তৈরি করেছেন যা অত্যন্ত প্রাণঘাতী এবং সাধারণ করোনা থেকে অধিক আক্রমণ ক্ষমতা সম্পন্ন। ফ্রান্সিস বয়েলের আশঙ্কা উহানের বায়োসেফটি লেভেল ৪ ল্যাবরেটরিতে অতি গোপনে জৈব-রাসায়নিক মারণাস্ত্র বানানোর প্রক্রিয়া চলছে। তিনি আরো জানান, হুনান সামুদ্রিক খাবার মার্কেটের ব্যাপারটা নিছক চোখে ধুলো দেয়ার অপচেষ্টা মাত্র। অথবা ওই গবেষণাগারের জেনেটিক্যালি মডিফাইড মাইক্রোবস যে কোন উপায় কন্টামিনেশন এর ফলে এই বিপদ ঘটেছে।

ইসরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদ বলছে, করোনাভাইরাস চীনের গোপন জৈব রাসায়নিক অস্ত্রাগার থেকে লিক হয়েছে। আর তার জেরেই বেড়ে চলছে মৃত্যুর মিছিল। ইসরায়েলের সাবেক সামরিক গোয়েন্দা কর্মকর্তা ড্যানি লোহায় করোনাভাইরাসকে চীনের উহান ইনস্টিটিউট অব ভাইরোলজি গবেষণাগারে তৈরি করা হয়েছে বলে জোরালো দাবি জানান। তিনি চীনের জীবাণু যুদ্ধাস্ত্র নিয়ে গবেষণা করেছেন। তিনি বলেন, উক্ত ইনস্টিটিউট বায়োসেফটি ল্যাবরেটরি লেভেল ৪ এ চীনের নতুন নতুন জীবাণু অস্ত্র তৈরি এবং এসব অস্ত্র নিয়ে গোপনে গবেষণা করছে। করোনাভাইরাসের উৎপত্তিস্থল চীনের উহান শহরে যেখান থেকে ভুল করে ভাইরাসটি বাইরে ছড়িয়ে পড়েছে। চীন এ জীবাণু অস্ত্র তৈরি করেছে বিশ্ববাণিজ্য দখলে নিতে ও বিশ্বজুড়ে নিজের কর্তৃত্ব বাড়াতে। এ অভিযোগ শুধু ইসরাইলের সাবেক গোয়েন্দা কর্মকর্তার নয়, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রর প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও এমনটাই বিশ্বাস করেন। তিনি একাধিকবার বলেছেন, করোনাভাইরাস চীনের সৃষ্টি, এজন্য তারাই দায়ী।

বিশ্ব মহামারির এই সময়টাও কাজে লাগাতে চাইছে চীন। নিজেদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ ঝেড়ে ফেলতে করোনা আক্রান্ত দেশগুলিতে চিকিৎসা সরঞ্জাম এবং চিকিৎসকদের পাঠাচ্ছে বেইজিং। এতে তাদের ভাবমূর্তি যেমন উজ্জ্বল হচ্ছে, সেরকমই দানের নামে চিকিৎসা উপকরণ পাঠিয়ে বিভিন্ন দেশের থেকে মোটা টাকা আয়ও করছে চীন সরকার। ইতালি, স্পেন, ফ্রান্সের মতো যে দেশগুলি করোনার ধাক্কায় বিপর্যস্ত, তাদেরকেই মূলত চিকিৎসা সরঞ্জাম সরবরাহ করতে শুরু করেছে চীন। একে সাহায্য বলে দাবি করলেও আদতে চিকিৎসা উপকরণের বিনিময়ে মোটা অর্থের লেনদেন করছে বেইজিং। পাশাপাশি আমেরিকা নিজে যখন করোনা নিয়ে বিপর্যস্ত, সেই সময়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বন্ধু দেশগুলিকে চিকিৎসা উপকরণ পাঠিয়ে কূটনৈতিক সমীকরণেও এগিয়ে থাকতে চাইছে চীন।

তবে চীন যে সরঞ্জাম সরবরাহ করছে, তা মান নিয়ে ইতিমধ্যে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। যেমন করোনায় বিধ্বস্ত স্পেনকে ৩ হাজার ৪৫৬ কোটি টাকার মেডিক্যাল সরঞ্জাম পাঠিয়েছে চীন। যদিও সেই সরঞ্জামের মধ্যে থাকা অনেক কিছুই নিম্নমানের বলে অভিযোগ উঠেছে। স্পেনের স্বাস্থ্যমন্ত্রী স্যালভাডর ইলা নিজে জানিয়েছেন, চীনের থেকে তারা ৯৫০টি ভেন্টিলেটর, ৫৫ লক্ষ টেস্টিং কিট, ১.১ কোটি গ্লাভস এবং ৫০ কোটি মুখের মাস্ক কিনেছেন। কিন্তু ইতিমধ্যে গুণমান খারাপ বলে অভিযোগ তুলে স্পেন ৯ হাজার টেস্টিং কিট চীনকে ফেরত পাঠিয়ে দিয়েছে। পরে চীন স্বীকার করে নেয়, যে সংস্থার থেকে তারা এই কিট কিনেছিল, তাদের করোনা টেস্টিং কিট তৈরির অনুমোদনই ছিল না।

শুধু স্পেন নয় চেক প্রজাতন্ত্রেও যে কিট পাঠিয়েছে চীন সেখানেও বিস্তর অভিযোগ চীনের বিরুদ্ধে। ১৮ মার্চ চেক প্রজাতন্ত্রকে ১ লাখ ৫০ হাজার কোভিড-১৯ পরীক্ষার কিট 'উপহার' হিসেবে পাঠায় চীন। কিন্তু চেক প্রজাতন্ত্রের সরকারি সূত্রে খবর, এর জন্য বেইজিং-এর শোনজেন বায়োইজি টেকনোলজিকে ৫ লাখ ৪৬ হাজার মার্কিন ডলার পেমেন্ট করে। কিন্তু ৮০ শতাংশ কিটেরই গুণমান অতি খারাপ। তাই চীনের কিট নিয়েও প্রশ্ন উঠছে।

করোনা প্রকোপের জন্য পাশ্চাত্যের মিডিয়া চীনকেই কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছে। তবে এটি সত্য, চীনের দায়িত্বজ্ঞানহীনতা ও তথ্য গোপনের জন্যই করোনাভাইরাস গোটা দুনিয়াকে আজ চ্যালেঞ্জের সামনে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। করোনা নিয়ে চীনের ভূমিকায় অসন্তুষ্ট দুনিয়ার বেশিরভাগ দেশ। তাদের বিশ্বাস, মানবসভ্যতার বিরুদ্ধেই দানবীয় যুদ্ধ ঘোষণা করেছে চীন। নানামুখী বিতর্কিত কর্মকাণ্ড সেই বিশ্বাসকে আরও পোক্ত করছে। (তথ্যসূত্র- দেশীয় ও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম) 

লেখক: রাজনৈতিক ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষক

 বিডি প্রতিদিন/ফারজানা

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর