২৭ মার্চ, ২০২১ ১৭:১৩

একুশ শতকে বাংলাদেশের উন্নয়ন সম্ভাবনা ও বিশ্ববাসীর প্রতিক্রিয়া

ড. মোঃ নেয়ামুল ইসলাম

একুশ শতকে বাংলাদেশের উন্নয়ন সম্ভাবনা ও বিশ্ববাসীর প্রতিক্রিয়া

প্রতীকী ছবি

স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে বাংলাদেশে এখন বিশ্ব দরবারে উন্নয়নের রোল মডেল। অর্ধশত শতাব্দী যাত্রায় আমাদের সার্বিক চমকপ্রদ অর্থনৈতিক প্রবদ্ধিতে দৃশ্যমান। কৃষিখাতে বৈচিত্র্য অসামান্য। শিল্প খাতের অগ্রগতিও আশাব্যঞ্জক। অবকাঠামোতে ভালো রকমের উন্নতি হয়েছে। এছাড়াও তাৎপর্যপূর্ণভাবে উন্নয়ন ঘটেছে মানুষের জীবনমানে ও মানব উন্নয়ন সূচকে। ক্ষুদ্র আয়তনের একটি উন্নয়নশীল দেশ হয়েও বাংলাদেশ ইতোমধ্যে সারা বিশ্বের নিকট প্রাকৃতিক দুর্যোগের নিবিড় সমন্বিত ব্যবস্থাপনা, ক্ষুদ্র ঋণের ব্যবহার এবং দারিদ্র্য দূরীকারণে তার ভূমিকা, বৃক্ষরোপণ, সামাজিক ও অর্থনৈতিক সূচকের ইতিবাচক পরিবর্তন প্রভৃতি ক্ষেত্রে অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।
 
সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার আটটি লক্ষ্যের মধ্যে শিক্ষা, শিশু মৃত্যুহার কমানো এবং দারিদ্র্য হ্রাসকরণের ক্ষেত্রে বাংলাদেশে উল্লেখ্যযোগ্য উন্নতি সাধিত হয়েছে। নোবেল বিজয়ী ভারতীয় অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন এর মতে, কিছু কিছু ক্ষেত্রে বিশ্বকে চমকে দেওয়ার মতো সাফল্য আছে বাংলাদেশের। বিশেষত শিক্ষা সুবিধা, নারীর ক্ষমতায়ন, মাতৃ ও শিশু মৃত্যুহার, জন্মহার কমানো, গরিব মানুষের জন্য শৌচাগার ও স্বাস্থ্য সুবিধা প্রদান এবং শিশুদের টিকাদান কার্যক্রম অন্যতম। নারী শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা, প্রত্যাশিত গড় আয়ু প্রভৃতি সূচকে আমরা ভারতকেও ছাড়িয়ে গেছি। সামষ্টিক অর্থনৈতিক নৈপুণ্যের দিক থেকে পাকিস্তানকেও  ছাড়িয়ে গেছি আমরা।
 
ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক আউটলুকের প্রতিবদেনে দেখা যাচ্ছে, ২০২০ সালের বাংলাদেশে দক্ষিণ এশিয়ার সর্বোচ্চ মাথাপিছু জিডিপি ২ হাজার ৬৪ মার্কিন ডলার, ভারতের সম্ভাব্য মাথাপিছু জিডিপি ১ হাজার ৮৭৭ মার্কিন ডলার। জাতিসংঘের অর্থনৈতিক ও সামাজিক কাউন্সিলের মানদণ্ড অনুযায়ী মানব সম্পদ সূচকে ৬৬ প্রয়োজন হলেও বাংলাদেশ অর্জন করেছে ৭২ দশমিক ৯। অর্থনৈতিক ভঙ্গুরতা সূচক হতে হবে ৩২ ভাগ বা এর কম যেখানে বাংলাদেশে রয়েছে ২৪ দশমিক ৮ ভাগ। বৈদেশিক পণ্য রপ্তানি আয়ে অর্জিত হয়েছেন নতুন মাইলফলক। ২০১৮-১৯ অর্থ বছরে পণ্যর রপ্তানি হয়েছে ৪০ বিলিয়ন বা চার হাজার কোটি মার্কিন ডলার। যা এখন পর্যন্ত দেশের সর্বোচ্চ পণ্য রপ্তানি আয়। বাংলাদেশে ২০১৮ সাল থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে ৭.৩ শতাংশ, ২০২৩ থেকে ২০২৮ সালের মধ্যে ৭.০ এবং ২০২৮ থেকে ২০৩৩ সালের মধ্যে ৭.২ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জিত হতে পারে মর্মে আশাবাদ ব্যক্ত করা হয়েছে। এ ধারা অব্যাহত  থাকলে বাংলাদেশের ৩০০ বিলিয়ন ডলারের অর্থনীতি ২০৩০ সালে পৌঁছে যাবে ৭০০ বিলিয়ন ডলারে। জিডিপির হিসাবে বাংলাদেশ এখন বিশ্বের ৪৪ তম বৃহৎ অর্থনীতির দেশ। ক্রয় ক্ষমতার বিবেচনায় ৩৩তম এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির গতি বিবেচনায় বিশ্বের বাংলাদেশ দ্বিতীয় অবস্থানে।
 
“পাকিস্তানের উন্নয়ন যদি ঘটাতে চান, সুইডেনকে না দেখে বাংলাদেশের দিকে তাকান। পাকিস্তানকে বাংলাদেশের মতো বানান।” ইমরান খান প্রধানমন্ত্রী হওয়ায় পর টেলিভিশন টকশোতে এই পরামর্শ  দিয়েছিলেন পাকিস্তানি উন্নয়নকর্মী এবং কলামিস্ট জাইঘাম খান। স্বাধীনতার দীর্ঘ ৫০ বছরে আমাদের অনেক ইতিবাচক দিক আছে। আমরা এ প্রজন্মের কিছু ডাইনামিক উদ্যমী উদ্যোক্তা শ্রেণি পেয়েছি। তারা তাদের উদ্যোক্তা সক্ষমতায় কর্মজীবী নারী ও শ্রমজীবীদের কাজের সংস্থান করেছেন, যারা প্রকৃত পক্ষে গ্রাম থেকে বেরিয়ে এসেছেন। পর্যায়ক্রমে তারা আরও উদ্যোক্তা, বিশেষ করে নারী উদ্যোক্তা তৈরি করেছেন। যাদের অনেকে গ্রাম থেকে উঠে আসছেন এবং তাদের উৎপাদনশীলতাকে বৈশ্বিক প্রতিযোগীদের সমপর্যায়ে উন্নীত করেছেন। আমাদের প্রবাসী শ্রমিকরা বিপুল পরিমাণ রেমিটেন্স প্রেরণ করে প্রতিযোগিতার সামর্থ্য দেখাচ্ছেন। একইভাবে আমরা আমাদের অর্থনীতিতেও বড় ধরনের রেজিলিয়েন্স দেখাতে পেরেছি। কৃষকরা ফসল উৎপাদন আগের চেয়ে উল্লেখযোগ্য মাত্রায় বাড়িয়েছেন এবং এখাতে বহুমুখিতা এনেছেন। গ্রামীণ অর্থনীতির সঙ্গে এসএমইর সংযোগ বিদ্যমান।
 
উল্লেখ করা প্রয়োজন, আমরা কোথায় কোথায় বঙ্গবন্ধুর ভিশন থেকে বিচ্যুত হয়েছি। সেখানে আসলে আমরা কী করতে পারি। প্রথমটি হলো, আমাদের আর্থিকখাতকে শৃঙ্খলায় আনতে হবে অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ও সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণের জন্য। দ্বিতীয়টি হলো, আইনের শাসন ও প্রশাসনিক কার্যকারিতা- আচরণ। আমাদের সবার জন্য বিশ্বাসযোগ্য সমান ন্যায় বিচারের ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। 
 
হংকং সাংহাই ব্যাংকিং করপোরেশনেরর সর্বশেষ গ্লোবাল রিসার্চে বলা হয়েছে, আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে মোট দেশজ উৎপাদনের নিরিখে বিশ্বের ২৬তম বৃহৎ অর্থনীতির দেশ হতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। বর্তমানের বাংলাদেশের অবস্থান যেখানে ৪২তম। দি ওয়ার্ল্ড ইন ২০৩০ আওয়ার লংটার্ম প্রজেকশনস ফর ৭৫ কান্ট্রিজ- শিরোনামের এই রিপোর্টে দেখানো হয়েছে, ২০১৮ সাল থেকে ২০৩০ সালের মধ্যে অবস্থানের দিক থেকে বাংলাদেশ অর্থনীতি ১৬ ধাপে উন্নীত হবে, যা অন্য কোনো দেশের তুলনায় অধিক। অর্থনৈতিক উন্নয়নের এই তালিকায় বাংলাদেশের পরেই ফিলিপাইন, পাকিস্তান, ভিয়েতনাম ও মালয়েশিয়ার নাম এসেছে। প্রবৃদ্ধি অর্জনের দিক থেকে উন্নত দেশ নরওয়ের চেয়ে বাংলাদেশের অধিক সম্ভাবনা রয়েছে বলে এই প্রতিবেদেনে উল্লেখ করা হয়েছে।
 
এইচএসবিসির দীর্ঘ মেয়াদী উন্নয়ন মডেলে দেখানো হয়েছে, ২০৩০ সাল পর্যন্ত প্রতিবছর বাংলাদেশের অর্থনীতিতে গড়ে ৭.১ শতাংশ হারে প্রবৃদ্ধি অর্জিত হবে। যা রিপোর্টে উল্লিখিত ৭৫টি দেশের মধ্যে সর্বোচ্চ। এ বছরে এডিবি বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি হার দেখিয়েছে ৮.১৩ শতাংশ, যা এশিয়া প্যাসিফিক দেশগুলোর মধ্যে সর্বোচ্চ। স্পেকট্যাটোর তথ্যে, ২০০৯ থেকে ২০১৯ সালের পর্যালোচনা বলছে, এই সময়ে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি হার ১৮৮ শতাংশ। একই সময়ে ইথিওপিয়া ১৮০, চীন ১৭৭, ভারত ১২১ ও ফ্রান্সের প্রবৃদ্ধির হার বৃদ্ধি পেয়েছে ৪২.১ শতাংশ।
 
বর্তমান সময়ে দেশে অন্তত ১০-১২টি মেগা প্রকল্প চলমান রয়েছে। পদ্মা সেতুর কাজ ৮২ শতাংশ, কর্ণফুলী ট্যানেল ৬২ শতাংশ, ঢাকা বিমান বন্দর থেকে ৪৬.৭৩ কিলোমিটার এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে ও উত্তরা-মতিঝিল মেট্রোরেলের কাজ ৬০ শতাংশের ঊর্ধ্বে সমাপ্ত হয়েছে। ২০২২-২৩ সালের মধ্যে এ দুটো মেগা প্রকল্পের কাজ শেষ হবে বলে আশা করা যায়। জাপানের সহায়তায় মেঘনা-গোমতী নদীর ওপর আগের সেতুর তুলনায় প্রশস্ত আরও একটি নতুন সেতু নির্মাণ করা হয়েছে। এছাড়া দেশের বিভিন্ন নদীর ওপর ১৫০০ মিটার কম দৈর্ঘ্যের অসংখ্য সেতু নির্মাণ করে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন ঘটানো হয়েছে। কিশোরগঞ্জ জেলার হাওড় এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নকল্পে ইটনা-মিঠামইন-অষ্ট্রগাম ৪০ কিলোমিটার সড়ক নির্মাণ করা হয়েছে। কিশোরগঞ্জের সঙ্গে মিঠামইনের সংযোগের জন্য প্রায় ১২ কিলোমিটার এলিভেটেড সড়ক নির্মাণের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। পদ্মা সেতু চালুর পর ঢাকা শহরের ওপর যানবাহনের চাপ কমানোর জন্য ঢাকা ইস্টওয়েস্ট এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে ঢাকা-আরিচা ও ঢাকা-মাওয়া মহাসড়ককে যুক্ত করে ঢাকা-চট্টগ্রাম সড়ক পর্যন্ত নিয়ে যাওয়া হবে। পায়রা সমুদ্র বন্দর, মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্র বন্দর ও মাতার বাড়ি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র, রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রসহ আরও অন্যান্য মেগা প্রকল্প চলমান থাকায় করোনাকালে কর্মসংস্থান ও অর্থনীতিতে ইতিবাচক সুবাতাস দিচ্ছে। 
 
বিশ্ব অর্থনেতিক ফোরামের ইনক্লুসিভ ডেভেলমেন্ট ইনডেক্স আইডিআই ২০১৮ র‌্যাংকিংয়ে দেখা যায় অন্তর্ভূক্তিমূলক উন্নয়ন সূচকে ভারতের চেয়ে ২৮ ধাপ এবং পাকিস্তানের চেয়ে ১৩ ধাপ এগিয়েছে বাংলাদেশ। বিশ্বের ১০৩ দেশের বার্ষিক অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বিচার করে এ সংক্রান্ত প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়েছে। অর্থনীতির তিনটি মানদণ্ড প্রবৃদ্ধি উন্নয়ন; অন্তর্ভূক্তিকরণ এবং আন্তঃ প্রজন্মসমতা প্রাকৃতিক ও আর্থিক সম্পদের টেকসই ব্যবস্থাপনার ভিত্তিতে প্রতিবেদনটি তৈরি করে তারা। 
 
অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি উন্নয়নের বর্তমান ধারা অব্যাহত থাকলে ২০২৪ সালের মধ্যে বাংলাদেশ পৌঁছে যাবে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে। শুধু যে মানুষের আয় বেড়েছে তা নয়, বেড়েছে মানুষের গড় আয়ু। রেকর্ড পরিমাণ বেড়েছে বাজেটের আকার। বাজেট বাস্তবায়নে পরনির্ভরতাও কমছে। অবকাঠামোগত উন্নয়ন হচ্ছে দৃশ্যমান। বড় বড় প্রকল্প বাস্তবাযনে বাংলাদেশের সক্ষমতাও বাড়ছে। পদ্মা সেতুর মতো মেগা প্রজেক্ট নিজেদের টাকায় করার মতো দুঃসাহস এখন বাংলাদেশ দেখাতে পারে। আকাশে উড়িয়েছে নিজস্ব স্যাটেলাইট। নিজস্ব স্যাটেলাইট থেকে প্রাপ্ত ছবি দিয়েই চলছে দেশের সম্প্রচার কার্যক্রম। তথ্য-প্রযুক্তি খাতেও বাংলাদেশের অগ্রগতি ঈর্ষণীয়। গত একদশকে শুধু তথ্য-প্রযুক্তি খাতেই কর্মসংস্থান হয়েছে প্রায় ১০ লাখ মানুষের। আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে আরও ১০ লাখ লোকের কর্মসংস্থান এ খাতে হবে বলে আশা করা হচ্ছে। কর্মসংস্থান বৃদ্ধি পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে কমে আসছে দারিদ্র্য। জিডিপির হিসেবে বাংলাদেশ এখন বিশ্বের ৪৪তম বৃহৎ অর্থনীতির দেশ। ক্রয় ক্ষমতার বিবেচনায় ৩৩তম। আর অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির গতি বিবেচনায় বিশ্বে বাংলাদেশ এখন দ্বিতীয় অবস্থানে। 
 
 
বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতি এখন বিশ্বের অনেক দেশের জন্য উদাহরণ। অর্থনীতি ও আর্থ-সামাজিক, বেশিরভাগ সূচকে বাংলাদেশ ছাড়িয়ে গেছে দক্ষিণ এশিয়ার প্রায় সব দেশকে। নিম্ন আয়ের দেশগুলোকে ছাড়িয়েছে তা অনেক আগেই। সম্প্রতি আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে বলেছে, তা অত্যন্ত উল্লেখযোগ্য। সবাইকে অন্তর্ভুক্ত করে প্রবৃদ্ধি অর্জনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ এখন উদাহরণ দেয়ার মতো একটি দেশ। বিশ্বব্যাংকের হিসাবেও বাংলাদেশের এ অগ্রগতিকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে বিশেষভাবে। সম্প্রতি তারা একটি টেবিলে উপস্থাপন করে দেখিয়েছে উন্নয়নের প্রধান ১২টি সূচকের ১০টিতেই বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়া ও অন্যান্য নিম্ন আয়ের দেশের তুলনায় এগিয়ে যাচ্ছে দ্রুত। সম্মিলিত প্রয়াসে ক্ষুধা, দারিদ্র্য ও শোষণমুক্ত হবে আমাদের সোনার বাংলাদেশ, এ হোক স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে সকলের অঙ্গীকার।          
 
লেখক : অতিরিক্ত কমিশনার, কাস্টম হাউস, বেনাপোল
 
       
 বিডি প্রতিদিন/ফারজানা

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর