পদ্মা সেতু আমাদের জাতীয় সক্ষমতা ও দৃঢ়তার প্রতীক। ইস্পাত কঠিন আত্মবিশ্বাস ও অনঢ় মনোবলের স্মারক বহন করে। এটি আমাদের আবেগ, ভালোবাসারও স্থান বটে। পদ্মা সেতু আমাদের প্রেম।
এ রকম একটি সেতুর অভাবে দেশে কী হতে পারে? কী ঘটতে পারে? জনজীবনে কী কী প্রভাব ফেলতে পারে, সেটি আমরা দেখেছি। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, পরিবহন, যাতায়াত, পর্যটন ও ভ্রমণের পাশাপাশি অর্থনীতিতেও এর নেতিবাচক প্রভাব আমরা জীবন দিয়ে দেখেছি আবহমান কাল ধরে। যুগ যুগ ধরে সেই তিক্ত অভিজ্ঞতা আমাদের রয়েছে।
দুর্গম গিরি, কান্তার মরু, দুস্তর পারাবার পেরিয়ে অবশেষে পদ্মা সেতু আমাদের হলো। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা পদ্মায় একটি সেতু পেলাম। বলা হচ্ছে, বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের একুশটি জেলায় প্রভূত প্রভাব ফেলবে পদ্মা সেতু। আর এরই সার্বিক ফল পাবে সারা দেশ।
সেই সেতু, মানে পদ্মা সেতু তো আমাদের কাছে সাত রাজার ধন হিসেবে এসেছে। দিন বদলের চেরাগ হাতে আলাদিনের দৈত্য। একে আমাদের সেইভাবেই গ্রহণ ও রক্ষণাবেক্ষণ করতে হবে। কারণ, সম্ভাব্য একশ বছরের স্থায়ীত্বসম্পন্ন এই সেতুটির কারণে বদলে যাবে দেশের চেহারা।
কিন্তু, পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পর সচেতন শ্রেণির মানুষ হিসেবে আমরা উদ্বিগ্ন। লজ্জিতও। দেখা যাচ্ছে,
পদ্মা সেতুকে টিকটকের শুটিং স্পট বানিয়ে ফেলা হচ্ছে। টিকটকাররা এর নাট-বল্টু খুলে দৃঢ়তা, যোগ্যতা ও সক্ষমতা পরীক্ষা করছে। গণহারে সেলফি তোলা হচ্ছে। এমনকি ইতরবিশেষ মূত্র বিসর্জনের কাজও সারছে সেতুতে! মানে আমাদের বুকে! কিছু মানুষ কোনো দিন মানুষ হয় না। এসব তারই প্রমাণ বহন করে।
একটি কর্তৃপক্ষ হিসেবে সরকার সেতু করেছে। এর রক্ষণাবেক্ষণও সরকারি কর্তৃপক্ষ করবে। কিন্তু, এই সেতু ব্যবহার করবে কারা? মূলত জনগণ। তাই জনগণের সচেতনতা, সংশ্লিষ্টতা ছাড়া পদ্মা সেতু রক্ষণাবেক্ষণ করা এককভাবে সম্ভব হবে না। তাই পদ্মা সেতুকে ভালোবাসতে হবে। এর পবিত্রতা রক্ষা করতে হবে সবারই।