মঙ্গলবার, ২০ জুন, ২০২৩ ০০:০০ টা

পণ্যের মান ও বিক্রয়োত্তর সেবায় র‌্যাংগস সেরা

জয়শ্রী ভাদুড়ী

পণ্যের মান ও বিক্রয়োত্তর সেবায় র‌্যাংগস সেরা

মোহাম্মদ জানে আলম,সিনিয়র জেনারেল ম্যানেজার, র‌্যাংগ্স ইলেকট্রনিক্স লিমিটেড

আগামী বছর থেকে আমরা ফ্রিজ দেশেই উৎপাদন শুরু করব এবং বাজারজাত করব। ইতোমধ্যেই সিলেটের হাইটেক পার্কে ৭০ একর জায়গা নিয়ে আমাদের নিজস্ব কোম্পানি গড়ে উঠছে

র‌্যাংগস ইলেকট্রনিক্স লিমিটেডের সিনিয়র জেনারেল ম্যানেজার মোহাম্মদ জানে আলম বলেন, শতভাগ বিদ্যুতায়নের ফলে দেশে রেফ্রিজারেটর শিল্পের বাজার বেড়েছে। শহর, নগর, মফস্বলে মানুষের প্রয়োজনীয় চাহিদার তালিকায় যুক্ত হয়েছে রেফ্রিজারেটর। প্রতি বছর গড়ে প্রায় ৪০ লাখ রেফ্রিজারেটর বিক্রি হয় এই দেশে। আমরা রেফ্রিজারেটরের গুণগত মান বাজায় রাখতে উৎকৃষ্ট কাঁচামাল, দীর্ঘস্থায়ী এবং পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তির দিকে নজর দিয়ে থাকি। বিক্রয়োত্তর সেবায় র‌্যাংগস ইলেকট্রনিক্স সব সময়ই সেরা।

প্রতিষ্ঠানের শুরুর গল্প বলতে গিয়ে তিনি বলেন, র‌্যাংগ্স ইলেকট্রনিক্স লিমিটেড গত ৪০ বছর ধরে দেশে বিভিন্ন ইলেকট্রনিক্স পণ্য বাজারজাত করে আসছে। মূলত এই বাজারে সবাই সনি র‌্যাংগ্স হিসেবেই আমাদের চেনে। কারণ ১৯৮৪ সাল থেকেই জাপানের বিখ্যাত সনি কোম্পানির পণ্য বাজারজাত করে আসছি। পরবর্তীতে আমাদের নিজস্ব ব্র্যান্ড র‌্যাংগ্স যুক্ত হয়েছে। সেটা ১৯৮৬ সাল থেকে ধাপে ধাপে দেশে বাজারে বিভিন্ন অডিও, ভিডিও ও ফ্রিজের মতো নানা পণ্য গ্রাহকদের নিকট সরবরাহ করছে। দেশে সর্বপ্রথম র‌্যাংগ্সই শো-রুমের ধারণার প্রবর্তন করে। পরবর্তী অন্যান্য কোম্পানি সেই পথ ধরে কাজ করছে। বর্তমানে আমরা নতুন কয়েকটি পণ্য নিয়ে কাজ করছি। যার মধ্যে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের বিখ্যাত কেলভিনেটর ও ওয়ার্লপুল ব্র্যান্ড। এ ছাড়াও আমরা এলজি কোম্পানির সঙ্গে যুক্ত আছি। মূলত এখন আমরা কেলভিনেটর, র‌্যাংগ্স ও এলজি ফ্রিজ বাজারজাত করছি।

র‌্যাংগস ইলেকট্রনিক্স লিমিটেডের সিনিয়র জেনারেল ম্যানেজার মোহাম্মদ জানে আলম বলেন, এ বছর বৈশ্বিক মন্দার করণে আমাদের আমদানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হয়েছে। কেননা গত বছরের শেষ থেকেই বিশ্বে যে ধরনের ডলার ঘাটতি দেখা দিয়েছিল সেটার প্রভাবেই সময়মতো এলসি খুলতে সমস্যা হয়। ফলে চাহিদামতো পণ্য আনতে পারিনি। এমনকি কোনো কোনো পণ্যের দাম ২০-২৫ শতাংশ বেড়ে গেছে। ক্রেতা আগ্রহ বাড়াতে আমরা পণ্যের মান, ডিজাইন এবং সেবায় জোর দিয়েছি। আমাদের রেফ্রিজারেটরে নতুন ফিচারের পাশাপাশি নানা সুবিধা যুক্ত করে আকর্ষণীয় করে তৈরি করার চেষ্টা করছি। বর্তমানে ক্রেতাদের ননফ্রস্ট রেফ্রিজারেটরের প্রতি চাহিদা বাড়ছে। তারা চায় ফ্রিজ থেকে কোনো জিনিস বের করেই রান্না করতে। এক্ষেত্রে ফ্রস্ট রেফ্রিজারেটরে কিছুটা সময় লাগে। তাই সেদিকে নজর দিয়ে আমরা ননফ্রস্ট ফ্রিজের গুণগত মান বৃদ্ধি ও বাজারজাতে নজর দিচ্ছি। আমরা লক্ষ্য করেছি, ক্রেতারা অপেক্ষাকৃত বড় ফ্রিজ কিনতেই স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে। সেটা অনেকটা আলমারির মতো হবে। এমনকি ভিতরের নকশা গোছানো হবে। যাতে সহজে একই তাকে বিভিন্ন জিনিস রাখা যায়। তবে ফ্রিজকে শুধু আকর্ষণীয় করাই আমাদের লক্ষ্য নয়, গুণে-মানে ও দামে সবার সেরা রেফ্রিজারেটরটি আমরা ক্রেতার হাতে তুলে দিতে চাই। আমরা ইলেকট্রলাক্সের পণ্য নিয়ে কাজ করছি। আমাদের কাছে কেলভিনেটরের ডাবল ডোর, সিঙ্গেল ডোরের দারুণ কিছু রেফ্রিজারেটর রয়েছে। এগুলো বিদেশি ভালো মানের ব্র্যান্ড। আমরা ওয়ার্লপুলের পণ্য সরবরাহ করছি। এসব রেফ্রিজারেটর পরিবেশবান্ধব ও টেকসই হবে।

রেফ্রিজারেটরের বাজার সম্পর্কে তিনি বলেন, আগামী বছর থেকে আমরা ফ্রিজ দেশেই উৎপাদন শুরু করব এবং বাজারজাত করব। ইতোমধ্যেই সিলেটের হাইটেক পার্কে ৭০ একর জায়গা নিয়ে আমাদের নিজস্ব কোম্পানি গড়ে উঠছে। এর সব কাজ শেষ হয়েছে। এখানে আমরা কেলভিনেটর ও র‌্যাংগ্স ফ্রিজ নিয়ে কাজ করব। তাছাড়া আমেরিকার কেলভিনেটর ফ্রিজের কোম্পানি ইলেকট্রলাক্স চাইছে এ দেশে তাদের একটা ইউনিট খুলতে। তাহলে তারা ভারতের সেভেন সিস্টার রাজ্যসহ নেপাল ও অন্যান্য দেশে সহজে ফ্রিজগুলো সরবরাহ করতে পারবে। ২০০০ সালের আগে বাজারে ৯০ ভাগ ছিল বিদেশি ফ্রিজ। কিন্তু ২০১৩ সালে সরকার এই খাতে বিনিয়োগ ও সুদৃষ্টি দেওয়ায় দেশে বিভিন্ন কোম্পানি গড়ে উঠেছে। এমনকি ২০১৯ সালে দেশের ৮৫ শতাংশ দেশীয় ফ্রিজ বাজার দখল করেছে। এটার অন্যতম কারণ বিদ্যুতায়ন। এ কারণে দিন দিন মানুষের ফ্রিজের চাহিদা বাড়ছে। তবে করোনার কারণে এই বাজারে কিছুটা ছন্দপতন ঘটেছে। একই সঙ্গে বিশ্ববাজারে ডলারের দাম বৃদ্ধি সেটাকে আরও প্রভাবিত করেছে। তবে সামনের বছর এই সমস্যা কাটিয়ে ১০-১৫ শতাংশ বিক্রি বৃদ্ধি পাবে বলে আমরা আশাবাদী। ঈদ উপলক্ষে গ্রাহকদের জন্য কোনো অফার থাকছে কি না জানতে চাইলে মোহাম্মদ জানে আলম বলেন, ঈদ কেন্দ্র করে গ্রাহকদের জন্য বিশাল মূল্যছাড় ও  উপহার। র‌্যাংগ্স ফ্রিজ কিনলে রয়েছে আকর্ষণীয় মূল্যছাড় এবং উপহার। কেলভিনেটরের ডাবল ডোর ফ্রিজের সঙ্গে একটি ওয়াশিং মেশিন ফ্রি দেওয়া হচ্ছে।

 

 

সর্বশেষ খবর