সোমবার, ২৭ মে, ২০২৪ ০০:০০ টা
সাক্ষাৎকার

যুগোপযোগী পণ্য ক্রেতার নাগালে আনতে আমরা বদ্ধপরিকর

মোহাম্মদ জানে আলম- সিনিয়র জেনারেল ম্যানেজার র‌্যাংগ্‌স ইলেকট্রনিক্স লিমিটেড

নিজস্ব প্রতিবেদক

যুগোপযোগী পণ্য ক্রেতার নাগালে আনতে আমরা বদ্ধপরিকর

র‌্যাংগ্‌স ইলেকট্রনিক্স লিমিটেডের সিনিয়র জেনারেল ম্যানেজার মোহাম্মদ জানে আলম বলেন, দেশের টেলিভিশন বাজারে কালার টেলিভিশনের অন্য মাত্রা যোগ করেছে র‌্যাংগ্‌স ইলেকট্রনিক্স লিমিটেড। সনি করপোরেশন, জাপানের তত্ত্বাবধানে আমাদের টিভি অ্যাসেম্বল ফ্যাক্টরি স্থাপন হয়। ১৯৮৭ সালে সনির ওসাকা, জাপান ফ্যাক্টরির তৈরি ১২ ইঞ্চি সাদাকালো টিভির সংযোজনের মাধ্যমে সংযোজনকারী হিসেবে যাত্রা করে র‌্যাংগ্‌স ইলেকট্রনিক্স লিমিটেড। নতুন প্রযুক্তির ব্যবহার নিশ্চিত করে যুগোপযোগী পণ্য ক্রেতার নাগালে আনতে আমরা বদ্ধপরিকর।

তিনি আরও বলেন, বর্তমানে ৪০টির বেশি এলইডি টিভি মডেল আমরা উৎপাদন ও সংযোজন করছি। র‌্যাংগ্‌স ইলেকট্রনিক্স লিমিটেডের সঙ্গে বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষের স্বাক্ষরিত চুক্তির আওতায় সিলেটে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব হাইটেক পার্কে ৩২ একর জমি বরাদ্দ পেয়েছে র‌্যাংগ্স। এ বছরের ডিসেম্বরে এ হাইটেক পার্কে উৎপাদন শুরু হচ্ছে এবং ২০২৫ সাল নাগাদ পূর্ণ উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে কাজ এগিয়ে যাচ্ছে। এখানে উৎপাদন লাইন আপের মধ্যে টিভি অন্যতম। যার বার্ষিক উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ৫ লাখের বেশি। আমাদের রয়েছে নিজস্ব প্রোডাক্ট, রিসার্চ ডেভেলপমেন্ট টিম। রয়েছে নিজস্ব ট্রেনিং ও আফটার সেলস সার্ভিস ডিপার্টমেন্ট। বর্তমানে আমাদের র‌্যাংগ্স ব্র্যান্ডে যুক্ত হয়েছে গুগল টিভি। বাংলাদেশের বাজারে নিয়ে এসেছি ১০০ ইঞ্চি ৪ক ইউএইচডি এলইডি টিভি। ভবিষ্যতে এ লাইন আপে কিউএলইডি, মিনিএলইডি এবং ওএলইডি যুক্ত করার প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। আমরা নতুন ডিজাইন নিশ্চিত করার চেষ্টা করি। যেখানে কাস্টমারের পছন্দসই ডিজাইন হচ্ছে ফ্রেমলেস এলইডি টিভি এবং আমাদের সব মডেলই ফ্রেমলেস এলইডি টিভি।

মোহাম্মদ জানে আলম বলেন, দেশের মোট ইলেকট্রনিকস বাজারের প্রায় ৩৫% টেলিভিশনের। যার বর্তমান বাজার প্রায় ৪০০ মিলিয়ন ডলারের। এর বার্ষিক প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১২-১৫%। ক্রিকেট-ফুটবল বিশ্বকাপ কেন্দ্র করে এটা আরও বাড়ে। দেশে করোনার পর থেকে এ বাজার পরিস্থিতিতে আমরা দেখেছি, হোম এন্টারটেইনমেন্ট পণ্যের চাহিদা উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। এর মধ্যে প্রাতিষ্ঠানিক ক্রেতাদের চাহিদা উল্লেখ্যযোগ্য। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ডিজিটাল এডুকেশন প্রজেক্ট, করপোরেট হাউসের ডিজিটাল মিটিং রুমের চাহিদা বেড়েছে। এ ক্ষেত্রে দেশি ব্র্যান্ডের চাহিদাই বেশি। মাত্র ১১-১২ বছর আগে যখন বাংলাদেশ সম্পূর্ণভাবে আমদানির ওপর নির্ভরশীল ছিল, সেখানে টেলিভিশনের দেশি সংযোজনকারী ব্র্যান্ডগুলোর এখন প্রায় ৯০% শেয়ার রয়েছে।

তিনি আরও বলেন, ক্রিকেট বিশ্বকাপের সময় টিভির বাজার সাধারণ চাহিদার চেয়ে ৩০-৪০% বাড়ে। ফুটবল বিশকাপের সময় প্রায় দ্বিগুণ হয়ে যায়। ক্রিকেট বিশ্বকাপ কিংবা ফুটবল বিশ্বকাপের মতো বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের খেলাগুলোয় এখনো টিভির চাহিদা উল্লেখযোগ্য হারে বাড়ে না। দেশের ক্রিকেটপ্রেমীদের কাছে বিপিএলের উন্মাদনা আরও বাড়লে ভবিষ্যতে টিভির চাহিদায় উল্লেখযোগ্য অবদান আসবে বলে আমি মনে করি। দেশের ইলেকট্রনিকস বাজারের প্রায় ৬৫% অংশীদার দেশি ব্র্যান্ডের ইলেকট্রনিকস কোম্পানিগুলো। দেশি ব্র্যান্ডের মধ্যে হাতেগোনা দু-তিনটি ব্র্যান্ডই শুধু টিভির উৎপাদন করছে। বাকিরা সংযোজনকারী হিসেবে কাজ করছে। এখন বেসিক, স্মার্ট, অ্যান্ড্রয়েড ইত্যাদি টিভি উৎপাদন হচ্ছে। আমরা নতুন প্রযুক্তিসম্পন্ন নতুন নতুন মডেলের সনি, এলজি ও র‌্যাংগ্স এলইডি টিভি বাজারজাতকরণের পাশাপাশি মূল্য ক্রেতার নাগালের মধ্যে রাখার চেষ্টা করছি। আমরা টিভির পাশাপাশি বাজারে এনেছি র‌্যাংগ্স ব্র্যান্ডের এলইডি ইন্টারেক্টিভ বোর্ড। তা ছাড়া অফিশিয়াল ওয়ারেন্টি নিশ্চিত করতে আমাদের রয়েছে দেশব্যাপী ৬০-এর বেশি সার্ভিস সেন্টার। প্রতিযোগিতায় এগিয়ে থাকতে নিত্যনতুন টেকনোলজি, ডিজাইন ও দাম ক্রেতার নাগালে রাখার চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। একসময় আমাদের দেশের ক্রেতারা বিদেশি ব্র্যান্ডের প্রতি নির্ভরশীল ছিলেন। কিন্তু বর্তমানে দেশি ব্র্যান্ডের সময়োপযোগী ও প্রযুক্তিগত উৎকর্ষের কারণে বাজারে ক্রেতার কাছে জনপ্রিয়তা পাচ্ছে। সরকারকে টেলিভিশন শিল্পবান্ধব আমদানি নীতি বজায় রাখতে হবে। শুল্কমুক্ত খুচরা যন্ত্রাংশ আমদানি নীতি দেশি উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের জন্য বিশেষ প্রণোদনাস্বরূপ। এ ছাড়া সংযোজনকারী প্রতিষ্ঠানের জন্য শুল্কের হার কমানো যেতে পারে।

সর্বশেষ খবর