২৭ মার্চ, ২০২২ ১৩:৫৮

জাতিসংঘে বাংলাদেশ মিশনে স্বাধীনতা দিবস পালন

যুক্তরাষ্ট্র প্রতিনিধি

জাতিসংঘে বাংলাদেশ মিশনে স্বাধীনতা দিবস পালন

টানা দু’বছর পর জাতিসংঘে বাংলাদেশ মিশনে ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবসের সমাবেশ হলো সশরীরে উপস্থিতির মাধ্যমে। করোনা থেকে স্বাভাবিক জীবনে ফেরার প্রশান্তি নিয়ে সকল প্রবাসী উন্নয়নের জয়গানে মুখরিত হয়ে বাসায় ফিরেছেন। স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠান উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু মিলনায়তন কূটনীতিক আর প্রবাসীদের মিলনকেন্দ্রে পরিণত হয়েছিল। বীর মুক্তিযোদ্ধাগণকে এ সময় বিশেষভাবে স্বাগত জানান রাষ্ট্রদূত ও স্থায়ী প্রতিনিধি রাবাব ফাতিমা। সাথে ছিলেন মিশনের সর্বস্তরের কর্মকর্তারাও। প্রধান অতিথি ছিলেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেছা ইন্দিরা এমপি। 

প্রদত্ত বক্তব্যে প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেছা ইন্দিরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ অভূতপূর্ব অগ্রগতি ও অসামান্য সাফল্যগাঁথা তুলে ধরেন। প্রতিমন্ত্রীর বক্তব্যে উঠে আসে কৃষি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, যোগাযোগ, অবকাঠামো, বিদ্যুৎ, শিল্প, ব্যবসা-বানিজ্য, নারীর ক্ষমতায়ন, যুব উন্নয়ন, কর্মসংস্থান, বৈদেশিক বিনিয়োগ, ও পররাষ্ট্রসহ বিভিন্ন সেক্টরে বাংলাদেশের অদম্য অগ্রযাত্রার বিভিন্ন দিক। মাথাপিছু আয়, জিডিপির উর্দ্ধমূখী প্রবৃদ্ধি, দারিদ্র্য বিমোচন, গড় আয়ু বৃদ্ধিসহ বিভিন্ন উন্নয়ন সূচক তুলে ধরেন তিনি। পাকিস্তানসহ প্রতিবেশী দেশসমূহের সাথে বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রার তুলনামূলক তথ্য তুলে ধরে প্রতিমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের এই সাফল্যের পিছনে রয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী পরিকল্পনা গ্রহণ ও তার বাস্তবায়ন। সাফল্যের স্বীকৃতি স্বরূপ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে সকল আন্তর্জাতিক পুরস্কার পেয়েছেন তা উল্লেখ করেন প্রতিমন্ত্রী। আর বাংলাদেশের অর্থনীতি করোনাকালেও চাঙ্গা থাকার প্রসঙ্গে প্রবাসীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে। 

জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা এ সময় বলেন, স্বাধীনতার পাঁচ দশকে বাংলাদেশ আজ আন্তর্জাতিক অঙ্গনে একটি গুরুত্বপূর্ণ ও বিশ্বস্ত নাম। আজ বিশ্ব শান্তিরক্ষা, জলবায়ু পরিবর্তন, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য, নারীর ক্ষমতায়নসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে নেতৃত্বস্থানীয় ভূমিকা পালন করছে। জাতিসংঘ সদর দপ্তরে বাংলাদেশ এই মুহুর্তে ইউএন উইমেন নির্বাহী বোর্ড, পিসবিল্ডিং কমিশন, অভিবাসনসহ বেশ কিছু সংস্থা ও প্রক্রিয়ার নেতৃত্ব প্রদান করছে। এছাড়া বাংলাদেশ জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে অনেকগুলো গুরুত্বপূর্ণ রেজ্যুলেশন পেশ করার ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে। রাষ্ট্রদূত ফাতিমা বলেন, জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশ এখন সর্বোচ্চ শান্তিরক্ষী প্রেরণকারী দেশ। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের বলিষ্ঠ পদচারনার স্বীকৃতি স্বরূপ প্রধানমন্ত্রী উল্লেখযোগ্যসংখ্যক আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি ও পুরস্কার লাভ করেছেন। গত সেপ্টেম্বরে প্রধানমন্ত্রী জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে অংশগ্রহণকালে এসডিজি বাস্তবায়নে অসামান্য সাফল্যের স্বীকৃতিস্বরূপ জাতিসংঘের এসডিএসএন ‘এসডিজি প্রোগ্রেস অ্যাওয়ার্ড’ প্রদান করেছে। এছাড়া প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক জাতিসংঘ প্রাঙ্গণের বাগানে জাতির পিতার নামে একটি বেঞ্চ ও একটি গাছ রোপণ করেছেন মর্মে উল্লেখ করেন তিনি যা জাতিসংঘ সদর দপ্তরে কোন রাজনৈতিক নেতার নামে বেঞ্চ স্থাপন ও গাছ রোপণের প্রথম ঘটনা।

আগত সকলে লাল-সবুজের পতাকা বহুজাতিক এ সমাজে আরো উজ্জ্বল করতে পারস্পরিক সহযোগী হয়ে কাজের সংকল্প ব্যক্ত করেন বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার প্রতিনিধিত্বকারি প্রবাসীরা। বীর মুক্তিযোদ্ধাগণের মধ্যে ছিলেন গোলাম মোস্তফা খান মিরাজ, রাশেদ আহমেদ, লাবলু আনসার, আব্দুল মুকিত চৌধুরী, শফিকউল ইসলাম, ড. এম এ বাতেন প্রমুখ। নিউইয়র্কে বাংলাদেশের কন্সাল জেনারেল ড. মনিরুল ইসলাম, ডেপুটি কন্সাল জেনারেল এস এম নাজমুল হাসান ছাড়াও  বিশিষ্টজনদের মধ্যে ছিলেন যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমান এবং ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সামাদ আজাদ, আওয়ামী লীগ নেতা ড. প্রদীপ কর, যুক্তরাষ্ট্র বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের সেক্রেটারি ও নিউইয়র্ক মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আব্দুল কাদের মিয়া, বঙ্গবন্ধু আইনজীবী পরিষদের নেতা মোর্শেদা জামান, যুক্তরাষ্ট্র মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মমতাজ শাহনাজ, শহীদ পরিবারের সন্তান হাসান আব্দুল্লাহ, মাসুদুল হাসান, বহ্নিশিখা সঙ্গীত নিকেতনের সবিতা দাস প্রমুখ। এক পর্যায়ে সকলকে সাথে নিয়ে স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযাপন উপলক্ষ্যে কেক কাটেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেছা ইন্দিরা ও রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা। এর আগে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ অর্পণ করা হয়।

বিডি প্রতিদিন/এএ

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর