১৭ এপ্রিল, ২০২২ ০৯:২৬

কানাডায় বর্ণিল আয়োজনে বাংলা বর্ষবরণ উৎসব উদযাপন

আহসান রাজীব বুলবুল, কানাডা থেকে

কানাডায় বর্ণিল আয়োজনে বাংলা বর্ষবরণ উৎসব উদযাপন

উৎসবমুখর ও বর্ণিল আয়োজনের মধ্যে দিয়ে কানাডার ক্যালগেরির মন্টগোমরি কম্মুনিটি অ্যাসোসিয়েশন মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল বাংলা বর্ষবরণ উৎসব ১৪২৯। তুষার আবৃত্ত কানাডার কর্মময় একঘেয়েমি জীবন থেকে এদিন বের হয়ে এসে প্রবাসী বাঙালিরা সারাদিন ব্যাপী আনন্দ উৎসবে মেতেছিল অন্যরকম এক মিলন মেলায়। 

বাংলার সবুজ মাঠ পেরিয়ে বিশ্ব প্রান্তরে সূর্যের হাসি তেমন দেখা না মিললেও প্রবাসীদের বৈশাখের রঙ, ভালবাসার রঙ, আড্ডার রঙ, লোকজ ভাবনা, বাংলার ঐতিহ্য ও আনুষ্ঠানিকতায় একে অপরের সান্নিধ্যে শ্রদ্ধা, ভালবাসা বিনিময়ের মাধ্যমে হৃদয়-মন ভরে উঠেছিল প্রবাসী জীবনের আনন্দ জয়গানে। শিশু-কিশোর আর নারী পুরুষের পদভারে কানায় কানায় পূর্ণ ছিল মন্টগোমেরি কমিউনিটি অ্যাসোসিয়েশন মিলনায়তন। নবপ্রজন্মের কাছে আবহমান বাংলার কৃষ্টি ইতিহাস, ঐতিহ্য ও জাতীয় স্বত্ত্বাকে তুলে ধরাই ছিল বাংলা বর্ষবরণ উৎসবের মূল লক্ষ্য। 

মেলায় ছিল রঙ বেরঙের এর বাহারী শাড়ি, বাংলার ঐতিহ্যময় পিঠাপুলি খাবারসহ আকর্ষণীয় বিভিন্ন ধরণের স্টল। মূল আকর্ষণ ছিল ছোট ছোট শিশু কিশোরদের হাতে মুখ ও মুখোশ নিয়ে বৈশাখী শোভা যাত্রা। সারাদিনব্যাপী অনুষ্ঠানে স্থানীয় শিল্পীদের পাশাপাশি সঙ্গীত পরিবেশন করেন- কলকাতার জি বাংলা সারেগামাখ্যাত শিল্পী ঐন্দ্রিলা দাস। তার অনবদ্য সঙ্গীত পরিবেশনায় ফুটে উঠে বাংলার রূপ, প্রকৃতি, ভালোবাসা ও নির্মল আনন্দ। 

পদ্মা-যমুনা মিলনের মতই প্রবাসী বাঙালিদের পাশাপাশি বিদেশীরাও এ অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে তা উপভোগ করেন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত। আনন্দের আবহে সকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত বাঙালির চিরাচরিত আড্ডা আর লোকে লোকারণ্যে মুখরিত গানের সুরে, কবিতার ছন্দে, নাচের মুদ্রায় আর উপস্থাপনায় কোথাও যেন ঘটেনি ছন্দপতন। 

আয়োজক 'আমরা সবাই' সংগঠনের সভাপতি রুপক দত্ত বলেন, আমাদের রয়েছে সুন্দর একটি সংস্কৃতি, যে বলয়ে আমরা বেড়ে উঠেছি, আমাদের সেই ইতিহাস ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিকে নবপ্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে চাই। সারা বিশ্ব আনন্দময় হয়ে উঠুক বছরের প্রথম দিনে এমনটাই আমাদের প্রত্যাশা।

ক্যালগেরির বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও এবিএম কলেজের প্রেসিডেন্ট ড.মো: বাতেন বলেন, খুবই ভালো লাগছে, আমাদের বাংলা বর্ষবরণ উৎসবে বিদেশিদের উপস্থিতি দেখে। নতুন বছর সবার জীবনে আনন্দ আর অনাবিল শান্তি বয়ে আনবে, পহেলা বৈশাখের এই আনন্দ সারা বছর বাঙ্গালীদের মাঝে বিরাজমান থাকবে এমনটাই আমাদের প্রত্যাশা।

ক্যালগেরির সংগীতশিল্পী ঐশ্বর্য গুহ বলেন,  আমরা বাংলাদেশের রমনার সেই বটমূলের বৈশাখকে খুব মিস করছি। তবুও দীর্ঘ দুই বছর পর পরিবার পরিজন নিয়ে এখানে বৈশাখের আনন্দে শামিল হতে পেরে খুবই ভালো লাগছে। সবাইকে নববর্ষের শুভেচ্ছা। মঙ্গলময় হয়ে উঠুক পুরো পৃথিবী।

দূর প্রবাসে বাঙালি সংস্কৃতির এ উৎসব যেন এক মহামিলন। কর্মজীবনের পাশাপাশি সম্প্রীতির বন্ধনে এমনি করে বারবার এই মহামিলনে জেগে উঠবে নতুন প্রজন্ম, হৃদয়ে বাংলাদেশকে ধারণ করে লাল সবুজ আর মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশ হয়ে উঠবে আরও সুন্দর- এমনটাই প্রত্যাশা ক্যালগেরিতে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশিদের।


বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ

 

 

 

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর