১৯ মে, ২০২৩ ০৯:৫১
ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়ার ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত

ইন্টারন্যাশনাল স্টুডেন্টরাও ক্যাম্পাসে চাকরি করতে পারবেন

লাবলু আনসার, যুক্তরাষ্ট্র

ইন্টারন্যাশনাল স্টুডেন্টরাও ক্যাম্পাসে চাকরি করতে পারবেন

যুক্তরাষ্ট্রের ইমিগ্রেশন আইনকে চ্যালেঞ্জ দিয়ে ওয়ার্ক পারমিট নেই-এমন অবৈধ অভিবাসীকে চাকরি প্রদানের ঐতিহাসিক একটি সিদ্ধান্ত নিলো ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়া (ইউসি)। ১৮ মে বৃহস্পতিবার ইউসি গভর্নিং বডির মধ্যে অনুষ্ঠিত ভোটের পর এমন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। আর এটি মূলত: ইন্টারন্যাশনাল স্টুডেন্টদের কথা বিবেচনায় রেখে ইউসি কর্তৃপক্ষ চ্যালিঞ্জিং সিদ্ধান্তটি গ্রহণ করলো। 

বোর্ডের চেয়ার রিচার্ড লিইব এ প্রসঙ্গে বলেন, আমাদের শিক্ষার্থীদের স্বার্থে সর্বোচ্চ পর্যায়ের সহায়তা করতে আমরা বদ্ধপরিকর। মেধাবি শিক্ষার্থীরা অর্থ সংকটে পড়ে ঝরে পড়বেন-এমন কথা ভাবতেও পারি না। তবে এই সিদ্ধান্ত নভেম্বরের আগে কার্যকর করা সম্ভব হবে না বলে তিনি উল্লেখ করেন। 

প্রসঙ্গত: উল্লেখ্য, দীর্ঘ দুই ঘণ্টারও অধিক সময় ইমিগ্রেশনের অ্যাটর্নিগণের সাথে কর্মকর্তারা বৈঠক করে এ প্রক্রিয়ার বিরুদ্ধে সম্ভাব্য আইনগত চ্যালেঞ্জ  মোকাবেলা নিয়ে শলাপরামর্শের পরই বোর্ড সদস্যরা গোপন ব্যালটের ভোটে যান। আরো উল্লেখ্য, ১৯৮৬ সালে প্রেসিডেন্ট রিগ্যাণের জারিকৃত এক বিধি অনুযায়ী ওয়ার্ক পারমিট নেই এমন বিদেশীদের চাকরি প্রদানের সুযোগ নেই। সেই বিধিকে চ্যালেঞ্জ করেই ইউসি এমন সিদ্ধান্ত নিল। 

ইউসির কর্মকর্তারা উল্লেখ করেছেন, ইন্টারন্যাশনাল স্টুডেন্টরা ক্যাম্পাসে কাজের সুযোগ পেলে অর্থ সংকটে পড়বে না এবং তাদের মেধাবেও ইউসি কাজে লাগাতে সক্ষম হবে। শুধু তাই নয়, কাজের সুযোগ পেলে হাজার হাজার শিক্ষার্থীর ভাগ্য উন্নয়নের পথ সুগম হবে। ইউসির ল’ স্কুলের ডীন এবং অধ্যাপকগণের প্রায় সকলেই যুক্তি দেখিয়েছেন যে, ফেডারেল নিষেধাজ্ঞা ক্যালিফোর্নিয়া স্টেট মানতে বাধ্য নন। এটি স্বায়ত্বশাসিত একটি প্রতিষ্ঠান, তাই ফেডারেলের রীতি মানতেই হবে-এমন কোন ব্যাখা নেই। স্মরণ করা যেতে পারে, ডেফার্ড অ্যাকশন ফর চিল্ড্রেন এ্যারাইভাল তথা ড্যাকার অন্তর্ভুক্ত শিক্ষার্থীদের চাকরি প্রদানের একটি নির্দেশনা ২০২১ সালে প্রেসিডেন্ট বাইডেন প্রদান করেছিলেন। ন্তিু ফেডারেল কোর্ট সেটি থামিয়ে দিয়েছে। ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়ার লসএঞ্জেলেস ক্যাম্পাসের সেন্টার ফর ইমিগ্রেশন ল’ এ্যান্ড পলিসি সেন্টারের কো-ডিরেক্টর অবশ্য যুক্তি দেখিয়েছেন যে, স্টেট প্রশাসনের যথেষ্ঠ ক্ষমতা রয়েছে নিজের স্বার্থে যে কোন পদক্ষেপ গ্রহণের। ইন্টারন্যাশনাল স্টুডেন্টদের সামগ্রিক স্বার্থে এমন সিদ্ধান্ত নিলে তা ঠেকানো কঠিন হতে পারে। বলার অপেক্ষা রাখে না যে, যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষস্থানীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অন্যতম ইউসির ১০ ক্যাম্পাসে দুই লাখ ৯৫ হাজার শিক্ষার্থীর সকলেই আইনগত পরামর্শ, অর্থনৈতিক সহায়তা, কাউন্সেলিং পাচ্ছেন, যার মধ্যে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক ওয়ার্কপারমিট নেই এমন শিক্ষার্থীও রয়েছেন। ক্যালিফোর্নিয়া স্টেট পার্লামেন্টের ডেমক্র্যাট নীতি-নির্ধারকরা ২০০১ সাল থেকে টিউশনি ফি নানাক্ষেত্রে মওকুফের বিধি করেছে-যার সুবিধা ওয়ার্ক পারমিট বিহীনরাও পাচ্ছেন। এমনকি ইন্টারন্যাশনাল স্টুডেন্টরা স্টেট প্রদত্ত অর্থনৈতিক সহায়তারও আবেদন করছেন। রিপাবলিকানরা আপত্তি করেও তা ঠেকাতে পারেননি। পরিচালনা পর্ষদের অন্যতম সদস্য হোযে হারনার্ন্ডেজ এ প্রসঙ্গে বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে উচ্চতর শিক্ষা প্রদানের ক্ষেত্রে ইউসি হচ্ছে সেরা প্রতিষ্ঠান এবং সবসময় প্রগতিশীল চিন্তা-চেতনাকে প্রমোট করছে। সে আলোকে আমি আশা করছি অন্য স্টেটের সেরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো ইউসিকে ফলো করবে ইন্টারন্যাশনাল স্টুডেন্টদের সুন্দর ভবিষ্যতের প্রত্যাশা পূরণে। 

বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন
 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর