৮ জুন, ২০২৪ ০৯:৪২

জাতিসংঘ অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিষদের নির্বাচনেও বাংলাদেশের বিজয়

লাবলু আনসার, যুক্তরাষ্ট্র

জাতিসংঘ অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিষদের নির্বাচনেও বাংলাদেশের বিজয়

জাতিসংঘের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিষদ (ইকোসক)’র ২০২৫-২০২৭ মেয়াদের নির্বাচনে বাংলাদেশ এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের প্রার্থী হিসেবে ১৮৯ ভোটের মধ্যে ১৮১ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছে। জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের সভাকক্ষে ৭ জুন এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। 

এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল থেকে বাংলাদেশ ছাড়াও সৌদি আরব, শ্রীলঙ্কা ও উজবেকিস্তান এ নির্বাচনে জয়লাভ করে। 

উল্লেখ্য, ইকোসক (ECOSOC) জাতিসংঘের মূল ৬টি অঙ্গের একটি এবং বহুপক্ষীয় ও উন্নয়ন কূটনীতি প্রশ্নে জাতিসংঘের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্ল্যাটফরম হিসেবে বিবেচিত। 

আরও উল্লেখ্য, জাতিসংঘের নেতৃত্বে গোটাবিশ্বের আর্থিক-সামাজিক অবকাঠামোগত উন্নয়নে দায়িত্ব পালনকারি ‘সেকেন্ড কমিটি’র চেয়ার হিসেবে বাংলাদেশ সর্বসম্মতভাবে নির্বাচিত হবার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই ইকোসকের মত আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ সংস্থার নীতি-নির্ধারক হিসেবে নির্বাচিত হবার মধ্যদিয়ে প্রকারান্তরে বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী ও গতিশীল নেতৃত্বের প্রতি বিশ্বসংস্থার অকুণ্ঠ সমর্থনেরই বহি:প্রকাশ ঘটলো বলে কূটনীতিকরা মনে করছেন। 

বাংলাদেশ জাতিসংঘের ২০৩০ এজেন্ডা ও ভিশন-২০৪১: স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণ বাস্তবায়নে অভূতপূর্ব সাফল্য অর্জন করে চলার পাশাপাশি সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে রোল মডেল হিসেবে বিবেচিত বাংলাদেশের উন্নয়ন বৈশ্বিক স্বীকৃতি অর্জন করছে। নির্বাচনস্থলে বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকবৃন্দ বাংলাদেশের বিজয়কে “বাংলাদেশের উন্নয়ন-সফলতার বৈশ্বিক স্বীকৃতির অংশ এ বিজয়” হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। বস্তুত, বাংলাদেশ যে অন্যান্য দেশের বিশ্বাস, নির্ভরতা ও সম্মান অর্জন করেছে – সাধারণ বিবেচনায় বাংলাদেশের অব্যাহত বৈশ্বিক নির্বাচনে সাফল্য - বিশেষত, অত্যন্ত সম্মানজনক এ নির্বাচনের সাফল্য - তারই স্বীকৃতি। 

জাতিসংঘের ৭৮তম সাধারণ পরিষদের সভাপতি ডেনিস ফ্রান্সিসের সভাপতিত্বে গোপন ব্যালটের মাধ্যমে এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনের বিজয় বার্তায় জাতিসংঘে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ও স্থায়ী প্রতিনিধি মুহাম্মদ আব্দুল মুহিত বলেন, “এ বিজয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল ও সৃষ্টিশীল নেতৃত্বে বাংলাদেশের অব্যাহত উন্নয়নের স্বীকৃতি এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের প্রতি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের আস্থা ও বিশ্বাসের বহিঃপ্রকাশ”। স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে বাংলাদেশের ২০২৬ সালে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের প্রতি গুরুত্ব আরোপ করে রাষ্ট্রদূত ও স্থায়ী প্রতিনিধি মুহিত বলেন, “ইকোসকের সদস্যপদ আমাদের স্বল্পোন্নত দেশ হতে উন্নয়নশীল দেশে অবাধ ও টেকসই উত্তরণের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।”

ইকোসকের সদস্যপদ জাতিসংঘের বিভিন্ন ফোরাম, কমিশন, কমিটি, নির্বাহী বোর্ড, ইউএন এসকাপ-এর মতো আঞ্চলিক প্ল্যাটফরমসমূহে সহায়ক নীতি প্রণয়নসহ বাংলাদেশের নেতৃত্ব এবং জাতিসংঘের ২০৩০ এজেন্ডা বাস্তবায়নের অব্যাহত প্রচেষ্টাকে আরো শক্তিশালী করবে। এ বিজয় বাংলাদেশের উন্নয়ন অভিজ্ঞতার সাফল্যসমূহকে বিশ্বের সাথে ভাগাভাগি করে নিতে সহায়ক হবে বলে রাষ্ট্রদূত মুহিত উল্লেখ করেন।

প্রসঙ্গত: উল্লেখ্য যে, বাংলাদেশ বর্তমানে ইউএনডিপি/ইউএনএফপিএ/ইউএন অপ্স-এর নির্বাহী বোর্ডের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছে।

ইকোসকে আগামী ২০২৫ সালের জানুয়ারি মাস থেকে তিন বছর মেয়াদে (২০২৫-২০২৭) বাংলাদেশ দায়িত্ব পালন করবে।

বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর