১ জুলাই, ২০২৪ ১১:১৯

অভিভাবকদের সন্তানের বন্ধু হওয়া জরুরি, বিশিষ্টজনদের মতামত

কানাডা প্রতিনিধি

অভিভাবকদের সন্তানের বন্ধু হওয়া জরুরি, বিশিষ্টজনদের মতামত

সৃজনের ইন্টারনেট ব্যবহার রাত দশটার পর বন্ধ করে দিত তার অভিভাবকরা। কতক্ষণ অনলাইনে থাকবে, কী করবে আর করবে না এরকম বেশিরভাগ সিদ্ধান্তও ছিল অভিভাবকের। ডানার গল্পটা ভিন্ন। মেয়ে বলে কথা। কার ফোন রিসিভ করছে, বন্ধু কারা হবে, কোথায় যাচ্ছে সব নজরদারি ছিল তার উপর। আর নাবিলার জন্ম আর বড় হওয়াটা কানাডায়। এখন বিশ্ববিদ্যালয়ে মাস্টার্স করছে। বাঙালি পরিবারে জন্ম হলেও ভালো বাংলা বলতে পারে না। ভাষাগত সমস্যার কারণে ব্যক্তিগত অনেক বিষয় জানা এবং শেয়ার করা তার অভিভাবকদের সঙ্গে হয়ে উঠে না। আমার যে ইমোশনাল সাপোর্ট দরকার তা আমি পাইনি। পাশে বসে থাকা নাবিলার মাও এসময় নীরবে শুনছিলেন কথাগুলো।

টরন্টোয় বসবাসরত এরকম বেশ কয়েকজন তরুণ-তরুণী তাদের পারিবারিক জীবনের অভিজ্ঞতার কথা বলছিল কানাডিয়ান সেন্টার ফর ইনফরমেশন এন্ড নলেজ আয়োজিত; ব্রিজিং জেনারেশনস: এনহ্যান্সিং রিলেশানশিপ্স বিটুইন ইয়াং এন্ড ওল্ড শিরোনামে অনুষ্ঠিত আলোচনা অনুষ্ঠানে।

গত শনিবার (২৯ জুন) টরন্টোর ডেনফোর্থ এভিনিউস্থ রেডহট রেস্তোরাঁয় এ আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। প্রবীণ ও নবীনের মধ্যে বন্ধন শক্তিশালী করার লক্ষ্যে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে কমিউনিটির বিভিন্ন শ্রেণী ও পেশার ৩৮ জন প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানের শুরুতে বিষয়টির উপর একটি পাওয়ার পয়েন্ট উপস্থাপন করেন কানাডিয়ান সেন্টারের ভলান্টিয়ার নুসরাত জাহান। তিনি তার উপস্থাপনায় প্রজন্মগত পার্থক্যগুলো উপস্থাপন করেন।

বেসরকারি সংস্থা কানাডিয়ান সেন্টার আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথির বক্তব্যে নতুন দেশ পত্রিকার প্রধান সম্পাদক বিশিষ্ট সাংবাদিক শওগাত আলী সাগর বলেন, আমাদের অভিভাবকদের অনেকেই নিজে তার ক্যারিয়ারে যা পারেনি, ব্যর্থ হয়েছেন, সেটাই সন্তানের উপর চাপিয়ে দিতে চান। এ চাপ অনেকেই নিতে পারে না। 

তিনি বলেন, অভিভাবকদের উচিত সন্তানের পছন্দের বিষয়টি গুরুত্ব দেওয়া। মা-বাবার উচিত সন্তানের বন্ধু হওয়া। 

দুই সন্তানের অভিভাবক এবং চাইল্ড এন্ড ইয়ুথ ওয়ার্কার ফাতেমা খাতুন ইথার বলেন, ছোট বেলায় বাচ্চাদের বড় করা কঠিন নয়। কিন্তু চ্যালেঞ্জটা তখনই আসে যখন তারা টিনেজার। বন্ধুসুলভ আচরণ, আস্থার সম্পর্ক গড়ে তোলার মাধ্যমে জেনারেশনাল ব্রিজিংটা গড়তে হবে বলে তিনি অভিমত দেন। 

উন্নয়ন কর্মী রীণা সেন গুপ্তার মতে, একে অপরের প্রতি শ্রদ্ধা, পারস্পরিক আস্থা সন্তান এবং অভিভাবকের সম্পর্কে উন্নয়নে যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ।

কানাডিয়ান সেন্টার ফর ইনফরমেশন এন্ড নলেজ একটি প্রকল্পের কাজ শুরু করেছে। গভর্নমেন্ট অব কানাডার সহায়তায় ব্রিজিং জেনারেশন নামক এই প্রকল্পের মূল লক্ষ্য হচ্ছে প্রবীণ এবং নবীনের মধ্যে অর্থপূর্ণ সম্পর্ক তৈরি করা। বয়স্করা তাদের জীবনের সঞ্চিত অভিজ্ঞতা শেয়ার করবেন তরুণদের সঙ্গে। একই সঙ্গে তরুণরাও তাদের অন্তর্দৃষ্টি বয়স্কদের জানাবেন। এর মাধ্যমে পারস্পরিক জ্ঞান, অভিজ্ঞতা, পারিবারিক মূল্যবোধ এবং সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য, নবীন-প্রবীণদের মনোভাব আদান-প্রদান সহজতর হতে পারে। কানাডিয়ান সেন্টার মনে করে এই আন্তঃপ্রজন্মগত সংযোগ পারিবারিক সম্পর্ক ও মূল্যবোধের উন্নয়নে সহায়ক হবে।

বিডি প্রতিদিন/আরাফাত

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর