৩০ অক্টোবর, ২০১৭ ০০:১১

'রোহিঙ্গা ইস্যু অন্য রাষ্ট্রের ক্ষেত্রেও সমস্যার কারণ হতে পারে'

দীপক দেবনাথ, কলকাতা:

'রোহিঙ্গা ইস্যু অন্য রাষ্ট্রের ক্ষেত্রেও সমস্যার কারণ হতে পারে'

'বাংলাদেশ এখন যে সমস্যায় ভুগছে, অতি দ্রুত তা না মিটলে অন্য রাষ্ট্রের ক্ষেত্রেও বড় সমস্যা হয়ে দেখা দিতে পারে।' রোহিঙ্গা ইস্যুতে এই মন্তব্য করেছেন কলকাতাস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসের ডেপুটি হাইকমিশনার তৌফিক হাসান। রবিবার সন্ধ্যায় কলকাতা প্রেসক্লাবে ভারত বাংলাদেশ মৈত্রী সমিতির পক্ষে আয়োজিত ‘রোহিঙ্গা সংকট: দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক নিরাপত্তা’ শীর্ষক এক অনুষ্ঠানে তিনি এই মন্তব্য করেন। 

তৌফিক হাসান বলেন, মনে করুন একটি প্লেন আকাশে উড়ছে, হঠাৎ করে প্লেটির শেষের দিকে ইকনমিক ক্লাসে আগুন লেগেছে। ইকনকিম ক্লাসের যাত্রীরা প্রাণপণ চেষ্টা করেও তা নেভাতে পারছেন না। সেসময় বিজনেস ক্লাসে যেসব যাত্রীরা বসে আছেন তারা কি শান্তিতে থাকতে পারবেন? তাদেরকেও এগিয়ে আসতে হবে। তারা যদি সময় মতো ইকনমিক ক্লাসের যাত্রীদের সাহাযার্থে এগিয়ে না আসেন তবে এই আগুন কিন্তু বিজনেস ক্লাসকেও আক্রান্ত করবে এবং পুরো বিমানটি ধ্বংস হয়ে যাবে।

তৌফিক হাসান আরও বলেন, আজকে রোহিঙ্গা ইস্যুটি হয়তো আপাতদৃষ্টিতে বাংলাদেশের একার সমস্যা বলে অনেকের মনে হচ্ছে কিন্তু এই সমস্যা যদি এখনই সমাধানের জন্য কার্যকর উদ্যোগ না নেওয়া হয় তবে আজকে যা বাংলাদেশের সমস্যা, আগামীকাল তা আপনাদের সমস্যা, পরশু তা সকলের সমস্যা হিসাবে আবির্ভুত হবে। এটা আমাদের কারোর-ই কাম্য নয়। তাই আমাদের আশা থাকবে যে মিয়ানমারসহ এই অঞ্চলের সকল দেশ ও জাতিসংঘ এগিয়ে আসবে এবং এই সমস্যা সমাধানের জন্য কার্যকরী ভূমিকা গ্রহণ করবে। এই সমস্যার একমাত্র সমাধান হচ্ছে রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারের নাগরিকত্ব প্রদান এবং তাদের শান্তিপূর্ণ ভাবে রাখাইন রাজ্যে পুনর্বাসন ও প্রত্যাবর্তন করা’। 

মিয়ানমারে নির্যাতিতা রোহিঙ্গাদের মানবিকতার দৃষ্টিকোণ থেকে বাংলাদেশের মাটিতে আশ্রয় দেওয়া ও ত্রাণের ব্যবস্থাসহ এই সমস্যার বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কেও বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেন ডেপুটি হাইকমিশনার। 

তৌফিক হাসান বলেন, আপনারা জানেন যে সম্প্রতি বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে প্রায় ৬ লাখ রোহিঙ্গা। এর আগেও ১৯৭৮, ১৯৯১-৯২, ২০১২ এবং ২০১৬ সালে মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের সংখ্যা প্রায় ৪ লাখের কাছাকাছি। সবমিলিয়ে প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থী বাংরাদেশে অবস্থান করছে। মানবিকতার খাতিরেই আমরা তাদের খেয়াল রাখছি, খাদ্য, আশ্রয় দিচ্ছি।

এদিনের এই আলোচনার মুখ্য বক্তা ছিলেন, বাংলাদেশের বিশিষ্ট সাংবাদিক ও মানবাধিকার আন্দোলনের নেতা শাহরিয়ার কবির, দক্ষিণ এশিয়ার আন্তর্জাতিক সম্পর্কের বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক জয়ন্ত রায়, অধ্যাপক বিমলশংকর নন্দ প্রমুখ। সভায় সভাপতিত্ব করেন পশ্চিমবঙ্গের সাবেক সমিত অধ্যাপক প্রবোধচন্দ্র সিনহা।

বিডি প্রতিদিন/মজুমদার

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর