শিরোনাম
সোমবার, ৯ ডিসেম্বর, ২০১৩ ০০:০০ টা

বেচারা ব্যাচেলর

বেচারা ব্যাচেলর

'ফেসবুক আধুনিক জীবনের আশীর্বাদ' শিরোনামের রচনা কবে যে পাঠ্য বইয়ে ছাপা হয়ে যায় কে জানে! দৈনন্দিন জীবনে ফেসবুকের গুরুত্ব দিন দিন অনস্বীকার্য হয়ে দাঁড়াচ্ছে। বন্ধু চান? পাবেন। রক্ত চান? পাবেন। কোনো খবর জানতে চান? হোম পেজ আপনার চাওয়ার আগেই চোখের সামনে তুলে ধরবে। আর আজকাল তো ঘটকদের ব্যবসায় লালবাতি জ্বলিয়ে দিয়েছে ফেসবুক! যে যার পছন্দমতো পাত্র/পাত্রী খুঁজে নিচ্ছে ফ্রেন্ডলিস্ট থেকে। একটা ঘটনা শেয়ার করা যাক। কয়দিন আগে ইভান বিশাল বড় দুঃখ ও আক্ষেপ নিয়ে ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দিল।

স্ট্যাটাসটি হচ্ছে- ' আমি এক ব্যাচেলর। আমার একটি বাসার খুব দরকার। ফ্রেন্ডলিস্টে কোনো সহৃদয়বান বাড়িওয়ালা থাকলে প্লিজ আওয়াজ দিন।'

শুরু হলো স্ট্যাটাসে লাইক পড়া। সব ব্যাচেলররা লাইক দিয়ে অপেক্ষায় আছে কোনো এক বাড়িওয়ালার কমেন্টের। অবশেষে একজনকে পাওয়া গেল। জোবায়ের নামক সেই কমেন্টদাতার কমেন্টেটি ছিল এরকম-

'আমার বাসার ছয় তলার একটি রুম খালি পড়ে আছে। কিন্তু সেখানে ব্যাচেলর ভাড়া দেওয়া হবে না। দুজন বিশিষ্ট পরিবার মানে নতুন জামাই-বউ ভাড়া দেওয়া হবে।'

কমেন্ট দেখে তো ইভানের চান্দি গরম অবস্থা। আনলাইক বাটন না থাকায় মার্ক জুকারবার্গকে মনে মনে কয়টা বকা দিয়ে একটি আবেদনময়ী কমেন্ট করে বসল-

'স্যার, আমরা অসহায় ব্যাচেলর। আমরা কই যামু! এভাবে সবাই ব্যাচেলরদের থেকে মুখ ফিরিয়ে নিলে কয়দিন পর তো ব্যাচলর হওয়ার অপরাধে বউও পামু না!'

বাড়িওয়ালা জোবায়ের কমেন্ট, 'কিচ্ছু করার নাই, আমার বাসায় ভার্সিটি পড়া মেয়ে আছে। ব্যাচেলর ভাড়া দেওয়া যাবে না। বিয়ে করে আসুন, বাসা নিয়ে যান।'

এবার দারুণ এক যুক্তিযুক্ত কমেন্ট ঝাড়ল ইভান-

'দেখুন, আপনি যে নবদম্পতিকে ভাড়া দিতে চান, তারা তো আপনার বাসায় বেশিদিন থাকতে পারবে না! কারণ, কিছুদিনের মধ্যেই তাদের বাচ্চা-কাচ্চা হওয়ার উপক্রম হবে। তখন সেই স্ত্রীলোকটির এতটা সিঁড়ি বেয়ে ওঠা-নামা করা সম্ভব হবে না (যেহেতু আপনার বাসায় লিফট নেই)। সুতরাং তারা আপনার বাসা ছেড়ে চলে যাবে। আর আমাদের ভাড়া দিন, আমরা আজীবন থাকতে রাজি আছি।'

জোবায়ের সাহেব কমেন্টটিতে লাইক দিয়ে উধাও হয়ে গেলেন! ইভান তো হন্যে হয়ে বাসা খুঁজছে। আর কয়দিন পরই তাকে হল ছেড়ে দিতে হবে। বাসা না পেলে গাছতলায় থাকতে হবে। একবার ভাবল বাবার কাছে পত্র লিখবে, 'বউ চাহিয়া পিতার নিকট পত্র' শিরোনামে। পরে সিদ্ধান্ত নিল বিয়ের উপযুক্ত মেয়ে নেই এরকম বাড়িওয়ালার কাছে গিয়ে বাসা খুঁজবে। পরের দিন এক বাসার দরজায় গিয়ে কলিং বেল প্রেস করল। নাদুস নুদুস চেহারার এক লোক এসে জানালেন রুম খালি আছে কিন্তু ব্যাচেলর নট এলাউ।

ইভান হুট করে জিজ্ঞাসা করে বলে বসলো, 'ব্যাচেলরদের কেন বাসা ভাড়া দেবেন না? আপনারও কি আঠারো প্লাস মেয়ে আছে নাকি?'

বাড়িওয়ালার মেজাজি উত্তর, 'না'।

ইভান : তাহলে ভাড়া দিতে প্রবলেম কি?

বাড়িওয়ালা : আমি এক মাস হলো। বিয়ে করেছি। আমার বউ আঠারো প্লাস।

 

 

সর্বশেষ খবর