সোমবার, ১০ ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ ০০:০০ টা
ইশটোরি

এক ঘুম ভাঙা সকালে

শেখ আবিদ হোসেন

এক ঘুম ভাঙা সকালে

কোনো এক রহস্যময় কারণে সকালের ঘুমটা সব সময়ই আনন্দময়। ঘুম ভাঙল প্রেমিকার ফোনে এবং যথারীতি দুঃসংবাদ। তার নাকি বিয়ে হয়ে যাচ্ছে। আমার ভীষণ রাগ হলো। বলেই ফেললাম, 'তোমার বাবার কি সময়-জ্ঞান নেই? এই ভোরবেলায় তোমার বিয়ে ঠিক করে ফেলল?' এবার তার রাগবার পালা। 'ভোর? কয়টা বাজে সে হুঁশ আছে?' আসলেই হুঁশ নেই। যদি হুঁশই থাকবে তবে ঘুমালাম কখন? আর যদি ঘুমিয়েই থাকি তবে হুঁশটা হবে কীভাবে? আরও অনেক প্রশ্ন মাথার ভেতর ভিড় করছিল। কিন্তু আজ আমার প্রশ্ন করার অধিকার নেই (কোনোকালে ছিলও না)। আর আমি সে অবস্থায় ছিলামও না। আমার মস্তিষ্ক ধীরে ধীরে নিজেকে গুছিয়ে নিচ্ছিল। তবে মুহূর্তেই ঘুমের রেশটুকু কেটে গেল। আমি স্বগতোক্তি করে উঠলাম, 'তোমার বিয়ে হয়ে যাচ্ছে?' বিয়ে ব্যাপারটাই আনন্দের। বিয়ের কথা শুনলেই দাওয়াত খাওয়ার কথা মনে হয়, আর তাতেই আমার কেমন যেন জিবে পানি চলে আসে। যাহোক, প্রেমিকা কী যেন বলতে চাচ্ছিল। সে বলল, আমি তাহলে এতক্ষণ কার সঙ্গে কথা বলছি? তুমি কিছুই শোননি। আমার বিয়ে হয়ে গেলে তোমার কী? আমি তোমার কে? রাখি।' বলেই রেখে দিল। এ অবস্থায় প্রেমিকের ফোন দেওয়া কর্তব্য। যদিও আমার শরীর বলছে ঘুমানোটাই আমার কর্তব্য, তবু আমি রাজি হলাম না। ফোন করলাম। তারপর কত কথা, কত কটু-কাটব্য আর কত গ্যালন গ্যালন তেল যে ব্যয় হলো তা ভুক্তভোগী মাত্রই জানে। অবশেষে আসল কথা জানা গেল।

আজ সকালে প্রেমিকার পরীক্ষায় অর্জিত ফলাফল মূল্যায়ন করে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে সামনের সেমিস্টারেও যদি সে তার জয়যাত্রা (প্রেমিকার সম্পর্কে ভালো কথা বলাই শ্রেয়) অব্যাহত রাখে তবে বিয়ের ব্যবস্থা করবে। বুক থেকে পাথর নেমে গেল।

: এই ব্যাপার? এর জন্য তুমি আমার ঘুমটা ভাঙালে?

: এটা সামান্য ব্যাপার?

: তা নয়তো কি? সামনের সেমিস্টারের এখনো ঢের বাকি।

: যদি আগের মতো হয়?

: হবে না।

: কীভাবে?

: তোমার বাবাকে বলো হাউস টিউটর লাগবে।

: ভার্সিটির কেউ বাইরে পড়ে? আর পাব কোথায়?

: আমি তো আছিই। যদি তুমি ভালো নাও কর সমস্যা নেই। আমার পাঠশালায় তোমার বাবাকেও ভর্তি করে নেব।

: কীভাবে করবে?"

: যথাসময়ে প্রকাশ্য।"

... ইত্যাদি ইত্যাদি।

-বাগমারা, খুলনা।

 

 

সর্বশেষ খবর