শিরোনাম
সোমবার, ২৫ মে, ২০১৫ ০০:০০ টা

ম্যান ভার্সেস ওয়াইল্ড : ঢাকা এপিসোড

চিরতার রস

ম্যান ভার্সেস ওয়াইল্ড : ঢাকা এপিসোড

টিকে থাকার লড়াইয়ে আজ আমরা আপনাদের শেখাব কীভাবে বর্ষা মৌসুমে ঢাকা শহরে যাতায়াত করতে হয়। আজ আমাদের সেলিব্রেটি মফিজ মিয়া শেখাবেন বর্ষা মৌসুমে কিভাবে ঢাকার রাস্তার নানা বাধাবিপত্তি পেরিয়ে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই অফিসে পৌঁছানো যায়। আমরা সরাসরি চলে যাচ্ছি মফিজ মিয়ার কাছে। আমি মফিজ এখন আছি পুরান ঢাকার রায়সাহেব বাজার এলাকায়। এ মুহূর্তে আমার ঘড়িতে সময় সকাল ৭টা কুড়ি মিনিট। আমাকে ঠিক ৯টার মধ্যে কাওরানবাজারে অবস্থিত আমার অফিসে পৌঁছুতে হবে। আমার হাতে আছে ঠিক ১ ঘণ্টা ৪০ মিনিট। তাই দেরি না করে আমাদের মিশন শুরু করা যাক। আমি ৪০ মিনিট ব্যয় করব আমার সরঞ্জাম তৈরি করতে এবং বাকি এক ঘণ্টা হাতে রাখব যাতায়াতের জন্য। প্রথমেই আমাকে খুঁজে বের করতে হবে একটা পলিথিন ব্যাগ। সারা বাড়ি তন্ন তন্ন করে খোঁজার পরে তোশকের তলায় পাওয়া গেল একটা মাঝারি সাইজের পলিথিন ব্যাগ। অফিসে পরিধেয় ফরমাল শার্ট, ফরমাল প্যান্ট, মোজা, জুতা এবং বড় সাইজের একটা টাওয়াল আমি ব্যাগে ঢুকিয়ে নিলাম। এবার টাইট করে একটা গিট্টু দিয়ে ব্যাগটির মুখ বন্ধ করে দিলাম। এই ব্যাগটি বৃষ্টি এবং রাস্তার কাদাপানি থেকে আমার পোশাকগুলোকে রক্ষা করবে। পরবর্তী ধাপে আমাকে তৈরি করতে হবে একটা ভেলা যা আমাকে কোমর পানিতে চলতে সাহায্য করবে। বর্ষা মৌসুমের কথা চিন্তা করে পূর্ব পরিকল্পিভাবে আমি প্লাস্টিকের কিছু পানির বোতল, সয়াবিন তেলের বোতল এবং কোল্ড ড্রিংকসের খালি বোতল সংরক্ষণ করে রেখেছিলাম। সেগুলোকে এখন কাজে লাগাতে হবে। আমি ঘরের আনাচে-কানাচে খুঁজে সব বোতলকে একটা স্থানে জড়ো করলাম। তারপর দড়ি দিয়ে বেঁধে বেঁধে বোতলগুলোকে একটা ভেলায় রূপান্তর করলাম। ভেলাটি আমাকে বহন করতে যথেষ্ট উপযুক্তই মনে হচ্ছে। তবে আসল পরীক্ষা হবে পানিতে নামানোর পরেই। ভেলার মধ্যে রাখতে হবে মাঝারি সাইজের একগাছা দড়ি এবং বৈঠার মতো একটা কিছু। ওজন কমানোর জন্য আমি বৈঠা হিসেবে নেব একটা মেলামাইনের প্লেট। আমি এর আগেও পরীক্ষা করে দেখেছি হাঁটু কিংবা কোমর পানিতে মেলামাইনের প্লেট বৈঠা হিসেবে চমৎকার। আর এটি আপনি সহজেই বহনও করতে পারবেন। পথে ক্ষুধা পেলে এটিকে খাবার প্লেট হিসেবেও ব্যবহার করতে পারবেন। ও, সঙ্গে অবশ্যই একটা ছাতা রাখতে ভুলবেন না।

যাই হোক, এবার আমি একটা হাফপ্যান্ট পরে এবং মাথায় একটা গামছা বেঁধে আমার জিনিসপত্র নিয়ে বেরিয়ে পড়লাম। সকাল থেকে তুমুল বৃষ্টির কারণে ইতোমধ্যেই রাস্তায় কোমর পানির উপস্থিতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। আমি সুবিধামতো আমার ভেলা পানিতে নামিয়ে দিলাম। এবার খুব সাবধানে আমাকে ভেলায় চেপে বসতে হবে। একটু এদিক-সেদিক হলেই ময়লা পানিতে ঢুপুস করে পড়ে যেতে হবে। কয়েকবার চেষ্টার পরে আমি ভেলায় চড়ে বসতে সক্ষম হলাম।

এবার আস্তে আস্তে প্লেট মারতে লাগলাম গুলিস্তানে কিছু প্রাইভেট কার জোরে চলতে গিয়ে আমাকে ময়লা পানি দিয়ে প্রায় ভিজিয়েই দিচ্ছিল। কিন্তু আমি আমার ছাতা দিয়ে দক্ষতার সঙ্গে তা প্রতিহত করতে সক্ষম হলাম। এভাবে আরও অনেক বাধা-বিপত্তিকে হার মানিয়ে আমি ঠিক সময়ের মধ্যেই আমার গন্তব্যে পৌঁছাতে সক্ষম হলাম। এরপর অফিসের বাথরুমে গিয়ে একটা গোসল দিয়ে আমার অফিসিয়াল পোশাক পরে নিলাম।

 

সর্বশেষ খবর