সোমবার, ৯ নভেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

বাসর রাতে মশা মারবেন না যে কারণে

বাসর রাতে মশা মারবেন না যে কারণে

বউয়ের কাছে বসে বললাম, মশা, ঘোমটা একটু সরাও। বউ চোখ গরম করে বলল, আমি মশা না, নিশা।

বিয়ে? কী বল, আমি করব বিয়ে? অসম্ভব। কে শোনে কার কথা। অনেকটা হাত-পা বেঁধেই আমাকে বিয়ের পিঁড়িতে বসানো হলো। দেখলাম নামেই পিঁড়ি। পিঁড়ি নয়, সোফায় বসলাম। সিগনেচার করলাম। দুই বার কবুল বললাম। তৃতীয়বার ভুলে বকুল বলি। বকুল  আমার প্রাক্তন প্রেমিকার নাম। শুনে সবার রক্তচোখ। ভুল শুধলে তৃতীয়বার কবুল বললাম।

বাসর রাত। মিষ্টি আলো ছড়িয়ে আছে চারদিকে। বউ খাটে বসা।  লম্বা ঘোমটা তার। কাছে বসে বললাম, মশা, ঘোমটা একটু সরাও। চাঁদ মুখটা একটু দেখি। ওমা! বউ চোখ গরম করে তাকালো। মশা সোনা কি দেখ? বউ বললো, আমি মশা না, নিশা। সরি, ভুল হয়ে গেছে। টেনশনে তালগোল পাকিয়ে যায়। আমি না একদমই টেনশন নিতে পারি না। ঠাস, ঠাস, ঠুস-ঠাস শব্দ হয়। মশা মেরে চলেছি। যেখানে ফাঁকা পায় কামড় বসিয়ে দেয়। অতিষ্ঠ। একটু রোমান্টিক কথাবার্তা বলব, অমনি যেন সুই ফোটে। কখনো পায়ে, হাতে, গালে, ঘাড়ে। বউ ঠাস করে এক চড় বসিয়ে দিল। বলল, গালে একটা মশা ছিল। হাত দিয়ে দেখলাম। মশা মরেনি। উপরন্তু গালে আঙ্গুলের দাগ। মনে হলো, আমি আফ্রিকার জঙ্গলে আছি। হাজার হাজার মশা আমায় ঘিরে। আমার শরীরটাকে ওরা পোলাও কোরমার মতো খাবার বানাল। যে যেখানে পারে বসে সুঁচ ফোটাল। কটাই বা মারব। মশারা যেন মজা পেয়েছে। মশারি খুঁজলাম। মশারি নাই। বাসর ঘরে নাকি মশারি থাকে না। চাদরে মুড়িয়ে বউ ঘুমিয়ে পড়ল। আমি কই যাই। শোবার জো নাই। চেয়ারে বসে ঠাস ঠাস মশা মারি। একটু চোখ বুজি। অমনি শো শো গানে হুঁশ ফেরে। এভাবেই রাত শেষ।  সকালে আমার চোখ লাল। শালিরা বলল, রাতে বুঝি ঘুমাননি। ইস, দুলাভাই কত রোমান্টিক। হ্যাঁ, তাতো বটেই। একটু চোখের পাতাও ফেলিনি বললাম। মনে মনে ভাবলাম, বউ না। মশার সঙ্গে যেন বাসর রাতটা কেটে গেল।

-মুহাম্মদ শফিকুর রহমান

বানারীপাড়া, বরিশাল।

সর্বশেষ খবর