শুরুতেই একটা গপ্পো।
অনেক আগের কথা। অনেক দূরের একটা বন। বনের সবাই দারুণ একতাবদ্ধ। সেখানে কড়া নিয়ম। কিছুতেই এক পশু অন্য পশুর মাংস খেত না। তো সেই শান্ত সুন্দর বনের জলাশয়ে একদিন একটা হরিণ পানি খাচ্ছিল। ব্যাপারটা চোখে পড়ল এক বাঘের। ক্ষুধার্ত বাঘ সুযোগ বুঝে হরিণটাকে খেয়ে ফেলল। বনের আইন ভাঙায় পশুরাজ সিংহসহ সবাই বাঘের বিরুদ্ধে বিচার বসাল। বাঘ আত্মপক্ষ সমর্থন করে বলল, ‘আমি না খেলে হরিণটা জলাশয়ের পানি ঘোলা করে ফেলত।’
অন্যরা তখন বলল, ‘কিন্তু হরিণ তো পানি ঘোলা করেনি।’বাঘ গর্জন করে বলল, ‘আমি জানি যে হরিণটা জলাশয়ের পানি ঘোলা করে ফেলত, সেজন্য আমি তাকে খেয়ে ফেলেছি।’
বৈশ্বিক রাজনীতির পরিপ্রেক্ষিতে ইরাক, আফগানিস্তান, লেবানন কিংবা সাধারণ মুসলমানদের দশাও কিন্তু ওই নির্দোষ হরিণটার মতো? আমেরিকা বাঘ হয়ে কেবল হুঙ্কারই ছুঁড়ছে! কথায় বলে ‘কৃষ্ণ করলে লীলাখেলা আমি করলে ঢং’। ইসরায়েলি আর আমেরিকানদের পৈশাচিকতা নিয়ে কেউ কিচ্ছু বলে না অথচ এরাই মানবতার দোহাই তুলে বিশ্ব চষে বেড়াচ্ছে।
এক পিচ্চি ছেলে স্কুল থেকে মারামারি করে চোখ ফুলিয়ে বাসায় ফিরল। পিচ্চিকে দেখে মা সব বুঝে ফেলল। তখন তিনি বলল—
: নিশ্চয়ই তুই রিন্টুর সঙ্গে মারামারি করেছিস, কাল এক প্যাকেট মিষ্টি নিয়ে গিয়ে ওর সঙ্গে বন্ধুত্ব করে আসবি।
পরদিন বাসায় ফিরলে দেখা গেল এবার পিচ্চির অন্য চোখটাও ভীষণ ফোলা। মা জিজ্ঞেস করলেন—
: কিরে তোর এই অবস্থা কেন?
ছেলেটা কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলল—
: মা রিন্টু আরও মিষ্টি চায়।
আমেরিকা-ইসরায়েল মার্কা রিন্টুদের সামনে পৃথিবীর শান্তিকামী মানুষগুলোর দশা এমনই। আজকের বিশ্বে এই বুর্জোয়া গণতন্ত্রের অক্সিজেন হলো শোষণ। সুবিধাবাদীরা বোধহয় সেই অক্সিজেন সরবরাহের চেষ্টাটাই করছে গোটা বিশ্বের জন্য!
হঠাৎ আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ এক বন্ধুকে আরেক বন্ধু বলছে—
: কিরে তুই এত টাকার মালিক হলি কী করে?
তখন বড়লোক বন্ধুটি বলল—
: এক ধনী লোকের সঙ্গে অংশীদার হয়ে আমি ব্যবসা শুরু করেছিলাম। তার ছিল টাকা আর আমার ছিল অভিজ্ঞতা।
তখন বন্ধুটি বলল—
: তারপর?
: তারপর আর কী? যা ভেবেছিলাম শেষে তাই হলো, আমার হলো টাকা আর তার হলো অভিজ্ঞতা।
যুদ্ধপ্রিয় দেশগুলোও এমনই সুবিধাবাদী, আজকালকার নেতাদের বুলি হলো যদিও আমি দেশকে ভালোবাসি কিন্তু দেশবাসীকে মোটেও না। একইভাবে বিশ্বমোড়ল দেশগুলো মানবতাকে ভালোবাসে কিন্তু মানুষকে না। ধর্মের ঢাক আপনি বাজে। সবার ওপরে মানুষ সত্য এই সত্য নতুন করে প্রতিষ্ঠিত হবেই। কারণ বিধাতা মানুষকে খেলনা হিসেবে তৈরি করেননি—মানুষ মানুষই!