বয়স যখন ১৫
বড় ভাইয়ারা কত সুন্দর করে ভ্যালেন্টাইন ডে পালন করছে। বিশেষ করে হাবিব ভাইয়ের গার্লফ্রেন্ড প্রীতি আপু তো মারাত্মক কিউট। হাবিব ভাইয়ের চিঠি নিয়ে যাওয়ার পর প্রীতি আপু যেভাবে গাল টিপে দেয়! আহারে প্রীতি আপু যদি আমার হতো! সমস্যা নাই। সময় এখনো বাকি।
বয়স যখন ১৬
এবার ভ্যালেন্টাইনের আগে একটা ব্যবস্থা করতেই হবে। সুজনের গার্লফ্রেন্ড হয়ে গেল। আমি এখনো সিঙ্গেলই থেকে গেলাম। মুরাদও মনে হয় প্রেম-ট্রেম কিছু একটা করছে। আমি কিছু না করলে মান-ইজ্জত আর থাকছেই না। ক্লাসে কিউট ধরনের একটা মেয়ে আছে। নিশা নাম। ওকে ভালো লেগেছে।
বয়স যখন ১৮
নিশার পেছনে হুদাই ২টা বছর নষ্ট করলাম। মেয়ে কিউট, কিন্তু ভিতরে ভিতরে পাষাণ। পাড়ার মাস্তান বড় ভাই রকিবের সঙ্গে নিশার লাইন হয়ে গেছে। নিশাকে প্রায়ই রকিব ভাইয়ের মোটরসাইকেলে দেখা যায়। কষ্ট লাগে।
বয়স যখন ২০
এখনো কিছু করতে পারলাম না। এবার ভ্যালেন্টাইনও কি একা কেটে যাবে? ফেসবুকে রিলেশনশিপ কি এবারও চেঞ্জ হবে না? একটা মেয়েকে বেশ ভালো লেগে গেছে। নাম শম্পা। প্রায়ই আমার স্ট্যাটাসে লাইক দেয়। দেখা যাক কী হয়।
বয়স যখন ২১
শম্পাকে আকারে ইঙ্গিতে বুঝিয়েছি যে তাকে পছন্দ করি। দেখি সে কীভাবে রিয়েক্ট করে। রিয়েক্ট না করলে এবারের ভ্যালেন্টাইনও একাই কাটবে। আফসোস।
বয়স যখন ২২
শম্পাকে নিয়ে প্রথম ভ্যালেন্টাইন। আজ ঘুরতে বেরিয়েছিলাম। ওকে পরীর মতো লাগছিল। কয়েকটা ছবি তুলেছি। আমার হাতে ওর হাত। আমার কাছে ওর মাথা। ফেসবুকে একটা ছবি দিতে হবে। হাতে হাত রাখা ছবিটা দিলেই ভালো হয়।
বয়স যখন ২৩
শম্পার সঙ্গে সম্পর্কটা ভালো যাচ্ছে না। ও কেমন জানি হয়ে গেছে। এবার ভ্যালেন্টাইনে সে বের হবে কিনা— কে জানে, দেখি।
বয়স যখন ২৪
শম্পাকে ছাড়া প্রথম ভ্যালেন্টাইন। কিছুই ভালো লাগছে না। গতবারের ছবিগুলো পীড়া দিচ্ছে। ফেসবুক মেমোরি জিনিসটা খুব খারাপ। পুরনো ক্ষতকে বাড়িয়ে দেয়।
বয়স যখন ২৬
কয়েকজনকে এর মধ্যে ভালো লেগেছিল। কিন্তু কীভাবে যেন বার বার শম্পার কথা মনে পড়ে। সবার মাঝেই শম্পার ছায়া খুঁজি। শেষমেশ আর হয় না। এবার ভ্যালেন্টাইনও একা।
বয়স যখন ৩০
স্ত্রীর সঙ্গে প্রথম ভ্যালেন্টাইন। ও হাসলে গালে টোল পড়ে। শম্পারও পড়ত। কিন্তু শম্পা হাসত অন্যরকম। আচ্ছা, শম্পা কি এখনো আগের মতোই হাসে?